শিরোনাম |
❒ ২৯ বস্তা টাকার গণনা শেষ
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে পাওয়া ২৯ বস্তা টাকার অবশেষে গণনা শেষ হয়েছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা গণনা শেষে মোট টাকা মিলেছে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এবারের প্রাপ্ত টাকা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমান।
রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা গণনার কাজে অংশ নেয়।
এদিন সকালে প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের উপস্থিতিতে দানের সিন্দুকগুলো খোলা হয়। পাগলা মসজিদের ১০টি দানবাক্স ও একটি ট্যাঙ্ক থেকে এবার রেকর্ড ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। পরে মসজিদ কমপ্লেক্সের দ্বিতীয়তলায় টাকাগুলো গণনার কাজ শুরু হয়।
এরআগে, সর্বশেষ ১৭ আগস্ট পাগলা মসজিদের ১০টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ৩ মাস ২৬ দিনে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়। এছাড়া দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল।
তার আগে, একই বছরের ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছিল। দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার ছিল।
২০২৩ সালে চারবার খোলা হয়েছিল কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স। চারবারে মোট ২১ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮১ টাকা পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে।
কমিটি সূত্রে জানা যায়, ছয় তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি মেগা প্রকল্প করা হবে। এতে মসজিদ-মাদরাসাসহ অর্ধলাখ মুসল্লি যাতে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন, এ রকম আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর আলাদাভাবে নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। প্রকৌশলীরা যাচাই-বাছাই করে নকশা চূড়ান্ত করে দিলেই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এতে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। কাজ শুরু হলে খরচ বাড়তেও পারে।
পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তাও করা হয়ে থাকে।
টাকা গণনাকালে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খানকে সংবাদকর্মীরা বলেন, পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে সর্বমোট কত টাকা রয়েছে? কিন্তু তিনি এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই চলে যান।
পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়াকেও একই প্রশ্ন করা হয়। তিনিও এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, এটা আমি বলতে পারবো না। জেলা প্রশাসক সভাপতি। উনার নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমাদের জানতে দেন না।