শিরোনাম |
যশোরে এক মাস যাবত সবজির বাজার চড়া। নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে মশলার দাম। মৌসুমেও চালের দাম কমার লক্ষন নেই।
রমজান মাস ও ঈদুল ফিতরের পর থেকেই যশোরের বাজারে বাড়তে শুরু করে সবজির দাম। শীতের শেষ আর গ্রীষ্মের শুরুতে বাজারে সবজির সংকট দেখা দেয় এমনটা বলছেন বিক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ বাজারে সবজির সংকট না থাকলেও বাড়তি দাম। এক মাস যাবত বাড়তি দামে বিক্রি হয়ে আসছে সবজি। গত দুই সপ্তাহ যাবত অবিশ্বাস্য দামে বিক্রি হতে থাকে পেঁপে। ৮০টাকায় গিয়ে পৌঁছায় পেঁপের কেজি। এ সপ্তাহে পেঁপেসহ কোন কোন সবজির দাম কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে মশলার বাজারে এলাচের দাম বাড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে চালের মৌসুম হলেও বাজারে চাল বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। সয়াবিন তেল, ডালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।
শুক্রবার শহরের বড়বাজারে কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৮০টাকা কেজিতে। বরবটি, পেঁপে, কচুরলতি, ঝিঙ্গে ৬০, কাকরোল, ফুলকপি ১২০, বিটকপি, শিম, সজিনা ১০০, উচ্ছে ৮০, করলা, শসা ৬০ টাকা। চিচিঙ্গা, ধুন্দল, চাল কুমড়া, কাচকলা ৫০, বেগুন ৮০, পটল ৪০, মিষ্টি কুমড়া, বাধাকপি, এচোড় ৩০, লাউ ৪০ থেকে ৫০, গাজর ৪০, টমেটো ৪০ থেকে ৫০টাকা কেজি। আলু ১৮ থেকে ২০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতা আশরাফ আলী বলেন, গরমের শুরুতে বাজারে সবজির সরবরাহ একটু কমে, প্রতি বছরের এ সময়ে তাই বাজারে সবজির দাম একটু বাড়ে। আরেক বিক্রেতা দুলাল সাহা বলেন, সবজি আসতে শুরু করেছে, আগামী সপ্তাহের মধ্য সবজির দাম আরও কমবে।
নিউমার্কেট এলাকার ফারজানা আক্তার শাম্মী বলেন, বাজারে তো সবজির অভাব নেই, তবু দাম বেশি। আলু ছাড়া সব সবজির বেশি দাম। তাছাড়া চালের মৌসুমে চালের দামও বেশি। ব্যাটারিপট্টি এলাকার সুমন দাস বলেন, এক হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলাম বাজারে, সবজি আর মাছ কিনে টাকা শেষ। সংসার চালানোই কঠিন। ঢাকা রোড এলাকার শাহ আলম বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কোন সরকারই কোন কার্যকরী উদ্যোগ নেয় না। এভাবেই আজ বাজার ব্যবস্থা চলে গেছে সিন্ডিকেটের হাতে।
অন্যদিকে মশলার বাজারে এলাচের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ছয় হাজার ৫০০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এলাচ। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ছয় হাজার টাকা কেজিতে। গোলমরিচ এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০টাকা। লবঙ্গ এক হাজার ৪০০ থেকে ৬০০টাকা। জিরা ৬৮০ থেকে ৭০০টাকা। দারুচিনি ৪০০থেকে ৬০০টাকা কেজি। পেঁয়াজ ৫০টাকা কেজি। রসুন ১২০ থেকে ২২০টাকা। আদা ১২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
চালে বাড়তি দাম অব্যাহত রয়েছে। স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজিতে। কাজললতা ৬২ থেকে ৬৫টাকা কেজি। আঠাশ ৫৮ থেকে ৬০টাকা। মিনিকেট ৭০ থেকে ৭২টাকা। বাসমতি ৮৮থেকে ৯০ টাকা। নাজিরশাইল ৮৬ থেকে ৯২টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চাল বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, মৌসুম হলেও নতুন চাল এখনো সব দোকানে ওঠেনি, তাই বাড়তি দাম। আরেক বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, বাজারে নতুন চালের সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমে আসবে।
মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজিতে। সোনালী মুরগি ২৫০থেকে ২৬০টাকা কেজি। লেয়ার মুরগি ৩২০টাকা। দেশি মুরগি ৬০০ টাকা। গরুর মাংস ৭৫০টাকা। খাসির মাংস এক হাজার ২০০টাকা কেজি। মাছের বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা কেজিতে। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা হালিতে। সোনালী মুরগির ডিম ৫৬টাকা। দেশি মুরগির ডিম ৬০টাকা। হাঁসের ডিম ৭২ টাকা। কোয়েল পাখির ডিম ১২ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
মুদির বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৯টাকা লিটারে। খোলা সয়াবিন তেল ১৮৫টাকা কেজি। মুগ ডাল ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। মসুরের ডাল ১০৫ থেকে ১৩৫টাকা কেজি। ছোলার ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। বুটের ডাল ৬০ থেকে ৬৫টাকা। খোলা আটা ৪০ টাকা। প্যাকেট আটা ৫০টাকা। লবন ৪০টাকা কেজি। কিছুটা কমলো চিনির দাম। বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ১২০ টাকা কেজিতে।