শিরোনাম |
যশোরে সবজির বাজার চড়া। সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। অন্যদিকে বাজারে নতুন চাল আসতে শুরু করলেও বাড়তি দাম অব্যাহত রয়েছে। সুখবর নেই অন্যান্য নিত্যপণ্যতেও।
যশোরের বাজারে ৩০ টাকার নীচে কোন সবজি মিলছে না। কারন বিক্রেতারা জানান, শীতের শেষ আর গ্রীষ্মের শুরুর এসময়ে বাজারে সবজির সরবরাহ সংকটের কথা। অন্যদিকে ধান কাটার এসময়ে সবজির ক্ষেতে শ্রমিক সংকটের কথাও জানান তারা। সবচেয়ে কম দামের যে পেঁপে যা এক সময় বিক্রি হতো ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিতে, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০টাকা কেজি দরে। শুক্রবার শহরের বড়বাজারে প্রতি কেজি পেঁপে এ দামেই বিক্রি হতে দেখা যায়।
সবজি বিক্রেতা রাসেল হোসেন বলেন, আমরা ৬০/৭০ কেজির জায়গায় ৩০/৪০ কেজি সবজি আনতে পারছি। প্রতি বছরই এসময়টাতে সবজির একটু টান পড়ে। নতুন ধান কাটার সময়ে শ্রমিক সংকট থাকে, তাই সবজি আসতে সময় লাগে।
আরেক বিক্রেতা পারভেজ শেখ বলেন, গত তিন সপ্তাহ যাবত সবজি কম আসছে বাজারে। চাহিদার তুলনায় সবজি কম রয়েছে, তাই দাম একটু বেশি।
অন্যান্য সবজির মধ্য বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০টাকা কেজিতে। বরবটি ৭০, বিটকপি, ঝিঙ্গে, চিচিঙ্গা, ঢেড়স ৬০, উচ্ছে ৮০, সজিনা ১২০, শসা ৭০ থেকে ৮০, বাধাকপি ৩০, শিম ১০০টাকা, ফুলকপি ১২০টাকা, কচুরলতি ৩০ থেকে ৪০, ধুন্দল, চালকুমড়া, লাউ ৪০, কাঁচকলা, পটল, গাজর ৫০, টমেটো, এচোড়, মিষ্টি কুমড়া ৩০, কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০টাকা। আলু ১৮ থেকে ২০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নতুন চাল আসতে শুরু করলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে কম দামের যে মোটা চাল স্বর্ণা, তা বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি দরে। চড়া দাম অব্যাহত রয়েছে চালে। কাজললতা ৬২ থেকে ৬৫টাকা কেজি। আঠাশ ৫৮ থেকে ৬০টাকা। মিনিকেট ৭০ থেকে ৭২টাকা। বাসমতি ৮৬থেকে ৮৮ টাকা। নাজিরশাইল ৮৬ থেকে ৯০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চাল বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, এখনও সব দোকানী নতুন চাল দোকানে তুলতে পারেননি। যারা তুলেছেন, তারা তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করছেন। আরেক বিক্রেতা সাখাওয়াত হোসেনও একই কথা বলেন।
চুড়ামনকাটি এলাকার আফরোজা সুলতানা বলেন, বাজারে তো চালের কোন অভাব দেখি না। ভরা মৌসুমে চালের এমন অস্বাভাবিক দাম মেনে নেয়া যায় না।
নীলগঞ্জ এলাকার পলক সাহা বলেন, বাজার এখন একটা চিন্তার জায়গা, বাজেট মেলানো কঠিন। এখানে আসলে অস্বস্তির শেষ নেই।
সিটি কলেজ পাড়া এলাকার সজীব অধিকারী বলেন, কিছুদিন একটু স্বস্তি ছিল, কোন পণ্যর দাম বেড়েছে শুনতে হয়নি। এমন যদি থাকতো তবু ভালো ছিল। আবারও সেই পুরনো অবস্থা।
অন্যদিকে বাজারে রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। আড়াইশ’ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০টাকা কেজিতে। হাফ কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে ৭০০টাকা কেজিতে। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকা কেজিতে। বাড়তি দামের কারন হিসেবে একাধিক বিক্রেতা জানান সরবরাহ সংকটের কথা। মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে। সোনালী মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০টাকা কেজি। লেয়ার মুরগি ৩২০টাকা। দেশি মুরগি ৬০০ টাকা। গরুর মাংস ৭৫০টাকা। খাসির মাংস এক হাজার ২০০টাকা কেজি। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকা হালিতে। সোনালী মুরগির ডিম ৪৮ থেকে ৫০টাকা। দেশি মুরগির ডিম ৬০টাকা। হাঁসের ডিম ৭২ টাকা। কোয়েল পাখির ডিম ১২ টাকা হালি।
অন্যদিকে এ সপ্তাহে কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। ৫০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। যা গত সপ্তাহে ৫৫ থেকে ৬০টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ২৪০টাকা কেজি। আদা ১২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। অন্যান্য মশলার মধ্য এলাচ বিক্রি হচ্ছে ছয় হাজার টাকা কেজিতে। গোলমরিচ এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০টাকা। লবঙ্গ এক হাজার ৪০০ থেকে ৬০০টাকা। জিরা ৬৮০ থেকে ৭০০টাকা। দারুচিনি ৪০০থেকে ৬০০টাকা কেজি।
মুদির বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮৯ টাকা লিটারে। যেসকল দোকানী নতুন সয়াবিন তেল দোকানে তুলেছেন তারা নতুন বেধে দেয়া দাম ১৮৯ টাকা লিটারে বিক্রি করছেন সয়াবিন তেল। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫টাকা কেজিতে।
অন্যান্য মুদি পণ্যর মধ্য মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। মসুরের ডাল ১০৫ থেকে ১৩৫টাকা কেজি। ছোলার ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। বুটের ডাল ৬০ থেকে ৬৫টাকা। চিনি ১২০ থেকে ১৩৫ টাকা। লবন ৪০টাকা কেজি। খোলা আটা ৪০ টাকা। প্যাকেট আটা ৫০টাকা।