gramerkagoj
সোমবার ● ১৭ মার্চ ২০২৫ ২ চৈত্র ১৪৩১
gramerkagoj
সূর্যমুখীর হাসিতে প্রাণবন্ত সাদুল্লাপুর প্রাণিসম্পদ দপ্তর চত্বর
প্রকাশ : রবিবার, ৯ মার্চ , ২০২৫, ১০:০২:০০ এএম
মুনির হাসান, সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা):
GK_2025-03-09_67cd12f59131f.jpg

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনের প্রবেশ মুখে শোভা পাচ্ছে মনজুড়ানো প্রাণবন্ত অপরূপ সৌন্দর্যের হলুদ সূর্যমুখী ফুলের সমাহার। হলুদে হলুদে প্রস্ফুটিত সূর্যমুখীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মৌমাছি-প্রজাপতি যেমন ছুটে আসছে, তেমনি বিমোহিত হচ্ছেন দর্শনার্থীরাও। অত্র দপ্তরের কর্মচারীদের তত্বাবধানে দিনে দিনে গড়ে ওঠা এই ফুলের বাগান যেন বিমোহিত করেছে অনেকের।খামারি তার প্রিয় পশুটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসেন তখন তার পশুর চিকিৎসার পাশাপাশি হলুদ ফুলের সূর্যমুখীর এই বাগান দেখে খুব খুশি হন। স্থানীয় বাসিন্দা ও এক দর্শনার্থী ছবি তুলতে আসা মোঃ শামিম তিনি জানান অফিসের ক্যাম্পাস জুড়ে যেন সূর্যমুখীর গন্ধে ও সৌন্দর্যে প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে। অফিসের কর্মচারী মোঃ শাহাজাহান আলী জানান শুরু থেকে ফুলের বাগান পরিচর্যা করেছি।এখন যা দেখছি তা যেন কষ্টের চাইতে আনন্দ অনেক বেশি। নিয়মিত সার- পানির পাশাপাশি চারিদিকে ঘিরনির ব্যবস্থা থাকায় ছাগল-গরু থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে হলদে ফুলের বাগান আমাদের ছাড়াও অনেকের কাছে দৃশ্যমান।
ফুলকে সবাই ভালবাসে আর সেই ফুলের ভালবাসায় যখন সিক্ত হয় সবাই তখন যেন একধাপ এগিয়ে যায় সফলতার। এর আগে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও চিফ টেকনিক্যাল কো- অর্ডিনেটর অত্র উপজেলায় পরিদর্শনকালে সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সিরাজুল ইসলামকে ফুলের বাগান করার প্রতি পরামর্শ প্রদান করেন তারই পরিপ্রেক্ষিতে দপ্তরের পাশে থাকা ঘাসের প্লটের স্থানে পতিত ও আগাছাপূর্ণ ঝোঁপ জঙ্গল পরিষ্কার করে এবার সেখানে রোপণ করেন হলদে সুর্যমুখী ফুল। এছাড়াও প্রকৃতিকে সাজাতে বছর জুড়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য তিনি দপ্তরের প্রধান ফটকের সামনে গড়ে তুলেন গোলাপের বিভিন্ন জাতের বাগান। মুলত তার উদ্যোগ ও স্ব- ইচ্ছায় এ বছর প্রথম সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে সেখানে।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, গত বছর এ স্থানের কিছু অংশ হাইব্রিড জাতের নেপিয়ার চাষ করা হয়েছিলো। এবারই প্রথম সূর্যমুখীর বীজ রোপণ করা হয়। তাতে ভালো ফুল ফুটেছে। ভবিষ্যতে আরও বেশি জায়গাজুড়ে দপ্তর ও এর চারপাশকে সাজাতে সূর্যমুখীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চারা রোপণ করা হবে।
প্রকৃতি প্রেমিদের মাধ্যমে প্রকৃতির ছোঁয়ায় এই অপরুপ সৌন্দর্য ও হৃদয় জুড়ানো সবুজ পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা সূর্যমুখীর হাসি প্রকৃতি প্রেমিকদের অকৃত্রিম ভালবাসা যেন আরো উজাড় করে কাছে টানছে সবার। ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা অনেকেই সূর্যমুখী ফুলের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছেন, কেউবা ছবি তুলছেন। আবার কেউ কেউ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে আসেন সময় কাটান কিছুক্ষন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইটপাথরে গড়া ভবনের সামনে আলো ছড়াচ্ছে বাহারি এই সূর্যমুখী ফুলের বাগান। হৃদয়কাঁড়া ফুলের মন মাতানো সৌরভে প্রাণবন্ত আর স্নিগ্ধতায় যেন মুগ্ধ সবাই। দপ্তরে নিযুক্ত থাকা কর্মচারীর পাশাপাশি বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদেরও বাগানে ছবি তোলার আনন্দ উপভোগ করতে দেখা গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সামনের ফুলের বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী মোঃ শামিম, ফেরদৌস আলম, অফিস সহকারি আলমগীর হোসেন, শাহজাহান আলী ও গণমাধ্যমকর্মী সহ অনেকে বলেন, এখানে এসে ফুলের স্নিগ্ধতায় খুবই ভালো লাগছে, পরিবেশটাও খুবই নিরিবলি। পাখিদের কোলাহলে মুখরিত এমন একটি স্থানে ফুলের বাগানে ঘুরতে এসে আমাদের অনেক ভালো লাগছে।
ইট-পাথরের দালানকোঠার পাশে এমন চোখ জুড়ানো পরিবেশ যে কারো নজর কাঁড়তে পারে সেটা উদ্যোগক্তার জানা ছিল না।সেই জায়গা থেকে প্রতিবারেই ফুলের বাগান করে ক্যাম্পাসে সৌন্দর্য বৃদ্ধি কিভাবে করা যায় তার আগাম পরিকল্পনা হাতে রেখে সামনে অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে বলে অভিমত প্রসন করেন দপ্তরের প্রধান ডাঃ সিরাজুল ইসলাম।
এছাড়াও কৃষি অফিসার মতিউল আলম জানান, প্রত্যেকটি ক্যাম্পাস যাতে ফুলের গন্ধ ও সৌন্দর্যের প্রতিক হয় সে জন্য প্রান্তিক কৃষক যারা ফুল চাষের সাথে পুরাপুরি জড়িত তাদের সুবিধার কথা ভেবে এবার উপজেলায় মোট ৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এই বাগানটি এখন সৌন্দর্য প্রেমীদের কাছে দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে স্থানীয় ও ঘুরতে আসা জনসাধারণের কাছে।
নব্য নিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জসিম উদ্দিন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসী জানান, বাগানটির কারণে একটি দৃষ্টিনন্দন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বাগানটি দেখতে প্রতিদিন অনেক নারী-পুরুষ এখানে আসছে বাগানটিকে দেখা ও ছবি তোলার জন্য। আগামীতে পতিত জায়গা গুলোতে আরও বাগান করার পরিকল্পনা মোতাবেক উদ্যোগ গ্রহণ করে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে বলে মতপ্রকাশ করেন কর্মকর্তারা।

আরও খবর

🔝