gramerkagoj
শনিবার ● ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৫ আশ্বিন ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒ ৫০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন পানির নীচে

টানা বৃষ্টিতে নাকাল জনজীবন

❒ ভেসে গেছে কয়েক হাজার বিঘার মাছের ঘের

প্রকাশ : রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ১১:৩০:০০ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-09-15_66e7044ab85a0.jpg

টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অসহনীয় হয়ে পড়েছে জীনযাত্রা। বেশিরভাগ জায়গায় রোপা আমন তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে সবজির ক্ষেত। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মাছের ঘের। অধিকাংশ জেলায় হাজার হাজার বাড়িঘর পানির নীচে। অসংখ্য মানুষ ঘরের মধ্যেই পানিবন্দি হয়ে আছে। চুলো জ্বালানোর অবস্থা নেই অনেক বাড়িতে। যশোর শহরের শংকরপুর, নাজির শংকরপুর, চোপদারপাড়া, পুরাতন কসবা ঘোষপাড়ায় ঘরের মধ্যে পানি। ভৈরব নদ থেকে অবৈধভাবে বেহিসেবি বালি উত্তোলন করার কারণে বাড়িঘর ধসে পড়ছে। ইতিমধ্যে ৬০-৭০ টি বাড়ি ধসে গেছে। আরও অনেক বাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
শনিবার রাত থেকে রোববার রাত পর্যন্ত বিরামহীন বৃষ্টি ঝরেছে। যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া অফিস রোববার রাতে জানায়, ওইদিন সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত যশোরে ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দু’দিন রেকর্ড করা হয় ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। তিনদিনে সর্বমোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৬২ মিলিমিটার।
ইতিমধ্যে ব্যাপক পরিমাণ জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে রোববার পর্যন্ত যশোর জেলায় ১০ হাজার ১৫০ হেক্টর রোপা আমন ও ৪৫৪ হেক্টর সবজি পানির নীচে রয়েছে। বৃষ্টি যদি কমে যায় তাহলে পানির নীচে থাকা ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার। তিনি জানিয়েছেন, চলতি আমন মৌসুমে যশোর জেলায় এক লাখ ৪০ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। এরমধ্যে রোববার পর্যন্ত ১০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। আগাম সবজির চাষ হয়েছে সাত হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে পানির নীচে রয়েছে ৪৫৪ হেক্টর। যশোরের বিভিন্ন এলাকায় শ’শ’ বিঘা মাছের ঘের ভেসে গেছে। যশোরে বেশিরভাগ গ্রামের মানুষ ২২ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন সময় পার করেছে। যশোর শহরের অধিকাংশ প্লাবিত হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে প্রতিনিয়ত এমনটি হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা বলছেন।
একই অবস্থা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটেও। টানা বৃষ্টিতে এসব জেলায় হাজার হাজার হেক্টর আমন ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে কয়েক হাজার মাছের ঘের। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাগেরহাটের মোংলায় তলিয়ে গেছে সাত শতাধিক চিংড়ি ঘের। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চিংড়ি চাষিরা। তলিয়ে গেছে পুকুর, বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট। সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে তিন শতাধিক মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এক হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। পৌর শহরসহ নিম্নাঞ্চলের ২০ গ্রামের শ’ শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ কারণে রান্না খাওয়া বন্ধ হয়ে পড়েছে। শনিবার বিকেল চারটা থেকে রোববার সকাল ১১টা পর্যন্ত টানা ২০ ঘণ্টা পৌর শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। সেইসাথে গত তিনদিন ধরে অধিকাংশ গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
আজ আশ্বিন মাসের প্রথম দিন। শীতের আবহ শুরু হওয়ার সময়। কিন্তু তার মাত্র একদিন আগে ভাদ্র মাসের শেষ দিন ছিল বৃষ্টিমুখর। টানা তিনদিন বৃষ্টি হয়েছে একটানা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভাষ্য, সাগরে সৃষ্টি হওয়া স্থল নিম্নচাপের কারণে এই বৃষ্টি। যদিও ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সীমানা ছাড়ছে এই নিম্নচাপ। স্থল নিম্নচাপের এই ধীরগতির কারণে বৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে। আজ থেকে বৃষ্টি অনেকটা কমে যেতে পারে। আর আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি একেবারেই কমে যাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার দেশের প্রায় সব জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। রোববার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে। এখানে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল যশোরে। এখানে রেকর্ড করা হয় ৭১ মিলিমিটার। যদিও সন্ধ্যা ছয়টায় এটি বৃদ্ধি পেয়ে ৭২ মিলিমিটারে দাঁড়ায়।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝