শিরোনাম |
❒ নগরবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহে ব্যর্থ
তিন বছর পর ফের পানির দাম বাড়ানোর সিধান্ত নিয়েছে রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)। এরমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে তারা। গত বছরের ১৬ অক্টোবর
ওয়াসার ১৬তম বোর্ড মিটিংয়ে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশের সিদ্ধান্ত হয়।
ওয়াসার কর্তৃপক্ষ বলছে, পানির দাম বাড়ানো হলেও রাজশাহী পৌরসভার চেয়ে কম থাকবে। আর ওয়াসা পানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে আন্দোলনের হুমকি দি”েছন নাগরিক সংগঠনের নেতারা।
ওয়াসার তথ্যমতে, সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ শাখাকে আলাদা করে ২০১০ সালের ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠা হয় রাজশাহী ওয়াসা। এখন ১২৩টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে সেটি পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করছে ওয়াসা। মহানগীর পানির চাহিদা প্রতিদিন ১৩ কোটি লাখ লিটার। তবে ওয়াসা ৮৫৯ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে দৈনিক ১০৭ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে পারে।
বর্তমানে ওয়াসার মোট পানির সংযোগ আছে ৪৯ হাজার ২৪৮টি। এরমধ্যে আবাসিক ৪৮ হাজার ৫২৭টি ও বাণিজ্যিক ৭২১টি। এসব লাইনে মাধ্যমে বছরে ২ দশমিক ৫৩ কিলোলিটার পানি বিক্রি করে সংস্থাটি।
রাজশাহী ওয়াসার সুত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সংস্থাটির লোকসানের পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি টাকা। যার পুরোটাই সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। অপরদিকে শুধু সিস্টেম লসের কারণে ওয়াসার বার্ষিক লোকসান প্রায় ১০ কোটি টাকা। বর্তমানে এ লোকসান থেকে উত্তরণ পেতেই পানির মূল্য বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে পাঠানো সেই প্রস্তাবনার কপিতে দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতি এক হাজার লিটার পানির মূল্য আবাসিকে ৬ দশমিক ৮১ টাকা এবং বাণিজ্যিকে ১৩ দশমিক ৬২ টাকা হারে অভিকর নিচ্ছেন ওয়াসা। তবে ৩০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি করে আবাসিকে ৮ দশমিক ৮৫ ও বাণিজ্যিকে ১৭ দশমিক ৭০ টাকা করার প্রস্তাবনা রেখেছেন তারা।
এছাড়াও আবাসিকে আধা ইঞ্চি পাইপে একতলা ভবনের জন্য মাসে সর্বনিম্ন ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৯৫ টাকা, ১০ তলা ভবনের জন্য ৮২৫ টাকা পরিবর্তে এক হাজার ৭৩ টাকা মূল্য ধরা হয়েছে। এক ইঞ্চি পাইপে একতলা ভবনে ৩৭৫ পরিবর্তে ৪৮৮ টাকা এবং ১০ তলা ভবনে ২ হাজার ৭০ টাকা পরিবর্তে ২ হাজার ৬৫১ টাকা। দ্বিতীয় থেকে নবম তলা পর্যন্ত কিংবা ১০ তলার ওপরের তলার জন্য পানির বিল আনুপাতিক হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে রাজশাহী ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: নাদিম সারওয়ার বলেন, এখনই দাম বৃদ্ধি হচ্ছে না। আমরা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছি। এখন দাম বৃদ্ধি করা বা না করা তাদরে ওপর নির্ভর করছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
তিনি আরো বলেন, ওয়াসা যে দাম বাড়চ্ছে এটি একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখবেন রাজশাহী ওয়াসার পানির বিলের চেয়ে রাজশাহীর অনেক পৌরসভার পানির বিল বেশি।
এদিকে ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন নাগরিক সংগঠনের নেতারা।
এ বিষয়ে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ওয়াসা বলেছিল তারা নগরবাসীকে সুপেয় পানি নিশ্চিত করবে, কিš‘ প্রতিষ্ঠার পর থেকে তারা এটা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা যে পানির দাম বাড়াতে চায় এটি রাজশাহী বাসীর আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
তিনি আরও বলেন, তারা অতীতেও পানির দাম এক সঙ্গে তিনগুণ বৃদ্ধি করেছে। তখনও আমরা বাধা দিয়েছি। কিš‘ তারা রাজশাহীবাসীকে বৃদ্ধা অঙ্গুল দেখিয়ে সেই সময় কিছু রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মিলে এটি কার্যকর করেছেন। আবারো তারা যদি পানির মূল্য বাড়ায় তবে রাজশাহীবাসী এক হয়ে ওয়াসা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবে। ওয়াসার বির“দ্ধে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করবে।