শিরোনাম |
❒ চতুর্থ দিনেও কড়া চেকপোস্ট অর্ধশত মোটরসাইকেল আটক
জনস্বার্থে সরকার ঘোষিত চতুর্থ দিনের কারফিউ কর্মসূচিতে যশোর শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও শহরের প্রবেশ পথে কড়া চেকপোস্ট কার্যক্রম চালিয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। সন্ধ্যা ৬ টা থেকে কঠোরভাবে কারফিউয়ের বিধি অনুযায়ী রাস্তায় আসা লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করা হয়েছে। যশোর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, শহরের প্রবেশ রাস্তাগুলোতে ব্যারিকেড দিয়ে চেকপোস্ট করার সময় কমপক্ষে অর্ধশত মোটরসাইকেল আটক করেছে ট্রাফিক বিভাগ।
গতকালও চলমান কারফিউয়ে পুলিশ বিজিবি র্যাবের টহল ছিল শহর ও শহরতীতে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কে সেনাবাহিনীর টহলও ছিল। এদিকে আজ সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যশোরে কারফিউ শিথিল করা হয়েছে বলে গতকাল সন্ধ্যায় দৈনিক গ্রামের কাগজকে জানিয়েছে যশোর জেলা প্রশাসন।
শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন কর্মসূচিতে প্রবেশ করে দেশদ্রোহী জঙ্গি চক্র ভাংচুর অগ্নিসংযোগসহ নানা নাশকতা করে দেশে ভয়ানক পরিবেশ তৈরি করার ঘটনায় গত শুক্রবার রাত ১২ টা থেকে জনস্বার্থে সারাদেশে জারি করা হয় কারফিউ। এরই অংশ হিসেবে যশোর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এই কারফিউ কর্মসূচি কার্যকর করছে। ২৩ জুলাই যশোরাঞ্চলের বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা গেছে কারফিউয়ের আওতার বাইরের সময় গতকাল দুপুর ১২ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত সময়টা বাদে যথাযথভাবে কারফিউ কার্যকর করতে শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এদিন সন্ধ্যায় যশোর শহরের দড়াটানা, জেনারেল হাসপাতাল মোড়, কেন্দ্রীয় কারাগার মোড়, গরবীশাহ রোডের বকুলতলা, আইনজীবী ভবন মোড়, চৌরাস্তা মোড়, চিত্রা মোড়, শহরের প্রবেশ পথ চাঁচড়া চেকপোস্ট মোড়, মণিহার মোড়, পালবাড়ি, খাজুরা স্ট্যান্ড, বাবলাতলা, ধর্মতলা, কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় কঠোর ব্যারিকেড চোখে পড়ে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ মোটরসাইকেল বা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় আসলেও তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে কারফিউয়ের আওতা বহির্ভূত হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যবাহী গাড়ি, ডাক্তার ও সংবাদপত্র সাংবাদিক বহনকারী গাড়িগুলোকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কারফিউ আওতার বাইরে জরুরি প্রয়োজনে কেউ বের হলে জিজ্ঞাসাবাদ চেকপোস্টের আওতায় পড়েছেন শ’ শ’ মানুষ।
গতকাল কারফিউ চলার সময় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অন্যান্য ইউনিটের সহায়তায় ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা যশোর শহরের বিমানবন্দর, শিক্ষা বোর্ড, যশোর জেনারেল হাসপাতাল, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, দড়াটানা, নিউমার্কেট, মণিহার এলাকা, চাঁচড়া চেকপোস্ট, ধর্মতলা, আরবপুর মোড়, পালবাড়ি ভাস্কার্য্যরে মোড়, মুজিব সড়ক, গাড়ীখানা রোড, এম. কে রোড, আর এন রোড, রেলরোড, সদর হাসপাতাল রোড, চিত্রামোড়, মণিহার মোড়, জর্জ কোর্ট মোড়, জেলখানা মোড়, কাঠেরপুল-বড়বাজার এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে অর্ধশত মোটরসাইকেল আটক করেছে।
এদিকে চলমান কারফিউয়ে যশোরের শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন দূর্বিপাকে। কাজে যেতে না পেরে উপার্জন করতে পারছেন না বলে মিডিয়া কর্মীদের কাছে জানিয়েছেন। তারা দেশের পরিস্থিতির দ্রুত উত্তরণ ঘটিয়ে কারফিউ শিথিল করার আহবান জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, আন্দোলনের নামে তারা নাশকতা আশা করেন না। আবার জীবন জীবীকার স্বার্থে কারফিউও তাদের কাম্য নয়। ঘোষিত কারফিউয়ের নিয়মনীতি মেনেই তারা ৪ দিন অতিবাহিত করেছেন। এখন কাজে যেতে চান। তাদের সংসার চললে আর কোথাও কোনো সমস্যা থাকার কথা নয় বলে জানান অনেক সাধারণ মানুষ। এ ব্যাপারে তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিও কামনা করেছেন।
কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় ও চলমান কারফিউয়ে বিগত কয়েকদিনের মত গতকালও যশোরাঞ্চলের জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও সরকারি বেসরকারি স্থাপনা ও জনবহুল এলাকায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারি চোখে পড়েছে। অতিরিক্ত ফোর্সও টহলে দেখা গেছে যশোরঞ্চলের বিভিন্ন স্পটে। পুলিশ ছাড়াও মাঠে অ্যাকশানে ছিল বিজিবি র্যাব ও সেনাবাহিনী।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার দৈনিক গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, আজ সকাল ৮ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যশোরে কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। এসময় সর্বসাধারণ সর্বাত্তকভাবে আজ ও চলাচল করতে পারবেন। জরুরি প্রয়োজনীয় কার্যাদি সারতে পারবেন। তবে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নজরদারিতে থাকবে গোটা জেলা।