gramerkagoj
শুক্রবার ● ১০ মে ২০২৪ ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ বাতাসে জলীয় বাস্পের আধিক্যে অনুভূতি বেশি

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা যশোরাঞ্চলে বইছে মরুর লু হাওয়া

❒ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪২.০৬ ডিগ্রি

প্রকাশ : রবিবার, ২৮ এপ্রিল , ২০২৪, ১২:০৩:০০ এ এম , আপডেট : শুক্রবার, ১০ মে , ২০২৪, ১২:০৫:৩৫ এ এম
জাহিদ আহমেদ লিটন:
GK_2024-04-27_662d1ef47236c.jpg

যশোরাঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে মরুভূমির লু হাওয়া। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঘরে বাইরে কোথাও শান্তি মিলছে না মনুষের। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই শ্রমজীবীরা কাজে বের হচ্ছেন। এদিনও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর যশোরে ছিল ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা যশোর ও চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে টানা ২৫ দিন তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে এ অঞ্চলের জনপদ। যা গত ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এরআগে ১৯৪৮ সালে কয়েকদিন দেশে তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এরপর চলতি মাসের ২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে যশোরাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ। যা শনিবার পর্যন্ত ২৫ দিন অব্যাহত রয়েছে। এ তাপপ্রবাহ মরুভূমির লু হাওয়ায় রুপ নিয়েছে। যাতে এ অঞ্চলের গোটা জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মানুষের কোথাও শান্তি মিলছে না। তারপরও টানা রোদেই শ্রমজীবীরা কাজে নামতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রখর রোদেই কৃষক মাঠে নেমে পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন। জীবনের জন্য জীবিকা তাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে এছাড়া তাদের কাছে বিকল্প কোন কিছু নেই।
শনিবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৮ শতাংশ। এদিন যশোরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাতক্ষীরার তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি ও খুলনার তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ চারটি জেলায় বাতাসে জলীয় বাস্পের পরিমান অত্যাধিক থাকায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি থাকলেও অনুভূত হচ্ছে ৪৬ ডিগ্রির ন্যায় বলে সূত্রটি ধারণা করেছে। এর আগে শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ছিল চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
আগামী তিন দিন তাপমাত্রা একইরকম বা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। এ কারণে তারা সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে। তবে আগামী ১ মে থেকে এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এ সময়ের পর থেকে খুলনা বিভাগসহ দেশে বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে বলে আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাসে জানিয়েছেন।
যশোর মেডিকেল কলেজের শিক্ষক নিউরো মেডিসিন বিভাগের ডাক্তার আলাউদ্দিন আল মামুন বলেন, অতিরিক্ত গরমে ডায়রিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, পক্স, হিট স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক প্রভৃতি হতে পারে। এ গরম থেকে মুক্তি পেতে ডিপ ফ্রিজের পানি পান করা যাবে না। এ সময়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার প্রচুর পানি, ডাবের পানি, দেশি ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন। দিনমজুর বিশেষ করে কৃষকরা যেন বেলা ১১টার মধ্যে এবং বিকেলে তাপমাত্রা কমলে মাঠে কাজ করেন, তবেই তারা সুস্থ থাকবেন।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের ডাক্তার অনুপম কুমার দাস বলেছেন, তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গরম থেকে তাদেরকে বেশি সাবধানে রাখতে হবে। মানুষকে সতর্কতার সাথে দিনের বেলা কর্মক্ষেত্রে চলাচল করতে হবে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদে না বের হবার জন্য তিনি জানান। আর রিকশা বা ভ্যান চালকদের রোদে বের হতে হলে অবশ্যই ছাতা ও ঢিলেঢালা সুতি কাপড়ের পোশাক ব্যবহার করতে হবে। কোন সমস্যা হলে সাথে সাথেই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার জন্য তিনি আহবান জানান।
যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রচন্ড গরমে মানুষকে এ সতর্কতা মেনেই চলাচল করতে হবে। তবেই তারা সুস্থ থাকবেন।

 

 

আরও খবর

🔝