gramerkagoj
শনিবার ● ২৪ মে ২০২৫ ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
gramerkagoj

❒ সাবেক এসপি প্রলয়ের সামারি দারোগা জয়ন্ত

কোতোয়ালিতে এখনও স্বস্ত্রীক বহাল, অশালীন আচরণ
প্রকাশ : রবিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৫, ১১:০০:০০ পিএম
দেওয়ান মোর্শেদ আলম:
GK_2025-04-20_6805012d3a2b1.jpg

যশোরের সাবেক এসপি এখন একাধিক মামলার আসামি পলাতক প্রলয় কুমার জোয়ারদারের সময়ের সামারি দারোগা বলে খ্যাত জয়ন্ত কুমার সরকার এখনও বহাল রয়েছেন যশোর কোতোয়ালি থানায়। আর তিনি প্রতিনিয়ত্ই সেবা প্রার্থী মানুষের সাথে অশালীন আচরণ করছেন। হয়রানী করছেন সাধারণ মানুষকে। এমনকি মিডিয়ার লোকজনের সাথেও করছেন অনাকাঙ্খিত আচরণ।
তার অব্যাহত অসদাচরণের কারণে জেলা পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলেও থানার একাধিক সূত্রের দাবি। শুধু এসআই জয়ন্ত সরকারই নন, তার স্ত্রী শিল্পী নন্দীও সাবেক এসপির আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে খোদ এসপি অফিসে কাজ করেছেন। নামকাওয়াস্তা কাজ করেও বেতন গুনেছেন মাসের পর মাস। শেষে তাকে কোতোয়ালি খানায় পোস্টিং দিয়ে যান সাবেক এসপি। বর্তমান স্বামী স্ত্রী এই থানায় রয়েছেন বহাল তবিতে।
অবশ্য শিল্পী নন্দী এখন মাতৃকালীন ছুটিতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।
থানার একাধিক সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, যশোরের অভয়নগর থানায় পিএসআই সময়কাল কাটানোর পর যশোর কোতোয়ালি থানায় এসআই হিসেবে যোগদান করানো হয় জয়স্ত কুমার সরকারকে। আর তার স্ত্রী শিল্পী নন্দীকে পুলিশ সুপার নিজের অফিসেই পোস্টিং দিয়ে অনেকটা বসিয়ে রেখেছিলেন। এরপর টানা সাড়ে ৩ বছর যশোর কোতোয়ালি থানায় রয়েছেন জয়ন্ত কুমার সরকার। সাবেক এসপি প্রলয় কুমার জোয়ারদারের সময়ে সামারি দারোগা হিসেবে খ্যাত ছিলেন এই জয়ন্ত। সাবেক ওসিরাও তার ঠিকমত খবরদারি করতে পারতেন না। শুধু ফিল্ডের মানুষই নয়, তার অশালীন আচরণের শিকার হয়েছেন অনেকেই। সহকর্মীদের কাছে ‘এসপির লোক’ বলে দম্ভোক্তি দেখাতেন। সেই সব আচরণ বর্তমান পুলিশের তার কন্ট্রোলিং অফিসারগণ জানতে না পারায় তিনি এখনও থানায় স্বস্ত্রীক রয়েছেন বহাল তবিয়তে। আর থানায় আসা সেবা প্রার্থীদের সাথেও তিনি অসৌজন্যমূলক আচারণ করে চলেছেন। তিনি ডিউটি অফিসের চেয়ারে বসেও অনৈতিক আচরণ করছেন বলেও অভিযোগে প্রকাশ।
সম্প্রতি তিনি ডিউটি অফিসারের চেয়ারে বসে হম্বিতম্বি আচরণ করেন একজন মিডিয়া কর্মীর সাথেও। পুলিশের হাতে আটক এবং আদালতে চালান হওয়া একজন শিশু ধর্ষণ চেষ্টাকারীর নাম জানতে চাইলে জয়ন্ত সরকার তাকে দিতে অস্বীকার করেন। জানান ধর্র্ষণ তো করেনি নাম দিয়ে কি হবে। ধর্ষণচেষ্টা হলেও যেহেতু আটক হয়ে চালান হয়েছে সে কারণে শুধু সাংবাদিক কেনো যেকোনো সাধারণ নাগরিকও তার নাম জানতে পারেন এটা বললে তিনি অশালীন আচরণ শুরু করেন ফোনে। বলেন থানায় গিয়ে তাকে চেহারা দেখিয়ে তথ্য নিতে হবে। তথ্য না দিয়ে তালবাহানা করায় তিনি ওই ধর্ষণচেষ্টাকারীর পক্ষ নেন বলেও প্রতীয়মান হয়। এরপর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত কাজী বাবুলের কাছে জয়ন্ত সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য না দেয়ার অভিযোগ করা হয়। তার হস্তক্ষেপের পর কোনো রকমে জয়ন্তর কাছ থেকে নাম সংক্রান্ত ছোট্ট তথ্যটি মেলে।
এদিকে, থানার অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, সামারি দারোগা খ্যাত জয়ন্ত কুমার সরকার আগেরভাব ধরে রেখেছেন। তারা স্বামী স্ত্রী দুজনেই সাবেক এসপি প্রলয় কুমার জোয়ারদারের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে থানায় যথেচ্ছা করেছেন। তাদের ঠিকমত ডিউটি করা লাগেনি। কিন্তু এখন ডিউটি করলেও আচরণ আগের মতই অশালীন রয়েছে। সাবেক এসপি প্রলয় কুমার জোয়ারদারের আশীর্বাদপুষ্ট স্বামী স্ত্রী জয়স্ত কুমার সরকার ও শিল্পী নন্দির বিরুদ্ধে গোপন তদন্ত করে দ্রুত বদলি অথবা অপসারণ দাবি খোদ থানার অনেক অফিসারের।
থানা থেকে আরো তথ্য মিলেছে, এসপি অফিসে ঠাঁঠেবাটে চলতেন এই শিল্পী নন্দী। ঠিকমত ডিউটি করা লাগেনি সাবেক এসপি প্রলয় কুমার জোয়ারদারের সময়ে। সেখানে থেকে তাকে বদলি করা হয় যশোর কোতোয়ালি থানায় স্বামীর কর্মস্থলে। তিনি থানায় নামমাত্র ডিউটি অফিসারের দায়িত্ব পালন করতেন। মানুষের সাথে তিনিও অসদাচরণ করতেন। সাবেক এসপির মৌখিক নির্দেশের কারণে সাবেক কয়েকজন ওসি তাকে প্রয়োজন মত ডিউটি দিতেও পারতেন না। অনেকটা কাজ না করেই বেতন নেয়ার মত সময় কাটাতেন। মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাওয়ার ২ মাস আগে থেকেই প্রয়োজনীয় সই স্বাক্ষর ছাড়া তাকে দিয়ে ডিউটি করানো হয়নি। তিনি এখন ছুটিতে আছেন। তবে স্বামী স্ত্রী একই জয়গায় কোতোয়ালি থানায়। এমন পোস্টিং খুব কম অফিসারের ভাগ্যে জোটে!
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত কাজী বাবুল হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছেন, একজন শিশু ধর্ষণচেষ্টাকারী আটক হয়েছে, তাকে আদালতে চালানও দেয়া হয়েছে। এই তথ্য না দেয়ার কি আছে। অবশ্যই ডিউটি অফিসার দিতে পারবেন। এটা রাষ্ট্রীয় কোনো গোপন তথ্য নয়। এছাড়া ডিউটি অফিসার এসআই জয়ন্ত সরকারের অশালীন আচরণের ব্যাপারে তিনি খোঁজ খবর নেবেন বলেও জানান।

 

আরও খবর

🔝