অঘটনের পর নতুন সাজে সাজানো হচ্ছে নরসিংদী জেলা কারাগার। গ্রহণ করা হয়েছে নানা উদ্যোগ। কারাগারের প্রধান ফটক মেরামতের পাশাপাশি ভেতরে বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ সচল করার কাজ চলছে। হামলা ও সহিংসতা রোধে কারা কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে নতুন অস্ত্র ও গুলি।
কারাগারটিতে নতুন জেলর ও জেল সুপারসহ একাধিক কারারক্ষীকে পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই নারী জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
এদিকে, কারাগারে বর্বরচিত হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটের ঘটনা দুটি এবং সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ছয়টিসহ জেলার বিভিন্ন থানায় মোট ৮টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে হামলার সময় কারাগারের দায়িত্বে থাকা জেলর কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় দুটি মামলা করেন। বিভিন্ন থানার পুলিশ বাদী হয়ে ছয়টি মামলা করে। এছাড়া, কারাগার থেকে লুট হওয়া ৩৬টি অস্ত্র, ১১০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। চলমান সহিংসতায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ১০৩ জনকে।
অন্যদিকে কারা সূত্র জানায়, বুধবার দিনভর নরসিংদী আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম রিপনের মাধ্যমে আরও ১৫৬ জন বন্দি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। নরসিংদী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাকিবুল হকের কাছে আত্মসমর্পণ করেন বন্দিরা। এ নিয়ে মোট ২৮৯ জন বন্দি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করলেন।
নরসিংদী কারাগারে হামলা করে অস্ত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার কিছু ভিডিও গণমাধ্যমে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কারাগারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে অস্ত্র হাতে উল্লাস করছেন বিক্ষোভকারীরা। আবার সেই অস্ত্র দিয়েই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন। একসঙ্গে এত অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিক্ষোভকারীদের হাতে চলে যাওয়ায় তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
নরসিংদী পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কারাগারের অস্ত্র লুটের পর বিক্ষোভকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা পুলিশকে আক্রমণ করে ডিসি অফিস ও এসপি অফিসসহ আদালতপাড়ার দিকে যেতে চেয়েছিল। সরকারি সম্পদ ও মানুষের জানমাল রক্ষায় পুলিশ সদস্যরা জীবনবাজি রেখে তাদের সঙ্গে লড়েছি। এতে আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, কারাগারে হামলা, অস্ত্র লুট, পুলিশ অ্যাসাল্ট ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পৃথক ৮টি মামলা হয়েছে।