শিরোনাম |
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে চলমান কারফিউ মধ্যে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের হাতে কোনো কাজ নেই। এ কারণে আয়ও বন্ধ। ফলে, সংসার চালানো নিয়ে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। নিয়মিত কাজ না হওয়ায় দিনমজুর পরিবার অর্ধাহারে- অনাহারে দিন পার করছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে যশোরের পুলেরহাট বাজারে দেখা যায়, ঝুঁড়ি-কোদাল নিয়ে দোকানের চরাটের ওপর বসে অলস সময় পার করছেন চার-পাঁচজন দিনমজুর। তাদের আয় সম্পর্কে জানতে চাইলে নিজাম উদ্দিন নামে একজন জানান, প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেল চালিয়ে সাড়াপোল থেকে পুলেরহাট বাজারে আসেন কাজের সন্ধানে। কিন্তু চলমান কারফিউয়ের কারণে চার-পাঁচদিন কোনো কাজ নেই। তার পরিবারে সাতজন সদস্য আছে। তিনি আয় করে চাল-ডাল কিনে নিয়ে গেলে বাড়িতে রান্না হয়। কিন্তু কারফিউয়ের কারণে কাজ না থাকায় তার পরিবারের সবাই অর্ধাহারে অনাহারে দিন পার করছে।
চাঁচড়া বাজারের দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালক বকুল সরদার জানান, চলমান কারফিউ ও সহিংসতার কারণে রাস্তায়
মানুষ বের হচ্ছেনা। তাই আগের মতো ভাড়া নেই। সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ৪০ টাকা আয় হয়েছে। পাঁচটা বাজলে আবার বাড়ি ফিরতে হে হবে। নারী শ্রমিক ফাতেমা খাতুন রাজমিস্ত্রির জোগালে হিসেবে কাজ করেন। কারফিউয়ের মধ্যে তার কাজ বন্ধ। এ জন্য তিনি মেয়ে ও নাতনিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তিনি বলেন, কারফিউয়ের প্রথম দিন কাজ করেছি। এ কয়দিন বসে আছি। যেদিন কাজ করেছি তার বিল এখনো পাননি। এ জন্য শহরে নতুন কোনো কাজের সন্ধান করছি।
এদিকে, যশোর শহরের বিভিন্ন ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে সংসার চলে শ' শ' মানুষের। মঙ্গলবার বিকেলে দড়াটানা মোড়, মুজিব সড়ক, রেল রোডের ফুটপাতগুলো ছিল ফাঁকা। মুজিব সড়কে রেডিমেড ফার্নিচারের দোকানগুলোও খোলেননি বিক্রেতারা। শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছে ফার্নিচারগুলো। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে সেগুলো নষ্ট হচ্ছে। ফুটপাতে বসে বিভিন্ন পোশাকের দোকান। অস্থায়ী ভ্যানে মাঝে মাঝে দোকান বসাচ্ছেন বিক্রেতারা। কারফিউ শিথিল হলে কমবেশি ক্রেতা পাচ্ছেন তারা। তবে, যা বিক্রি হচ্ছে তা দিয়ে সংসার চালানোর মত আয় হচ্ছেনা বলে জানান ফুটপাতের এসব বিক্রেতা। অন্যদিকে, গরিব শাহ সড়কে ফল, বাদাম, চটপটি-ফুচকার দোকানগুলো দিনের বেশিরভাগ সময় বসছে না দোকানির সংখ্যাও কম দেখা গেছে। কথা হয় ফল বিক্রেতা শরিফুলের সাথে। তিনি বলেন, বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছি। ফল যা কেনা ছিল তা পঁচে যাচ্ছে। বিক্রি না করতে না পারলে পুঁজি বাঁচবে না। এ কারণে কেনা দামেও বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।