শিরোনাম |
রাজশাহীতে বক আর বুনোহাঁস খাওয়ার ভিডিও প্রচার করায় দুই কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের নামে মামলা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তারা হলেন, আল-আমিন সোহাগ ও তুলি।
সামাজিক যোগাযোগে প্রকাশের জেরে রাজশাহী কথিত দুই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আল-আমিন সোহাগ ও তুলির নামে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আদালত -২ এ মামলা দায়ের করা হয়। সোমবার মামলাটি দায়ের করেন বিভাগীয় বন কর্মতার কার্যালয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ রাজশাহীর বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মো: জাহাঙ্গীর কবির। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর ৬(১),৩৪ (খ)ও ৪১ মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয় দুই ব্লগার আল-আমিন সোহাগ ও তুলি কানিবক ও পাতি সরালি নামক দুই প্রকারের অতিথি পাখি জবাই করে রোষ্ট করে খাওয়ার ৩৩ সেকেন্ড ও ৫৪ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করা হয়। সেই ভিডিও ফরেস্ট ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর কবির অবগত হলে, তিনি সকল প্রকার প্রমান সংগ্রহ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ফেসবুকে পোষ্ট দেখে মহানগরীর সচেতন মহলসহ বেশ কিছু সামাজিক সংগঠন এ বিষয়ে প্রতিবাদ করে ও ইয়্যাস নামক সামাজিক সংগঠন রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে ব্লগারদের শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে ভিডিওতে আল-আমিনকে বক হাতে নিয়ে বলতে দেখা যায়, ‘আমার বাসায় স্পেশাল মানুষজন আসবে। তাদের জন্য পাখি নিয়ে আসা হইছে। বকপাখি। সুন্দর সুন্দর দেখতে সাদা সাদা বক। বাট মাংস কম।’
এসময় আল–আমিন তার মাকে বলেন, ‘আম্মা, এগুলো কাকে খাওয়াবেন?’ তার মা বলেন, ‘এগুলো জামাইকে খাওয়াব।’ আল-আমিন আবার প্রশ্ন করেন, ‘আস্ত আস্ত রোস্ট করে খাওয়াবেন, না কেটে কেটে খাওয়াবেন?’ মা বলেন, ‘রোস্ট করে খাওয়াব।’
এসময় আল-আমিন দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘বকের রোস্ট হবে আমাদের বাসায়, গাইজ। তোমরা চলে আইসো রোস্ট খাইতে।’
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তুলি মুরগির ঘর থেকে বুনোহাঁস বের করতে করতে বলছেন, ‘আমার বাপে বিলেত থেইক্যা কি ধইরা নিয়াসছে দেখেন।’ এসময় ভিডিওতে আরেকটি মেয়েকে বলতে শোনা যায়, ‘কী এটা?’ জবাবে তুলি বলেন, ‘এটা হাঁসপাখি।’ এসময় পা বাঁধা হাঁসটি হাত থেকে ছোটার জন্য ছটফট করতে থাকে।
মামলার বিষয় নিয়ে ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাসের সাধারন সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক জানান, ভবিষ্যতে যেন কেউ অতিথি পাখি শিকার করা ও তা ভিডিওতে প্রকাশ করার মতো অপরাধ না করে “।
সেভ দি ন্যাচার এ্যান্ড লাইফ এর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মামলার বিষয় নিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে এবং মিডিয়াকর্মীদের এবং বনবিভাগকে ধন্যবাদ জানান।
মামলার বিষয়ে ১ নং আসামি কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আল-আমিন সোহাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলার বিষয়ে অবগত না বলে জানান” তবে ২ নং আসামি তুলির সাথে যোগাযোগ করা হয়নি তাই তুলির মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মামলার বিষয়ে বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, সোমবার ৩ ফেব্রæয়ারি মামলা হয়েছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। আইন অনুযায়ী তাদের বিচারকার্য চলবে এবং আমরা সর্বোচ্চ সাজা আশা করছি।