শিরোনাম |
যশোর শহরের লোন অফিসপাড়া এলাকায় নয় শতক জমি নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এক জমি নিয়ে টানাটানি করছেন দু’মালিক। এরমধ্যে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আরেকজন সেখানে হাত বসিয়েছে। হাইকোর্ট ও যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্থিতি আদেশ উপেক্ষা করে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। কারফিউকে পুঁজি করে একদিকে কাজ চলছে,অন্যদিকে সময় অসময়ে চলছে অস্ত্রের মহড়া। এতে করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। এসব ঘটনায় মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়েছে। দ্রুত প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন এলাকার লোকজন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই জমি নিয়ে হাজি মোহাম্মদ মহসিন রোডের মিলনুর রহমান বাদী হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় মামলা করেন। মামলায় বিবাদী করা হয় বাঘারপাড়ার নাড়িকেলবাড়িয়া কানপুর গ্রামের সুমাইয়া খাতুন ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার অগ্নিবীণা সড়কের দক্ষিণ ব্যাপারিপাড়ার আমিরুল ইসলামকে।
বাদীর অভিযোগ, যশোর সদর উপজেলার বারান্দি মৌজার এসএ ১৩৭৩ নম্বর খতিয়ানের এসএ ৭৪৩ দাগের ৯ শতক জমির আরএস রেকর্ডিয় মালিক নন্দঘোষের সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগ্রাম মহকুমার জয়পুর মৌজার জমি বনগ্রাম সাবরেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে ১৯৬৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর ওই জমি বিনিময়ের মাধ্যমে মালিক হন মিলনুর রহমানের বাবা মৃত গোলাম মহিউদ্দীন বিশ্বাস। ওই জমি যশোর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর মাধ্যমে ১৯৭৪ সালে চুক্তিনামা হয়।
পরে বাদীর বাবা ওই জমি দখলে নিয়ে গাছ রোপণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর ওই জমি ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হন বাদী নিজে। তিনিও ওই জমি ভোগদখল করতে থাকেন। এরমধ্যে বাদী জানতে পারেন ওই জমি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কালেক্টরেট যশোরের পক্ষে আরএস জরিপে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে।
পরে বাদী এর বিপক্ষে যশোর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। যা গড়াই উচ্চ আদালত পর্যন্ত। হাইকোর্টের রায়ে ওই জমি বাদী নিজ নামে ফিরে পাওয়ার আদেশ পান। এরমধ্যে বিবাদী আমিরুল ওই জমি দখলে নিতে বাদীসহ তার ওয়ারিশদের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন দাখিল করেন।
উচ্চ আদালত গত ২৮ জানুয়ারি ওই রিট পিটিশন খারিজ করে দেন। একইসাথে স্থিতিবস্থার আদেশ দেন আদালত। এরমধ্যে গত ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ওই জমিতে বিবাদীসহ দেশীয় অস্ত্রসহ চার-পাঁচজন সন্ত্রাসী এনে ওই জমি দখল করে সেখানে নির্মাণ কাজ শুরু করে সুমাইয়া গং। পরে বিবাদীসহ স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদেরকে হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। এরপর আদালতে ১৪৪ ধারায় মামলা করা হলে আদালত শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় স্থিতিশীল থাকার আদেশ দেন। কিন্তু বিবাদীরা আদালতের নির্দেশ না মেনে কারফিউকে পুঁজি করে ওই জমি টিন দিয়ে ঘিরে নির্মাণ কাজ শুরু করে। মঙ্গলবার সরেজমিনে ওই জমিতে গিয়ে নির্মাণ কাজ চলার দৃশ্য দেখা যায়।
এ বিষয়ে বিবাদী সুমাইয়ার পক্ষে তার চাচা বলেন, ওই জমি আমিরুল ইসলামের কাছ থেকে তারা কিনেছেন। তাদের বৈধ কাগজপত্রও রয়েছে। সে হিসেবে তারা নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছেন।
এ সময় স্থানীয়রা জানান, ওই জমিকে কেন্দ্র করে দিনরাত এলাকায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে মহড়া। এতে করে তারা আতঙ্কিত। এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।