শিরোনাম |
যশোরে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে ঘোষণা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের তথ্য, চুয়াডাঙ্গায়ও একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। যদিও বিভিন্ন নিউজপোর্টালে চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।
তাপমাত্রা যাই হোক না কেন, যশোরে ঘরের বাইরে বের হওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। পথচারীরা বলছেন, রাস্তায় বের হলে পুড়ে যেতে হচ্ছে। তাপে জ্বালা ধরছে সমস্ত শরীরে। যা এক অসহ্য অবস্থা। অধিকাংশ মানুষ খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। বেশ কয়েকদিনের টানা তাপদাহের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ। সেই সাথে অন্যান্য প্রাণীও।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের খবরে গরম কমার কোনো লক্ষণ নেই। কবে নাগাদ যশোরাঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে তারও সুখবর মিলছে না। বরং দিন দিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রিতে পৌঁছাতে পারে।
প্রচন্ড গরমের কারণে পোষা প্রাণী নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে মালিকরা। বিশেষ করে গরু, ছাগল ও মুরগি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় মুরগি ও গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। হিটস্ট্রোকে এসব প্রাণী মারা যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। মুরগির খামারিরা তাদের শেড ঠান্ডা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তারা পানির স্প্রে ব্যবহার করছেন। মুরগি বাঁচাতে খাওয়ানো হচ্ছে স্যালাইন ও ফ্রিজের পানি।
যশোর মুরগি উন্নয়ন ও প্রজনন খামারের উপপরিচালক বখতিয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রচন্ড গরমের হাত থেকে মুরগি রক্ষা করতে স্যালাইন এবং ঠান্ডা পানি খাওয়ানো দরকার। এটি করতে পারলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকখানিক কমতে পারে।
তাপদাহের কারণে দেশের প্রায়সব জেলায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে তাপমাত্রা। এরমধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে। বর্তমানে অস্বস্তিকর আবহাওয়া বিরাজ করছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। অন্যান্য জায়গার অবস্থাও প্রায় একই। এই অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ।
তীব্র গরমের কারণে শ্রমজীবী মানুষ বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। প্রচন্ড গরমে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীদের চাপ বেড়েছে সাংঘাতিকভাবে। এ অবস্থায় শিশুদের নিয়ে বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে, তীব্র তাপদাহের মধ্যে যশোরাঞ্চলে পানি সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে। অনেক জায়গায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। তার উপর বিদ্যুতের লোডশেডিং জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এই দুঃসহ অবস্থা গ্রামাঞ্চলে বেশি। বিএডিসির সেচ বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য, যশোরাঞ্চলে পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ২০ থেকে ৩০ ফুট নেমে গেছে। যে কারণে অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি মিলছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত টিউবওয়েলগুলোতে পানি পাওয়া যাবে না।