শিরোনাম |
রাজশাহীর পবা উপজেলা পরিষদে ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হাট-বাজারের ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে ওই ঘটনা ঘটলেও মামলার এজাহারে কোনো আসামির নাম নেই।
রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমা মোস্তারিন বলেন, “ঘটনার পর রাতে পবা উপজেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তবে আসামি হিসেবে কারো নাম নেই। অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
তবে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি বলেও জানান ওসি। এর আগে গতকাল সোমবার তিনি বলেছেন, “গুলি ফুটেছে। ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জমা পড়া সব দরপত্র লুট হয়েছে। শুধু বাক্সটি পড়ে আছে। উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চাইবে সেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে সোমবার দুপুরে পবার ইউএনওর কার্যালয়ের নিচতলা থেকে টেন্ডার বাক্স বাইরে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। এরপর ভেতরে থাকা দরপত্র লুট করার ঘটনা ঘটে। ১৪৩২ বঙ্গাব্দের জন্য পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে এই টেন্ডার বাক্সে দরপত্র জমা নেওয়া হচ্ছিল।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যমতে, ওই ১২টি হাটের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খড়খড়ি হাট। এই হাট প্রতিদিনই বসে। এই হাট থেকেই প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্তে শাক-সবজি যায়। স্থানীয় পাঁচটি গ্রুপ এই হাট ইজারা নিতে চায়।
সূত্র জানায়, ওই পাঁচটি গ্রুপের মধ্যে আলোচনা ছিল যে তাদের পক্ষ থেকে একটি দরপত্রই জমা দেওয়া হবে। এতে কম টাকায় হাট যেমন ইজারা পাওয়া যাবে, তেমনি সমঝোতা করে সবাই হাটের অংশীদার থাকবেন। কিন্তু স্থানীয় এক যুবদল নেতা এই সমঝোতা মানেননি।
দরপত্র দাখিলের শেষ দিন দুপুরে ওই যুবদল নেতা তার অনুসারীদের নিয়ে টেন্ডার বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যান। এ সময় তাকে অপর চারটি গ্রুপের লোকজন দরপত্র জমা দিতে বাধা দেন। তারপরও ওই যুবদল নেতা বাক্সে দরপত্র ফেললে টেন্ডার বাক্স ভেঙেই সব দরপত্রই লুট করা হয়। এ সময় ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ছুরিকাঘাতে আহত হন এক যুবদল নেতাও। এ বিষয়গুলো নিয়ে কোনোপক্ষই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চায় না। ওই ঘটনার পর টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আপাতত স্থগিত রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।
পবার ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, “দরপত্র জমা দানের একটা নতুন তারিখ দিয়ে নতুন করে জমা নেওয়া হতে পারে। অথবা এ ব্যাপারে আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নতুনভাবেই ইজারা প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এ ব্যাপারে একটা কমিটি আছে। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হবে।”