শিরোনাম |
আল্লাহর পক্ষ থেকে হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সিজদার নির্দেশ অস্বীকারের মধ্য দিয়ে মানুষের সঙ্গে শয়তানের শত্রুতা শুরু হয়েছে। এখনো সে শত্রুতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এ জন্য হাদিসে শয়তানের ধোঁকা থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার (মুমিন) বান্দাদের বলে দাও, তারা যেন এমন কথাই বলে, যা উত্তম। নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি করে। নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।’ -সুরা বনি ইসরাইল : ৫৩
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা কেউ তোমাদের মুসলিম ভাইয়ের প্রতি কখনো অস্ত্র দ্বারা ইশারা করবে না। কারণ সে জানে না যে, ওই অস্ত্র দ্বারা শয়তান তাকে আঘাত করতে প্ররোচিত করছে এবং এর ফলে সে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। -মুসনাদে আহমদ : ২/৩১৭
শয়তানের কুমন্ত্রণায় মানুষের ঈমান দুর্বল হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, অনেক সময় মুমিনের জীবনকে বিপন্ন করে তুলে শয়তানের কুমন্ত্রণা। শয়তানের এই কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত থাকার দোয়া-
‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির।’
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই, রাজত্ব একমাত্র তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তাঁরই জন্য, আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।
উপকার : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি এক শবার এ দোয়াটি পড়বে, সে ১০টি গোলাম আজাদ করার সমান সওয়াব পাবে। তার জন্য এক শ সওয়াব লেখা হবে এবং আর এক শ গুনাহ মিটিয়ে ফেলা হবে।
ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান থেকে নিরাপদ থাকবে। কোনো লোক তার চেয়ে উত্তম সওয়াবের কাজ করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, ওই ব্যক্তি সক্ষম হবে, যে এর চেয়ে বেশি ওই দোয়া পড়বে। (বুখারি, হাদিস : ৩২৯৩)
বস্তুত কোনো মানুষ যখন বুঝবে শয়তানের কুমন্ত্রণা প্রসঙ্গে, তখন তার উচিৎ কুমন্ত্রণার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। সেই সঙ্গে মনে রাখা, এমন কুমন্ত্রণায় কোনো গোনাহ হয় না।
এ প্রসঙ্গে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘(শয়তানের কুমন্ত্রণা)আমলে পরিণত করা অথবা মুখে উচ্চারণ না করা পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা আমার উম্মতের মনের কুমন্ত্রণা বা ওয়াসওয়াসাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। ’
যদি প্রশ্ন করা হয়, শয়তান কুমন্ত্রণা কি আপনি বিশ্বাস করেন? সেটাকে আপনি সত্য মনে করেন? উত্তরে আপনি অবশ্যই বলবেন, এ সব কুমন্ত্রণাকে আপনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন। এগুলো শয়তানের ফাঁদ। মানুষকে পাপে লিপ্ত করার জন্যই সে এমন ফাঁদ পেতেছে। মানুষকে গোমরাহ করার জন্য শয়তান তাদের শিরা-উপশিরায় চলাচল করে থাকে।
সামান্য কোনো বিষয় কিংবা জিনিষের ক্ষেত্রে কিন্তু শয়তান মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয় না। দুনিয়ার বিষয়েও শয়তান থাকে নির্লিপ্ত। কারণ, এতে শয়তানের কোনো লাভ নেই। কিন্তু মানুষের ঈমানকে বরবাদ করে দেওয়ার মাঝে শয়তানের বিরাট স্বার্থ রয়েছে।
নবী করিম (সা.) শয়তানের ওয়াস্ওয়াসা থেকে বাঁচার পন্থাও আমাদের জন্য বর্ণনা করেছেন। প্রথমতঃ এসব ধারণা থেকে বিরত থাকা এবং শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।