শিরোনাম |
❒ খন্দকার মোশাররফ হোসেন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, গত ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনা গায়ের জোরে ক্ষমতায় থেকে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি, দুর্নীতি ও লুটপাট করে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদেরকে বিতাড়িত করেছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মানবাধিকার ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ১৬ বছর ধরে আমরা (বিএনপি) গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করছিলাম। যার চূড়ান্ত বিজয় এসেছে ছাত্র জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে। গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আন্তরিকভাবে পেছনে থেকে এবং সঙ্গে থেকে সফলতা এনেছে। অনেকেই বলতে চায় বিএনপি আন্দোলনে ছিল না। অথচ বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আন্দোলনে নিহত হয়েছেন। তিন হাজার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, এই আন্দোলনের ফসল হচ্ছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে সমর্থন অব্যাহত রয়েছে। আমরা চাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চূড়ান্ত ফসল (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) সফল হোক।
তিনি বলেন, পূর্ববর্তী স্বৈরাচারী সরকার বাংলাদেশের সব সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তোলনের জন্য সংস্কার ও মেরামত প্রয়োজন। আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করব। কিন্তু এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য হতে পারে না। সব বৈষম্য এই সরকার দূর করতে পারবে—এমনটি আমরা মনে করি না। কিন্তু তারা সংস্কার শুরু করলে পরবর্তী সময়ে জনগণের নির্বাচিত সরকার সেটি অব্যাহত রাখবে। তবে এজন্য নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। নির্বাচনের বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব এই সংস্কার ও রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত।
শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা পতিত হয়েছে তারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে উজ্জীবিত হওয়ার চেষ্টা করবেই। কিন্তু দেশের জনগণ এটি হতে দেবে না। আমাদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার জন্য নানান ষড়যন্ত্র চলছে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে উসকানি দিচ্ছে। এ সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সব ষড়যন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে এমন একটি নির্বাচন দেওয়া, যেখানে জনগণ তার ইচ্ছা ও পছন্দ অনুযায়ী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
সভায় অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম সভাপতিত্ব করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমুদ্দিন আলম, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক ইমাম জাফর শিকদারসহ অন্যান্যরা।