শিরোনাম |
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় একজন নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দার নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সংঘটিত ওই ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
বিষয়টি নিয়ে নির্যাতনের শিকার নারী ঝিকরগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঝিকরগাছার ফজিলা খাতুনের ছেলে রায়হানের সাথে পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ^াসের মেয়ে বিথীর দু’বছর আগে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে সাংসারিক গোলযোগের কারণে তাদের পারিবারিকভাবে বসে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়। পরবর্তীতে বিথীর বিয়ে হয় বেনেয়ালী গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুলের সাথে।
রোববার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সাবেক পুত্রবধূর সাথে দেখা করতে বেনেয়ালীতে যান ফজিলা খাতুন। সেখানে বিথীর বর্তমান স্বামী শিমুল, পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহিম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি, বেনেয়ালী গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম, তবিবরের স্ত্রী মাজেদা বেগম, বিথীর বর্তমান শাশুড়ি আছিরন বেগম এবং মা রহিমাসহ বেশ কয়েকজন ফজিলা বেগমকে ধরে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন।
সেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে তা সোস্যাল মিডিয়ায়ও প্রচার করা হয়। এরপর বিষয়টি সবার নজরে আসে।
ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ মিলে ফজিলা খাতুনের মাথার চুল ধরে ঝাঁকাচ্ছেন এবং এলোপাতাড়ি চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুসি মারছেন। এক পর্যায়ে তারা ফজিলা খাতুনের মুখে কালি মাখিয়ে দেন এবং লাঠি দিয়ে মারপিট করেন। ওই সময় নির্যাতনকারী ও অন্যদেরকে উল্লাস ও ভিডিও ধারণ করতে দেখা যায়।
পরবর্তীতে নির্যাতনের শিকার ফজিলা খাতুনকে শিমুল তার বাড়ির পিলারের সাথে বেঁধে রাখেন। এক পর্যায়ে দেশি অস্ত্র দিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করারও হুমকি দেন। এই নির্যাতনের কথা কোথাও জানানো হলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেন নির্যাতনকারীরা।
নারকীয় ওই নির্যাতনের ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভূপালী সরকারের নজরে আসে। তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টির ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঝিকরগাছা থানার ওসি বাবলুর রহমান খানকে বলেন।
পুলিশ রোববার রাতেই অভিযান পরিচালনা করে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন ফজিলা খাতুনের সাবেক পুত্রবধূ বিথীর স্বামী শিমুল হোসেন, পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি, বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম ও পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের স্ত্রী রহিমা।
ওসি বাবলুর রহমান খান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদেরকে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলখানায় প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদেরকে আটকেও জোরালো অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।