gramerkagoj
সোমবার ● ২০ মে ২০২৪ ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ কাল শনিবার যশোরে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৫৭৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা

১৬ মাস পর ক্লাসে যাবে তিন লক্ষাধিক শিক্ষার্থী
প্রকাশ : শুক্রবার, ১০ মে , ২০২৪, ১২:০২:০০ এ এম , আপডেট : সোমবার, ২০ মে , ২০২৪, ০১:২৪:১৮ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-05-09_663cf22f72671.webp

দীর্ঘ ১৬ মাস পর সাপ্তাহিক ছুটির একদিন শনিবার ক্লাস শুরু হচ্ছে। আগামীকাল শনিবার থেকেই চালু হচ্ছে এই ক্লাস। নতুন কারিকুলামের শিখন ঘাটতি পূরণে সাময়িকভাবে শনিবার ক্লাস চালু করছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। যশোরে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৫৭৩ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন লাখ ৮০ হাজার ২৭২ জন শিক্ষার্থীকে আগামীকাল শনিবার শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার কথা।
শিক্ষামন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাগাতার ছুটির কারণে নতুন কারিকুলামে শিখন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই ঘাটতি পূরণে সাময়িকভাবে শনিবার শ্রেণি কার্যক্রম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে শনিবারের শ্রেণি কার্যক্রম।
শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৩ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে দু’দিন ছুটি কার্যকর হয়। এ দু’দিন ছিল শুক্র ও শনিবার। এর আগে সপ্তাহে একদিন শুক্রবার ছুটি থাকতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সূত্রমতে নতুন কারিকুলামে সপ্তাহে দু’দিন ছুটি রাখা হয়। সেই মোতাবেক দীর্ঘ ১৬ মাস শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দু’দিন ছুটি ভোগ করেছে। দু’দিন ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য হোমওয়ার্ক সম্পন্ন করা সহজ হয় বলে শিক্ষকরা জানান।
শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, বছরের ছুটির সাথে সমন্বয় করে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে। এ কারণে নির্ধারিত ছুটির অতিরিক্ত কাটালে শিখন ঘাটতি পড়বে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা। তাদের সিলেবাস শেষ হবে না। ফলে, মূল্যায়নের সময় জটিলতা তৈরি হবে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে সাময়িকভাব শনিবার শ্রেণি কার্যক্রম করার সিদ্ধান্ত হয়। যা আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে। এ ব্যাপারে গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ (সরকারি মাধ্যমিক-১) থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। উপসচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে চারটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এই চার নির্দেশনার চার নম্বরে উল্লেখ রয়েছে,‘তাপদাহ এবং অন্যান্য কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে যে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা পূরণ এবং নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন ফল অর্জনের জন্য পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত শনিবার শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।’
শনিবার স্কুল খোলার রাখার পক্ষে মত দিয়ে অভিভাবকরা বলছেন, করোনা মহামারি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। করোনার কারণে এমনিতেই শিখন ঘাটতিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, শীত, গরম ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ছুটি দিতে হচ্ছে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ঠিকমতো সম্পন্ন করতে হলে বেশি সময় প্রয়োজন। সরকার সেই চিন্তা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করার।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন,শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল হয়নি। শিখন ঘাটতি পূরণে আপাতত যে কয় শনিবার ক্লাস করানো দরকার সে কয়দিন ক্লাস করানো হবে।
এর আগে নির্ধারিত ১৮৫ দিন শিখন কর্মদিবস কমে যাওয়ার কারণে রোজার সময় কয়েকটি শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষকরা এর প্রতিবাদ করায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ধর্মীয় স্পর্শকাতর হিসেবে উপস্থাপন করায় পিছু হটে শিক্ষামন্ত্রণালয়। এরপর তাপপ্রবাহের কারণে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। এই পরিস্থিতিতে সিলেবাস সম্পন্ন করার তাগিদ থেকে অস্থায়ীভাবে সাপ্তাহিক ছুটির একদিন শনিবার শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত ইতিবাচক বলে ইতিমধ্যে একাধিক শিক্ষক সংগঠন ও অভিভাবকদের বড় অংশ উল্লেখ করেছে। তবে, তাদের দাবি, শিখন ঘাটতি পূরণের পর যেন সাপ্তাহিক ছুটি আগের মতো দু’দিন করা হয়।
শনিবার শ্রেণি কার্যক্রম সম্পর্কে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন,‘প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সেই অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত আগামীকাল শনিবার থেকে প্রতি শনিবার শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।’
জেলা শিক্ষা অফিসার মাহফুজুল হোসেন প্রশিক্ষণে থাকায় এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারনেনি তিনি।

 

 

আরও খবর

🔝