শিরোনাম |
দেহের বাড়তি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে একক কোনো পদ্ধতি কাজ করে না। খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা, জীবনযাপনের নানান অভ্যাসের ওপর নির্ভর করবে কতটুকু ওজন কমানো যায়।
কোনো একটি নির্দিষ্ট খাবার কখনও ওজন কমাতে না পারলেও, যারা ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, সে প্রক্রিয়াকে আরও সাবলিল করতে জিরা, মৌরি ও দারুচিনির পানীয় হতে পারে সহায়ক।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ‘ন্যাচারাল হেল্থ কেয়ার ক্লিনিক’য়ের পুষ্টিবিদ ও পরিচালক ডা. মানসি চাত্রাথ বলেন, ‘ঘরোয়া উপাদানে ওজন কমাতে সহায়ক পানীয় হিসেবে মৌরি, জিরা ও দারুচিনি বেশ পরিচিত। এগুলোর শরীরের জন্যও উপকারী। তবে তৈরি পদ্ধতি ও পান করার নিয়ম না মানলে উপকার মিলবে না।’
তাই এসব উপাদান দিয়ে পানীয় তৈরির পদ্ধতি ও গ্রহণের সঠিক নিয়ম জানা থাকা দরকার।
জিরা পানি
জিরার বীজ প্রাকৃতিকভাবে শীতলকারক এবং তা পাকস্থলীর পিএইচয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া পেটের জ্বালাপোড়া, ফোলাভাব, অম্ল ও হজমজনিত সমস্যা দূর করে। আর সুস্থ হজমক্রিয়া ওজন কমাতে সহায়ক। এছাড়া জিরা দেহের পানিভাব কমিয়ে ওজন কমায়, ইন্সুলিনের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায় এবং প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহ কমায় ও বিপাক বাড়িয়ে সার্বিকভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
তৈরি পদ্ধতি
সকালে ঘুম থেকে উঠেই জিরা পানি গ্রহণের সঠিক সময়। এক চা-চামচ জিরা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে তা ফুটিয়ে অর্ধেক করে পান করুন। ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
মৌরির পানি
মৌরি আঁশ সমৃদ্ধ যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরাভাব দেয়। আর বাজে খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রাখে। এটা চিনির খাওয়ার আগ্রহ কমিয়ে ওজন কমাতে সহায়তা করে। এক গ্লাস মৌরি ভেজানো পানি সারাদিনের মিষ্টি-জাতীয় খাবারের চাহিদা কমায়।
এটা ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ যা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও এই বীজ উপকারী। পেট ফোলাভাব, হজমজনিত সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতেও সহায়ক।
তৈরি পদ্ধতি
খালি পেটে মৌরি বীজের পানি পান সবচেয়ে উপকারী। সারা রাত পানিতে বীজ ডুবিয়ে রেখে সকালে ফুটিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় পান করলে উপকার পাওয়া যাবে।
দারুচিনির পানীয়
দারুচিনি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (পিসিওএস)’ নিয়ন্ত্রণ করে। এই সমস্যা অযাচিতভাবে ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
দারুচিনি উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবারের বিরুদ্ধে কাজ করে ওজন কমাতে সহায়তা করে। দারুচিনি উষ্ণ প্রকৃতির এবং গরমকালে তা খাওয়ার সময় বিশেষ সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এর ফাঙ্গাস ও ব্যাক্টেরিয়া রোধী উপাদান নানান রকমের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।
তৈরি পদ্ধতি
এক গ্লাস পানিতে দুই চিমটি দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। দিনে দুবার পান করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। দুপুরে বা রাতে ঘুমানোর আগে দারুচিনির পানীয় পান করার ভালো সময়।
ডা. মানসি বলেন, ‘ঘরোয়া পদ্ধতির ফলাফল পেতে কিছুটা সময় লাগে। উপরের পানীয়গুলোর যে কোনটাই একটানা তিন মাস পান করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। এসব পানীয় পানের ক্ষেত্রে যে কোনো একটা অনুসরণ করা উচিত, একাধিক মেলানো উচিত নয়।’
এই সকল পানীয় স্বাস্থ্যকর এবং ডায়াবেটিক রোগীদের তা পান করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন ডা. মানসি।
শুরুতে অল্প পরিমাণে পান করে দেহে কী ধরনের প্রভাব ফেলে তা বুঝে নিয়ে পরে তা ওজন কমানোর পানীয় হিসেবে নিয়মিত পান করা যেতে পারে।