শিরোনাম |
ইসরায়েলি বিমান হামলায় দক্ষিণ লেবানন থেকে আসা বহু পরিবার বৈরুতের রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলায় এরই মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ ৭৭৮টি নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মিকাতি বলেন, ১০ লাখ মানুষ কয়েক দিনের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হয়েছে, যা এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় স্থানান্তরের ঘটনা হতে পারে। চলতি মাসের শুরুর দিকে দক্ষিণ লেবাননে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই সময় তারা ওই এলাকা থেকে লোকজনকে প্রাথমিকভাবে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
গত শনিবার ভোরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিশাল এলাকা থেকে নির্দিষ্টভাবে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। গত বছর গাজায় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির নির্দেশনার মতো, লেবাননেও তারা একই কাজ করে। এর ফলে ওইদিনই হাজার হাজার মানুষ রাজধানী বৈরুতে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। তাদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয় স্কুল-কলেজের ভবনগুলো। অনেকেই আশ্রয় নেয় নির্মাণাধীন ভবনে। অনেকেই কোথাও জায়গা না পেয়ে রাজধানীর রাস্তায় এবং এর সমুদ্র সৈকতে আশ্রয় নেয়। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা লুথেরান ওয়ার্ল্ড রিলিফের লেবাননের পরিচালক আলি হিজাজি বলেছেন, বাস্তুচ্যুত লেবাননের মানুষকে কয়েক মিনিটের মধ্যে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে হয়েছে। তাই তারা সামান্য জিনিসপত্র ছাড়া সঙ্গে আর কিছুই নিতে পারেনি। অনেকে শুধু প্রাণ নিয়েই পালিয়ে এসেছে। ২৫ বছর বয়সী আয়া আয়ুব বিবিসিকে বলেছেন, তিনি তার ছয়জনের পরিবার নিয়ে দক্ষিণের তাহুয়েতেত আল-গাদির এলাকা থেকে পালিয়েছেন। কারণ তার বাড়ির চারপাশের সব ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি বৈরুতের একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে আরও ১৬ জনের সাথে অবস্থান করছেন। ৩৪ বছর বয়সী সাংবাদিক সারা তোহমাজ বিবিসিকে বলেছেন, মা এবং দুই ভাইবোনের সাথে গত শুক্রবার বাড়ি ছেড়ে সিরিয়া হয়ে গাড়িতে করে জর্ডানে এসেছেন তিনি। জর্ডানে পৌঁছাতে তাদের প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় লেগেছে।
এভাবে বহু মানুষকে তার আশ্রয়স্থল ছেড়ে পথে নামতে হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে লাখো মানুষ এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে হাঁটছে। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন জরুরি।