gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২ মাঘ ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒ তৈরি খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণের আগ্রহ কমছে

শীতের শুরুতেই লেপ-তোষকের দোকানে ব্যস্ততা
প্রকাশ : সোমবার, ২ ডিসেম্বর , ২০২৪, ১০:২২:০০ পিএম
মিনা বিশ্বাস:
GK_2024-12-02_674de060aba48.jpg

শীতের শুরু থেকেই যশোরে লেপ-তোষকের দোকানে কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ফরমায়েশ অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরি করছেন তারা। তবে, রেডিমেট লেপ-তোষক-ম্যাট্রেসের কদর বৃদ্ধি, উপকরণের মূল্য ও মজুরি বৃদ্ধির কারণে এবার কমেছে চাহিদার পরিমাণ। সে কারণে কারিগরদের ব্যস্ততাও আগের থেকে একটু কম।
তীব্র শীত শুরু হতে এখনো বাকি কিছুদিন। কনকনে শীতের আগে তাই লেপ-তোষকের দোকানে আসছেন ক্রেতারা। নতুনের পাশাপাশি কেউ কেউ আবার পুরনো লেপ-তোষকই নতুন করে গড়িয়ে নিচ্ছেন। কারিগররা কেউ তুলা সেট করছেন, তো কেউ তুলায় মোড়ানো কাপড় সেলাই করছেন, এমনিভাবে শহরের অধিকাংশ দোকানে কাজ চলছে সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা বা নয়টা পর্যন্ত। শহরের গরীবশাহ্ সড়ক, কোর্টের মোড়, জেল রোড, চারখাম্বার মোড়, খয়েরতলা, বাবলাতলা, আরবপুরসহ বিভিন্ন প্রান্ত ও পাড়া মহল্লার কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসকল দোকানে বানানো লেপ-তোষকের পাশাপাশি রেডিমেড লেপ-তোষকও বিক্রি হচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে রেডিমেড ফোম এবং ম্যাট্রেসও। এবারে তুলা ও কাপড়ের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে লেপ, তোষক তৈরিতে খরচও বেড়েছে। উপকরণ ও মজুরি মিলিয়ে গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর খরচ কিছুটা বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে। তাই কমেছে অর্ডারের সংখ্যাও। সেই সাথে কম্বল, ফোম ও ম্যাট্রেসের ব্যবহার বেড়ে যাবার কারণে লেপ তোষকের কারিগরদের ব্যস্ততাও আগের চেয়ে কমেছে। এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট কারিগররা ঝুঁকছেন অন্য পেশায়।
তবে যেসব মানুষ পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসরণ করে চলেন, তারা এখনো নির্ভর করেন বানানো লেপ ও তোষকের ওপর। এ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন প্রান্তে একশ’র বেশি দোকান রয়েছে। যেসব দোকানে লেপ, তোষক বানানোর পাশাপাশি রেডিমেড লেপ, তোষক, ফোম ও ম্যাট্রেস বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে লেপ বানাতে এক হাজার থেকে এক হাজার আটশ’ টাকার মধ্যে খরচ পড়ছে। বালিশ বানাতে খরচ পড়ছে একশ’ থেকে একশ’ ৫০ টাকা। তোষক সর্বনিম্ন চারশ’ ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার দুশ’ টাকা। জাজিম দুই হাজার পাঁচশ’ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্য বানানো হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ম্যাট্রেস চার হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গরীবশাহ্ সড়কের কারিগর মারিয়া বিশ্বাস বলেন, ‘দশ বছর ধরে এ কাজের সাথে রয়েছি। দিনে ৫০০/ ৬০০ টাকা মজুরি পাই। আগে দিনে এক হাজার টাকাও মজুরি পেয়েছি। কম কাজ ও কম মজুরির জন্য এখন লেপ-তোষকের কারিগররা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন’। আরেকজন কারিগর আলেয়া খাতুনও একই কথা জানান।
কোর্টের মোড়ের কারিগর মোহম্মদ আনিস বলেন, ‘বংশ পরম্পরায় তিন পুরুষ ধরে লেপ তোষক বানানোর কাজ করছি। কয়েক বছর আগেও কাস্টমার বেশি ছিল। বর্তমানে ম্যাট্রেস আর ফোমের ব্যবহার বেড়ে যাবার কারণে কাস্টমার কমেছে। তাছাড়া, কাপড় ও তুলার দামও বেড়েছে আগের চেয়ে’।
মোল্লাপাড়ার জিনাত রেহানা বলেন, ‘দেশি-বিদেশি বাহারি কম্বল ও ম্যাট্রেসে বাজার সয়লাব হলেও এখনো লেপ-তোষকের বিকল্প নেই। তুলা ও কাপড়ের দাম বাড়লেও যারা বানানো লেপ তোষকে অভ্যস্ত, তাদের কম্বল বা ম্যাট্রেসে চলে না’।
বেজপাড়ার আলেয়া খাতুন বলেন, ‘তুলা ও কাপড়ের দাম বেড়েছে। তবু লেপ বানাতে দিয়েছি। বারো বছর আগের লেপের তুলা খানিকটা ড্যাম হয়েছে, তাই এবার পুরনো লেপ নতুন করে বানাতে দিয়েছি’।
ঘোপ নওয়াপাড়ার সাগির আহমেদ বলেন, ‘ম্যাট্রেসের অনেক বেশি দাম, যা আমাদের মতো মধ্যবিত্তের পোষায় না। ভালো মানের ম্যাট্রেস কিনতে না পারলে তা বেশিদিন যায়ও না। কিন্তু একটা তোষক বা জাজিমে ১৫/২০ বছরও পার হয়ে যায়’।
ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ বলেন, ‘বানানো লেপ-তোষকে অনেক যত্নের ছোঁয়া থাকে তাই স্থায়ী হয় বেশি। যার সাথে এখনকার ফোম বা ম্যাট্রেসের তুলনা চলে না’। আরেক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এক শ্রেণির কাস্টমার আছেন যারা এখনো বানানো লেপ, তোষক ও জাজিমের ওপরই নির্ভর করেন। তাদের কারণেই আমাদের ব্যবসাটা এখনো টিকে রয়েছে’।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝