শিরোনাম |
খুলনার কয়রা উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইসলামুল হক মিঠুর নানা দুর্নীতি অনিয়ম ও শিক্ষকদের হয়রানির বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সাতহালিয়া গ্রামের বাসিন্দা দৈনিক গ্রামের কাগজের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক এম. আইউব এ অভিযোগ দিয়েছেন। সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইসলামুল হক মিঠুর অপেশাদার আচরণ, শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানি, দুর্নীতি, অনিয়মের বিষয়টি অভিযোগে তুলে ধরেছেন তিনি।
এদিকে, সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইসলামুল হক মিঠুর বিরুদ্ধে দৈনিক গ্রামের কাগজে সংবাদ প্রকাশের পর তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন তিনি। ৩০ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টায় উপজেলা শিক্ষা অফিসের নীচে তার সাথে দেখা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেছেন, আমি অদুদ মাস্টারকে স্কুলের ভবন বিক্রিতে সহযোগিতা করেছি এটা কি ঠিক হয়েছে? আমি কি ওই সময় মহেশ্বরীপুর ক্লাস্টারের দায়িত্বে ছিলাম? আমার বিরুদ্ধে নিউজ করলেন কীভাবে?’
ভাগবা এলাকার ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভাগবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিএম অদুদ হোসেন স্কুলের পরিত্যক্ত ভবনের ইট, গ্রিল, জানালা ও দরজা বিক্রি করেন ২০২১ সালে। এটিও মিঠু তখন মহেশ্বরীপুর ক্লাস্টারের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি যে মহেশ্বরীপুর ক্লাস্টারের দায়িত্বে ছিলেন তার বড় প্রমাণ দক্ষিণ গিলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিদর্শন বহি। তিনি ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর পরিদর্শন বহিতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক এসএম মাহফুজুর রহমানকে নিয়ে উল্টোপাল্টা লেখেন। তার চাহিদাকৃত অর্থ না পেয়ে তিনি সেসময় পরিদর্শন বহিতে লেখেন,‘প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান কখনই কর্মস্থলে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধিতাকারীরা যেমন ধর্মের লেবাস ধারণ করে দেশের ক্ষতি করে তেমনি তিনিও এই স্বাধীনতা বিরোধীদের আদর্শে বিশ্বাসী একজন বলেই মনে হয়। এরা রাষ্ট্র সমাজের জন্য নিরাপদ নয়।’ এ ধরনের পরিদর্শন প্রতিবেদন জানাজানি হওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, এটিও মিঠু সরকারি চাকরি করেন নাকি অন্যকিছু করেন। কোনো সরকারি চাকরিজীবী আরেক চাকরিজীবী সম্পর্কে এমন ভাষা প্রয়োগ করতে পারেন কিনা।
এদিকে, এটিও মিঠু শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকদের গ্রামের কাগজের সংবাদ সম্পর্কে ভুল বোঝাচ্ছেন। তিনি বলে বেড়াচ্ছেন, মহেশ্বরীপুর ক্লাস্টারে গেছেন মাত্র দু’মাস হয়েছে। এখানেও তিনি প্রতারণা করছেন। মহেশ্বরীপুর ক্লাস্টারে এটি তার সর্বশেষ যাওয়া। এর আগেও তিনি ওই ক্লাস্টারে ছিলেন। অথচ সেই কথা তিনি বেমালুম চেপে যাচ্ছেন।
এদিকে, এটিও মিঠু বুধবার এ প্রতিবেদককে গ্রামের কাগজের যুগ্ম বার্তা সম্পাদককে নিয়ে হুমকিমূলক কথাবার্তা বলেন। তিনি বলেন,‘আমার বাড়ি যশোরে। আমিও বিষয়টি দেখবো।’ তার এ ধরনের কথায় সাংবাদিকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তার এ ধরনের আচরণকে অনেকেই ‘গুন্ডা’ এবং ‘লাঠিয়ালের’ সাথে তুলনা করেছেন।