gramerkagoj
রবিবার ● ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒ দু’দিনের টেস্ট ম্যাচ

পাকিস্তানকে প্রথমবার হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশের ইতিহাস
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ০৫:১৩:০০ পিএম
ক্রীড়া ডেস্ক:
GK_2024-09-03_66d6efc2937f3.jpg

প্রথমবারের মতো টেস্টে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ। এরই মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে নতুন ইতিহাস রচনা করেছে টাইগাররা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে জিতে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার দ্বিতীয় টেস্টেও দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর পাকিস্তান ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার এমন লজ্জার শিকার হয়েছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট এলেই বাংলাদেশের স্মৃতিতে উঠে আসে মুলতান টেস্টে হারের স্মৃতি। দীর্ঘদিন পর সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে রাওয়ালপিন্ডির প্রথম টেস্ট। দশ উইকেটের জয় পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার বাংলাদেশকে দিয়েছে টেস্টে পাকিস্তানকে হারানোর স্বাদ। এবার দ্বিতীয় টেস্টেও এলো অসামান্য এক জয়। দিনের শুরুতে দুই উইকেট হারালেও নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমরা ঠিকই দলকে নিয়ে যান ১৮৫ রানের ল্যান্ডমার্কে।
চতুর্থ দিনে পেসারদের দাপুটে পারফরম্যান্সের পর জয় ছিল সময় আর ধৈর্য্যের ব্যাপার। ৫ম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এলো সেই ক্ষণ। শেষ দিনের টাইগার ব্যাটারদের সুবাদে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই। আবরার আহমেদের বলে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব আল হাসান। পাকিস্তানও ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার এমন লজ্জার শিকার হয়েছে।
রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করে ২৬২ রান। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান, বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৫ রান। অবশেষে ৬ উইকেটে জয়ের মধ্যদিয়ে ইতিহাস রচনা করেছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনে শুরুটা দারুণ করেছিল আগের দিনের অপরাজিত দুই টাইগার ওপেনার। তবে পরপর সাজঘরে ফেরত যান ফর্মে থাকা সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান। চাপে পড়লেও তা বেশ ভালোভাবেই সামাল দেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত ও মুমিনুল হক। দলীয় ১২২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে মধ্যহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। ইতিহাস গড়া সিরিজ জয়ের জন্য আর প্রয়োজন ৬২ রান।
বৃষ্টি শঙ্কা কাটিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা মঙ্গলবার যথাসময়েই শুরু হয়েছিল। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়ার পর আজকেও দারুণ ব্যাটিং করছিলেন সাদমান-জাকিরের ওপেনিং জুটি। ব্যক্তিগত ৪০ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন জাকির। তাতে ভাঙ্গে বাংলাদেশের ৫৮ রানের উদ্বোধনী জুটি।
মাঝে একবার স্লিপে ক্যাচ ফসকানোতে জীবন পেয়েছিলেন আরেক ওপেনার সাদমান। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারলেন না, ব্যক্তিগত ২৪ রান করে সাজঘরের পথ ধরলেও তিনিও। এরপর মুমিনুল হককে সঙ্গে করে বেশ সতর্ক হয়ে রানের খাতা সচল রাখেন অধিনায়ক শান্ত। স্বস্তির সঙ্গেই লাঞ্চ ব্রেকে গেল বাংলাদেশ।
মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরেই উইকেট হারালো বাংলাদেশ। দলীয় ১২৭ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সালমান আগার বলে ফ্রন্ট ফুটে খেলেন। বল ব্যাটের আগায় চুমু খেয়ে শর্ট লেগে থাকা আব্দুল্লাহ শফিকের তালুবন্দি হয়। ৮২ বল খেলে ৫ চারে ৩৮ রান করে যান কাপ্তান। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ফিরেছেন আবরার আহমেদের বলে। তার বলে মারতে গিয়ে মিড অফে সাইম আইয়ুবের হাতে ধরা পড়েন। ৭১ বলে ৪টি চারে ৩৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর আর ফিরতে হয়নি বাংলাদেশের। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে বাংলাদেশকে নিয়ে গেলেন জয়ের আরও কাছে। মুমিনুল ফিরলেও সাকিব আল হাসান এসেছিলেন জয় করতে। তাতে বাংলাদেশ আবারও পেল দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ছিল বিদেশে সিরিজ জয়ের স্মৃতি। এবার তাতে যুক্ত হলো পাকিস্তানের নাম। গ্যালারিতে বাংলাদেশের পতাকা উড়েছিল সিরিজের শুরু থেকেই। শেষ পর্যন্ত সিরিজ শেষে উঁচুতেই থাকলো লাল-সবুজের সেই পতাকা।
গতকালের দিনটাই মূলত ভিত গড়ে দেয় জয়ের। তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে হাসান মাহমুদ তুলে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ২১ রানের লিড থাকলেও ব্যাকফুটেই ছিল পাকিস্তান। ৪র্থ দিন বাংলাদেশের পেসাররা ঝরালেন আগুন। নাহিদ রানার গতির সামনে অসহায় পাকিস্তানের টপ আর মিডল অর্ডার। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং স্পেল উপহার দিলেন।
সঙ্গ দিলেন হাসান মাহমুদ নিজেও। দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান আর সালমান আঘাকে ফিরিয়েছেন। ১৭২ রানে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ১৮৫ রান।
এর আগে লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম ইনিংসে গড়া ১৬৫ রানের বিশ্বরেকর্ড জুটিটাও টাইগারদের আত্মবিশ্বাসের পালে দিয়েছে বাড়তি হাওয়া। টেস্ট ক্রিকেটে ৫০ এর আগে ৬ উইকেট হারানোর পর ৭ম উইকেটে বিশ্বরেকর্ড ১৬৫ রানের জুটি গড়েন দুই টাইগার ব্যাটার। লিটন পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। প্রথম ইনিংসের পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ গিয়েছিল ২৬২ পর্যন্ত। ১২ রানে পিছিয়ে থাকলেও বাংলাদেশের ম্যাচে ফিরতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। জয় তুলে নেয় সিরিজ হোয়াইট ওয়াশের মধ্য দিয়ে।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝