শিরোনাম |
যশোরের নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেটগুলোর কারণে চরম অরাজকতা চলছে। সরকারি শুল্ক ছাড় ও আমদানির পরেও কমছে না নিত্যপণ্যর দাম। পেঁয়াজ, আলু, সয়াবিন তেল ও চালের বাড়তি দামের কারণে অসহায় সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার যশোর শহরের বিভিন্ন বাজারে আলু বিক্রি হয় ৭৫ টাকা কেজিতে। পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে মাসের শেষ সপ্তাহে এসেও সয়াবিন তেল বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা কেজিতে। বাজারে নতুন আসা বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা লিটারে। আগের মজুতকৃত বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৭ টাকা লিটারে।
নীলগঞ্জ সাহাপাড়ার পলক রায় বলেন, ‘চাল, আলু, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেলের যে দাম তাতে আমাদের মতো মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন’। ঝুমঝুমপুরের নাসরিন বেগম বলেন, ‘আলু, পেঁয়াজের এমন অস্বাভাবিক দাম মেনে নেয়া যায় না। প্রয়োজনের চাইতে অনেক কম কিনে সংসার চালাতে হচ্ছে’ তিনি প্রশ্ন করেন, এভাবে আর কতদিন। বাহাদুরপুরের আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘সিন্ডিকেট না ভাঙলে আমরা কোন সুফল পাবো না। তাই সরকার ও প্রশাসনের উচিত প্রথমে সিন্ডিকেট ভাঙা’।
মুদি ব্যবসায়ী পার্থ মজুমদার বলেন, ‘আমরা কিনে এনে বিক্রি করি। দাম নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই, তবু সাধারণ মানুষের অনেক ক্ষোভ আমাদের ওপর। আরেক ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে না থাকলেও ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছেই আসেন। সাধারণ মানুষও নানান কথা শোনান। সমস্যার মূলে না যেতে পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে না’।
অন্যদিকে পেঁয়াজ ছাড়াও রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে। আদা ১২০ থেকে ৪০০ টাকা। জিরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। গোলমরিচ এক হাজার ২০০ টাকা। দারুচিনি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। লবঙ্গ এক হাজার ৮০০ টাকা। এলাচ তিন হাজার ২০০ থেকে ৪০০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মুদির বাজারে ছোলার ডাল ও মুগ ডাল চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। ছোলার ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। মুগ ডাল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি। মসুরের ডাল ১০৫ থেকে ১৩৫ টাকা। বুটের ডাল ৭০ টাকা। কিছুটা কমেছে চিনির দাম। বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। লবণ ৪০ টাকা। খোলা আটা ৪০ টাকা। প্যাকেট আটা ৫০ টাকা কেজি।
অস্থিরতা কাটেনি চালের বাজারে। বাজারে নতুন চাল আসতে শুরু করলেও চাল বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা কেজিতে। আঠাশ ৬২ থেকে ৬৪ টাকা। কাজললতা ৬২ থেকে ৬৫ টাকা। বাসমতি ৭৮ থেকে ৮৬ টাকা। নাজিরশাইল ৭৪ থেকে ৮২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজারে আরেক দফা বাড়লো সোনালী মুরগির দাম। বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ২৯০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজিতে। লেয়ার মুরগি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। দেশি মুরগি ৫০০ টাকা। গরুর মাংস ৭০০ টাকা। খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকা কেজি। মাছের বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা কেজিতে। অন্যান্য মাছও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা হালিতে। সোনালী মুরগির ডিম ৬০ টাকা। দেশি মুরগি ডিম ৬৮ টাকা। হাঁসের ডিম ৭৬ টাকা। কোয়েল পাখির ডিম ১২ থেকে ১৪ টাকা। ১২টি ডিমের বক্স ১৫৫ টাকা।
অন্যদিকে, এখনো শতকের ঘরেই কাঁচামরিচ। বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে। তবে কমতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজির দাম। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। শিম, ওলকপি ৮০, বাধাকপি ৬০ থেকে ৭০, মুলা ৫০, গাজর ১০০, টমেটো ১৬০, পেঁয়াজের কলি ২০০, নতুন আলু ১০০টাকা কেজি। অন্য সবজির মধ্য বরবটি, উচ্ছে, বেগুন, মেটে আলু, ওল ৮০, চিচিঙ্গা, মেটে আলু ৮০, করলা, কচুরমুখি, ঝিঙ্গে, ধুন্দল, কচুরলতি ৬০, মিষ্টি কুমড়া, পটল, পেঁপে, লাউ, কাচকলা, পেঁপে, মানকচু ৫০, চালকুমড়া ৪০, শসা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।