gramerkagoj
রবিবার ● ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২৮ আশ্বিন ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
দল গোছাতে বিএনপিতে তোড়জোড়
প্রকাশ : শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ১০:৪৫:০০ এএম
কাগজ ডেস্ক:
GK_2024-09-28_66f789db3ad3f.jpg

দীর্ঘ ১৭ বছর পর মুক্ত রাজনীতির অনুকুল পরিবেশ পেয়ে দল গোছাতে এবার তোড়জোড় চলছে বিএনপিতে। মেয়াদোর্ত্তীর্ণ কমিটিগুলো এরই মধ্যে ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে। যেসব কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিগত আন্দোলনে নিষ্ক্রিয়তা, সাংগঠনিক অদক্ষতা ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পেয়েছে সেসব কমিটিও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে তিনটি জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে মৎস্যজীবী দলের কমিটি। এছাড়াও তাঁতী দল, মহিলা দল, কৃষক দল, জাসাস,নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি, গাজীপুর জেলা, মহানগর, ময়মনসিংহ উত্তর-দক্ষিণ জেলা ও মহানগর, কুড়িগ্রাম, বাগেরহাট জেলা বিএনপিসহ আরও কয়েকটি কমিটি ভেঙে দেওয়া হতে পারে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে তিন বা ছয় মাস মেয়াদের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার কথা রয়েছে। তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অধীনস্থ ইউনিট কমিটি গঠন করে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলার নতুন কমিটি করবে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৭ বছর পর মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ পেয়েছে বিএনপি। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে চায় শীর্ষ নেতৃত্ব। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দেড় মাস পর এবার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ফিরছে দলটি। এ লক্ষ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সাংগঠনিক জেলা কমিটি ভেঙে নতুন নেতৃত্ব গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে সারা দেশে জেলাভিত্তিক দিকনির্দেশনামূলক যৌথ কর্মী সভার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে তিন সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সমন্বয়ে বিভাগভিত্তিক টিমও গঠন করা হয়েছে। আজ ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মী সভা শুরু হবে। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী শ্রমিক দলের কর্মী সভা আজ শনিবার গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, কমিটি গঠন পূর্ণগঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া । দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ মাগুরা, কুষ্টিয়া ও খুলনা জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলার আংশিক আহবায়ক কমিটি ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। অন্যান্যস্থানেও আহ্বায়ক কমিটি করা হবে। সেই কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অধীনস্থ সব ইউনিটের কমিটি গঠন করবে। পরে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলার নতুন নেতৃত্ব ঠিক করা হবে।
সূত্রমতে, বিগত আন্দোলনে অনেক জেলা বা মহানগর নেতারা রাজপথে ব্যাপক সক্রিয় ছিল। জেল খেটেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের বেশি মূল্যায়ন করা হবে।
সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের এপ্রিলে বরগুনা জেলা বিএনপি কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। প্রায় দেড় বছর ধরে এ জেলা কমিটিবিহীন চলছে। শিগগিরই বরগুনা জেলার কমিটি দেওয়া হবে। এছাড়া বিলুপ্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কমিটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের মধ্যে জাসাস, মহিলা দল, কৃষক দল ও তাঁতী দলে চরম গ্রুপিং ও নিষ্কয়তার অভিযোগ রয়েছে। জাসাসের আহবায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খান দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন, সদস্য সচিবও অনেকটা নিষ্কিয়। এছাড়াও জাসাসে রয়েছে চরম গ্রুপিং। এরই মধ্যে আলোচনা চলছিলো ইথুন বাবুকে আহবায়ক করে জাসাসের কমিটি প্রায় চুড়ান্ত রয়েছে। তাই যে কোন মুহুর্তে জাসাসের কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি দেওয়া হতে পারে। মহিলা দল, তাঁতী দলেরও একই অবস্থা নিজেদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কৃষক দলের নেতাদের মধ্যেও গ্রুপিং চলছে। এরই মধ্যে কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক এমপি মোশারফ হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কৃষক দলের সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যাপক পদবাণিজ্যের অভিযোগ থাকায় মোশারফ হোসেনই আগামী কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পেতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ ও শাহাদাত হোসেন বিপ্লব। স্বেচ্ছাসেবক দলের কিমিটি নিয়েও আলোচনা আছে। কারণ বিগত দিনে তাদের পারফরমেন্সে থুশী নন দলের হাইকমান্ড।
জানা যায়, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে রাজনীতি করে আসছে বিএনপি। এই দীর্ঘ সময়ে প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে বিএনপির ৮২ সাংগঠনিক জেলার অধিকাংশ কমিটি ঢাকা থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে যেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি আছে, তার অধিকাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ। আবার যেসব আহ্বায়ক কমিটি আছে; তার মেয়াদ তিন অথবা ছয় মাস দেওয়া হলেও বছরের পর বছর পার করছে।
দলটির নেতারা বলেন, সেনাসমর্থিত ওয়ান-ইলেভেন ও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমল ছিল বিএনপির জন্য ভয়ংকর সময়। বিএনপিকে ভাঙতে এবং জিয়া পরিবারমুক্ত নেতৃত্ব গড়তে গত ১৭ বছর দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র হলেও তা সফল হয়নি। তবে এজন্য মারাত্মক মূল্য দিতে হয়েছে নেতাকর্মীদের। প্রাণহানিসহ নানা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তারা।
জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্বৈরশাসনেও বিএনপিকে দুর্বল করা যায়নি। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমান দলকে সুসংঠিত রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের নেতৃত্বেই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী রাজপথে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। এই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে বহু নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন, অসংখ্য নেতাকর্মী পঙ্গু হয়েছেন। এখন আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কিছুটা মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ পেয়েছি। কমিটি গঠন নিয়ে তিনি বলেন এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া । দলের প্রয়োজনে যেখানে যেখানে প্রয়োজন কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে পুনরায় কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝