gramerkagoj
বুধবার ● ৯ জুলাই ২০২৫ ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
gramerkagoj
শিরোনাম
শিরোনাম আফগান নারীদের নিপীড়নে তালেবান নেতৃত্ব অভিযুক্ত, আইসিসির গ্রেপ্তারি আদেশ শেখ হাসিনার সঙ্গে আওয়ামী লীগেরও বিচার দরকার: ফখরুল দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের জন্য এককালীন অনুদানের জন্য আবেদন আহবান অব্যাহত বৃষ্টিতে ব্যস্ততা বেড়েছে ছাতা কারিগরদের দলমত নয়, দায়বোধের জয়: জামায়াতপন্থী নেতাদের হাত ধরে শৈলকুপার ধরমপাড়া রাস্তায় ফিরল স্বস্তি আরও কয়েক দিন চলবে বৃষ্টি, জানাল আবহাওয়া অফিস মোরেলগঞ্জে ফের পানগুছি নদীর ভাঙ্গনের মুখে শত শত পরিবার জুলাই আন্দোলনে গুলি চালনার নির্দেশ শেখ হাসিনার মণিরামপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত পানি আর কষ্টে ডুবেছে পাইকগাছা, ক্ষতির মুখে কৃষকরা
বন্যা ইস্যুতে ভাইরাল শিশুর ছবিটি সম্পর্কে যা জানা গেল
প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট , ২০২৪, ০১:৪৯:০০ পিএম
গ্রামের কাগজ ফ্যাক্টচেক ডেস্ক:
GK_2024-08-22_66c6ed9a3e314.jpg

দেশের অভ্যন্তরে ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা খাগড়াছড়িসহ কয়েকটি জেলা এখন বন্যায় বিপর্যস্ত। এরই মধ্যে বন্যাকবলিত মানুষের দুর্দশার চিত্র নানান মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দেশের মানুষের আবেগকে পুঁজি করতে নেমে পড়েছে একাধিক চক্র। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াচ্ছে একাধিক বিভ্রান্তিকর ছবি। পরিস্থিতি বিপর্যস্ত হলেও অনেকে বিদেশের এমনকি বর্তমান সময়ের নয় এমন ছবি ব্যবহার করছেন উদ্দেম্যমূলকভাবে। অনেকে আবার সত্যতা যাচাই না করেই এসব ছবি শেয়ার করছেন। গতকাল (২১ আগস্ট) থেকে ফেসবুকে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রকাশে একটি শিশুর ছবি ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই শিশুটির এ ছবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও এ ছবি শেয়ার করছেন নিজস্ব বিভিন্ন বার্তা দিয়ে।

ভাইরাল হওয়া শিশুটির ছবি নিয়ে ফ্যাক্ট চেক করেছে গ্রামের কাগজের টিম। এতে এই ছবি এআই এর সাহযোগিতায় তৈরি বলেই অধিকাংশ সম্ভাবনা বলছে। এছাড়াও ছবিটি নিয়ে মতামত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির। তিনি তার ফেসবুকে ছবিটি সম্পর্কে যা জানিয়েছেন তা হুবহু নিচে দেওয়া হলো।
‘ছবিটি নিয়ে অনেকে জানতে চেয়েছেন- সত্যিকারের ছবি নাকি এআই জেনারেটেড।
প্রথমত, কোনো ইমেজ আএই জেনারেটেড কিনা তা এখনও কোন টুল ব্যবহার করে শতভাগ নিশ্চয়তার সাথে বলার সুযোগ নেই। টুলগুলোর দেয়া ফলাফল করোবোরেটিং এভিডেন্স হিসেবে রাখা যায় শুধু।
আমি ৩টি এআই ডিটেক্টর টুলে ছবিটি ট্রাই করে ৩ ধরনের ফলাফল পেয়েছি। একটিতে দেখিয়েছে ছবিটি ৯১ শতাংশ এআই জেনারেটেড। অন্যটিতে ৪০ শতাংশ এবং একটিতে দেখাচ্ছে 'লাইকলি হিউম্যান মেইড'। ছবিটির অরিজিনাল ভার্সন পেলে হয়তো এই ভিন্নতর ফলাফল হতো না। কোনো এআই জেনেরেটেড ছবির অরিজিনাল ভার্সন ডিটেক্টর টুলে চেক করলে মোটামুটি সব ক্ষেত্রেই কনক্লুসিভ ফলাফল পাওয়া যায়। (কোন ছবি একাধিক টুলের প্রতিটিতে ৭০ শতাংশের বেশি আইএই জেনারেটেড দেখালে আমরা সেটাকে কনক্লুসিভ ফলাফল হিসেবে গ্রহণ করে থাকি)।
কিন্তু এই ছবির ক্ষেত্রে, বুঝাই যাচ্ছে শুধু টুল দিয়ে এআই জেনারেটেড কিনা তা নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এখন ভিন্ন কিছু এঙ্গেল থেকে এটি বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।
ছবিটি গতকাল থেকে অনলাইনে ছড়িয়েছে। নানানভাবে সার্চ করেও গতকালের আগে এবং সামাজিক মাধ্যমগুলোর বাইরে কোথাও এটি খুঁজে পাওয়া যায় না। এবং দেখেই বুঝা যাচ্ছে, এটি পেশাদার কোন ফটোগ্রাফারের ক্যামেরার ছবি।
যদি ধরে নেয়া হয় যে, এটি ফেনী নোয়াখালী অঞ্চলের চলমান বন্যার ছবি, তাহলে এটি অনেক মূল্যবান একটি ছবি হওয়ার কথা। কোন পেশাদার ফটোগ্রাফার এই ছবি তুললে অবশ্যই ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় এটি তিনি যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন সেটিতে প্রকাশ করবেন। তিনি ফ্রিলান্সার হলে অনেক দামে ছবিটি কোন সংবাদমাধ্যমের কাছে বিক্রি করবেন। অর্থাত, ছবিটি যেভাবে শুধু ফেসবুকে পাওয়া যাচ্ছে তেমনটি হওয়া কথা না। প্রথমে এটি কোন সংবাদমাধ্যম বা এরকম প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ক্রেডিট ও ক্যাপশন সহ প্রকাশিত হয়ে পরে ফেসবুকে আসার কথা। কিন্তু এই ছবির ক্ষেত্রে তা হয়নি।
যদি কোন পেশাদার ফটোগ্রাফার এটি তার সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে থাকতেন তাহলে এমন একটি আবেদনময়ী ছবিতে অবশ্যই তার নাম বা প্রতিষ্ঠানের নাম ওয়াটারমার্ক করে দেয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। ছবিটির কোন ভার্সনে এমন কিছু দেখা যায় না।
শিশুটি ক্যামেরার দিকে যেভাবে তাকাচ্ছে তাতে বুঝা যাচ্ছে ফটোগ্রাফার খুবই কাছে ছিলেন এবং তিনি এই অবস্থায় একাধিক ছবি/ভিডিও তোলার সুযোগ পাওয়ার কথা। কিন্তু অনলাইনে এই একটি সূত্রহীন ছবি ছাড়া এই ঘটনার আর কোনো এঙ্গেলের ছবি বা ভিডিও নেই।
ছবিতে যেভাবে একটি উন্মুক্ত পানিভর্তি এলাকায় ২/৩ বছরের বাচ্চাকে অভিভাবক ছাড়া দেখা যাচ্ছে সেটি অসম্ভব না হলেও খুব স্বাভাবিক নয়।
বাচ্চাটির ঠোঁটের গঠনও কিছুটা অস্বাভাবিক। একই সাথে তার চেহারায় আতঙ্কের কারণে চোখ ও কপালের একপাশে যে ভাঁজ (প্রকৃত ভাঁজ পড়বে কপালের ঠিক মাঝখান বরাবর) পড়েছে সেটিও স্বাভাবিক এক্সপ্রেশন মনে হচ্ছে না।
সবমিলিয়ে বলা যায়, ছবিটি সত্য ঘটনার না হয়ে তৈরিন করা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’

আরও খবর

🔝