শিরোনাম |
বন্যার্তদের সহযোগিতা করার কথা বলে টাকা তোলা হয় একলাখ ৬৫ হাজার। অথচ এ সংক্রান্ত ফান্ডে জমা হয়েছে মাত্র একলাখ পাঁচ হাজার! ৬০ হাজার টাকা গায়েব! বাকি টাকা থেকে খরচ করা হয়েছে আরও ২৭ হাজার। যা ফূর্তিতে ব্যয় করা হয়েছে। এখন আছে মাত্র ৭৫ হাজার টাকা। সেই ৭৫ হাজার টাকা খুলনার পাইকগাছায় নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাউকে না জানিয়ে সভাপতি দিয়েছেন অন্য একটি সংগঠনে।
সম্প্রতি বন্যার্তদের জন্য শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে উত্তোলন করা টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে যশোরের আলেয়া ফাউন্ডেশন নামের একটি ভুঁইভোড় সংগঠনের বিরুদ্ধে। যাদের নেই কোনো অনুমোদন। অথচ তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলে। অভিযোগ রয়েছে, সংগঠনের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস চৈতি ওরফে শাহারা খান ইচ্ছেমতো বন্যার্তদের টাকা হজম করেছেন। উত্তোলিত টাকার হিসেব দেননি অন্যদের। তিনি মায়ের নামে এ সংগঠন খুলে এসব টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওই সংগঠনের সাথে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এসব বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ইয়াসিন আরাফাত নামে ওই সংগঠনের এক সদস্য। অপরদিকে, শাহারা খানও পাল্টা অভিযোগ করেছেন অন্যদের বিরুদ্ধে।
ইয়াসিন আরাফাতের অভিযোগ, ছাত্ররা সকলে একত্রিত হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা তুলেছেন। কিন্তু শাহারা দেখিয়েছেন একলাখ পাঁচ হাজার টাকা। এছাড়াও শাহারা খাওয়া-দাওয়া, যাতায়াত, ঢাকায় যাতায়াত, বিভিন্ন ধরনের খরচ দেখিয়েছেন আরও ২৭ হাজার টাকা। যা মোটেও সত্য না। এই টাকা শাহানা আত্মসাৎ করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
ওই সংগঠনের সাথে থাকা সুমাইয়া, সাবিহা খাতুন, ফারজানা আক্তার, হৃদয়, শান্তা, সাব্বির হোসেন, মামুনসহ অনেকে দাবি করেছেন,তারা নিজের টাকা দিয়ে খাওয়া দাওয়া করেছেন। এছাড়া, যাতায়াত করেছেনও নিজের টাকা দিয়ে। অথচ শাহারা খরচ দেখিয়েছেন কয়েক হাজার টাকা।
অন্যদিকে, শাহারার অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া, অনেকেই যে যার মতো করে বন্যার্তদের জন্য ওঠানো টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ।
এ দু’ অভিযোগের বিষয়ে মঙ্গলবার পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রেজাউল করীম দু’পক্ষকে ডেকে আনেন। তিনি জানান, সংগঠনের সভাপতি জানিয়েছেন, ৭৫ হাজার টাকা তিনি একটি ফাউন্ডেশনে দিয়েছেন। যার কাগজ দেখিয়েছেন তিনি। ওই কাগজের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে, কত টাকা উঠেছে আর কত টাকা খরচ হয়েছে এর পক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে,মীমাংসার পর শিক্ষার্থীরা জানান, শাহারা মাফ চেয়েছেন। তাই তাকে মাফ করে দিয়েছেন অন্যরা।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, যারা টাকা উঠিয়েছেন তাদের অনেকেই আলেয়া ফাউন্ডেশনের সাথে জড়িত না। কেউ কেউ পেশাজীবী। কেউ কেউ ভবঘুরেও রয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময় ফাউন্ডেশনের নাম করে টাকা তুলেছেন শাহারা। তাদের অনেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে নানা ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে।
এছাড়া, অভিযোগ রয়েছে শুধু শাহারা খানই নয়, অনেকেই বন্যার্তদের সহযোগিতার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ খান বলেন, তারা একটি টিম গঠন করেছেন। এই টিম মনিটরিং করছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করা হবে।