শিরোনাম |
যশোরের একটি আদালত থেকে মামলার মূল নথি ও ওই নথিতে থাকা দুই কোটি ৯৭ লাখ টাকার চেকসহ গায়েবের মামলায় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। এমনকী তার রিমান্ডের আবেদনও করা হয়েছে। রফিকুল ইসলাম শহরের ঘোপ জেলরোড এলাকার মৃত আকবার আলীর ছেলে।
তবে, এ মামলার অপর তিন আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালতের বেঞ্চ সহকারী শাওন আক্তার পলাশ, আরেকজন ওই আদালতের অফিস সহায়ক শরিফুল ইসলাম এবং বহিরাগত রূপদিয়া গ্রামের আমিনুর রহমানের ছেলে এনামুল কবীর।
মামলা সূত্রে জানা যায়, যুগ্ম দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালতে বিচারাধীন একটি মামলার (যার নাম্বার সিআর-৭৫৫/২০১৬ ও দায়রা ১৫৪৮/২০১৬) গত ১৯ জুন দিন ধার্য্য ছিল। ওইদিন একজন আইনজীবীর মৃত্যুর কারণে ফুলকোর্ট রেফারেন্সের কারণে রেওয়াজ অনুযায়ী শুনানি হয়নি। কিন্তু আদালতের ওই দিনের অন্য সকল মামলার পরবর্তী ধার্য্য তারিখ ডায়েরি ও কার্যতালিকায় উঠলেও ওই মামলার কোনো তারিখ ওঠেনি। এরপর থেকে ওই মামলা আর বিচারকের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি। বিষয়টি আদালতের নজরে আসায় আদালত সংশিষ্টদের ওই নথি উপস্থাপনের জন্য লিখিত আদেশ দিলেও তারা ব্যর্থ হন। বাধ্য হয়ে গত ২১ অক্টোবর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার কামাল হোসেন বাদী হয়ে ওই চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৯৭ লাখ টাকার ব্যাংক চেক ডিজঅনারের দাবিতে মামলা হয়েছে। ওই নথিতে মূল চেক সংযুক্ত ছিল। ওই মামলা থেকে রক্ষা পেতেই রফিকুল অপর আসামিদের সাথে নিয়ে মামলার নথি চুরি করেছে। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, এ মামলার আর এক আসামি বহিরাগত এনামুল কবীরকে দিয়ে বেঞ্চ সহকারী শাওন আক্তার পলাশ বিভিন্ন কাজ করাতেন। যা সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারককে না জানিয়ে করতেন। মামলার বাদী কামাল হোসেনের দাবি, রফিকুল ইসলামের চেকের মামলা থেকে রক্ষা পেতেই অন্য আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবেই ওই মামলার নথি চুরি করেছেন।
এদিকে, অপর একটি সূত্র জানায়, রফিকুল ধুরন্দর প্রকৃতির লোক। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার কাছে মোটা অংকের টাকা পাবে। কিন্তু না দিয়ে তালবাহানা করেন। একেক সময় একেক রকম কৌশল অবলম্বন করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মমিনুল হক বলেন, আদালতে রফিকুল ইসলামের রিমান্ডের জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। সোমবার শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড না মঞ্জুর করেছেন। তিনি বলেন, এ মামলার দুই আসামি আদালতের কর্মচারী। ফলে তাদের আটকের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি। অপর একজনকে খোঁজা হচ্ছে।