শিরোনাম |
‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন, কপোলের কালো তিল পড়বে চোখে- এ গানটি আজও সমান জনপ্রিয়। মাহমুদুন্নবীর গাওয়া কালজয়ী এ গানটি চিত্রনায়িকা শবনমের উদ্দেশ্যে নায়ক রাজ রাজ্জাকের লিপে শোনা যায়। নন্দিত এ অভিনেত্রীর জন্মদিন আজ।
শবনম ১৭ আগস্ট, ১৯৪৬ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পারিবারিক নাম ঝর্ণা বসাক। বাবা ননী বসাক ছিলেন একজন স্কাউট প্রশিক্ষক ও ফুটবল রেফারী।
শবনম চলচ্চিত্রে যুক্ত হয়েছিলেন ১৯৫৮ সালে। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ সিনেমার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শবনম। এরপরের বছর উর্দু সিনেমা চান্দায় অভিনয় করে পাকিস্তানে তারকাখ্যাতি পান তিনি।
শবনম বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করলেও দীর্ঘ সময় অভিনয় করেছেন পাকিস্তানের সিনেমায়। পাশাপাশি এ অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন পাঞ্জাবি চলচ্চিত্রেও। পাকিস্তানের সিনেমায় তার অবদান এতোটাই যে সেখানকার মহানায়িকা বলা হয়ে থাকে শবনমকে। তার অভিনয়ের গুণে দেশটির চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার নিগার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১১ বার।
শৈশবেই বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শিখেছিলেন শবনম। একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি সুপরিচিতি লাভ করেন। সেখানেই একটি নৃত্যের অনুষ্ঠানে এহতেশাম তার নাচ দেখে এদেশ তোমার আমার চলচ্চিত্রের নৃত্যে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। তিনি আরও কিছু ছবিতে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। কিন্তু এহতেশামের পাশাপাশি পরিচালক মুস্তাফিজের নজর কাড়তে সক্ষম হন অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেই।মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন‘ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৬১ সালে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শবনম। এ ছবিতেই তিনি শবনম নাম ধারণ করেন।
১৯৬১ সালে বাংলা চলচ্চিত্র হারানো দিনের মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শবনম। ১৯৬২ সালে উর্দু চলচ্চিত্র চান্দা ছবির মাধ্যমে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান।
বিশ্বে তিনিই একমাত্র চলচ্চিত্র অভিনেত্রী যিনি ১৯৬০-এর দশক থেকে ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত তিনটি দশক ধারাবাহিক ও সফলভাবে রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করে অগণিত দর্শক-শ্রোতার মন জয় করেছিলেন।
ষাটের দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে শবনম-রহমান জুটি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান থেকে পুনরায় বাংলাদেশে ফিরে এসে আরো কিছু বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
৪০ বৎসরের অধিককাল ধরে অভিনয়ের ফলে তিনি প্রায় ১৮০টি চলচ্চিত্রের অনেকগুলিতে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন। শবনম অনেকবার সম্মানসূচক নিগার পুরস্কারের পাশাপাশি তিনবার পাকিস্তানের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। কাজী হায়াতের পরিচালনায় ও ঢাকা প্রোডাকশনের ব্যানারে তিনি ১৯৯৯ সালে সর্বশেষ আম্মাজান চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন।