gramerkagoj
রবিবার ● ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩ ভাদ্র ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
অভিনেতা ছবি বিশ্বসের জন্মদিন আজ
প্রকাশ : শনিবার, ১৩ জুলাই , ২০২৪, ১০:১৪:০০ এএম , আপডেট : শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ০৩:০৬:২৯ পিএম
বিনোদন ডেস্ক:
GK_2024-07-13_6691ff353eb34.jpg

ছবি বিশ্বাস একজন বিখ্যাত বাঙালি অভিনেতা। বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে একটি উজ্জ্বল নাম। বিভিন্ন সিনেমায় ছবি বিশ্বাস নানারকম ভুমিকায় অভিনয় করেছেন। এই অভিনেতার জন্মবার্ষিকী আজ।
ছবি বিশ্বাস ১৩ জুলাই, ১৯০০ সালে জ্জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ভূপতিনাথ বিশ্বাস। ছবি বিশ্বাসের আসল নাম শচীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। তাঁর যখন এক বছর বয়স তখন তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। মা আদর করে ডাকতেন ‘ছবি’ নামে। সেই নামটাই রয়ে গেল আজীবন। ছবি বিশ্বাসের পরিবার ছিল কলকাতা নিবাসি। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেছেন। একই সাথে অ্যামেচার থিয়েটারে অভিনয় করেছেন। শিশির ভাদুড়ি ও নরেশ মিত্রের মত বড় মাপের অভিনেতাদের সাথেও অভিনয় করেছেন।
ছবি বিশ্বাস ১৯৩৬ সালে অন্নপূর্ণার মন্দির চলচ্চিত্রে প্রথম চিত্রাভিনয় করেন। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় জলসাঘর, দেবী, কাঞ্চনজঙ্ঘা, তপন সিংহের পরিচালনায় কাবুলিওয়ালা (চলচ্চিত্র) এছাড়া প্রতিশ্রুতি, শুভদা, হেড মাস্টার উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি বহু বাণিজ্য সফল চলচ্চিত্রে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তিনি মূলত সাহেবী এবং রাশভারি ব্যক্তিত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য খ্যাতিলাভ করেন।
তিনি মঞ্চঅভিনয়েও বিখ্যাত ছিলেন। সমাজ, ধাত্রীপান্না, মীরকাশিম, দুইপুরুষ, বিজয়া প্রভৃতি নাটকে তার অভিনয় উল্লেখযোগ্য। ছবি বিশ্বাস প্রতিকার (১৯৪৪) এবং যার যেথা ঘর (১৯৪৯) ছবি দুটির পরিচালক ছিলেন।
তাঁর অভিনীত ছবিগুলো হচ্ছে- অন্নপূর্ণার মন্দির(১৯৩৬) - বিশু, চোখের বালি(১৯৩৮) - বিহারী, চাণক্য (১৯৩৯) - সিকান্দর, নিমাই সন্ন্যাসী(১৯৪০) - নিমাই, নর্তকী (১৯৪০) - স্বামীজী, প্রতিশ্রুতি (১৯৪১) - বিলাস, কর্ণার্জুন (১৯৪১) - কর্ণ, এপার ওপার(১৯৪১) - রমেন, সৌগন্ধ(১৯৪২), পাষাণ দেবতা(১৯৪২), মিলন (১৯৪২) - পরেশ, গরমিল (১৯৪২) - মুখার্জী, জীবন সঙ্গিনী(১৯৪২) - মি: চৌধুরী, সমাধান (১৯৪৩), দ্বন্দ (১৯৪৩), দিকশূল (১৯৪৩), দেবর (১৯৪৩) - রবীন, প্রতিকার (১৯৪৪), ছদ্মবেশী (১৯৪৪), মাটির ঘর (১৯৪৪) অলোক, রাজলক্ষ্মী (১৯৪৫), পথ বেঁধে দিল(১৯৪৫), বন্দিতা (১৯৪৫), দুই পুরুষ (১৯৪৫) - নুটুবিহারী, তুমি আর আমি(১৯৪৬), প্রেম কি দুনিয়া(১৯৪৬), মন্দির (১৯৪৬), বিরাজ বৌ(১৯৪৬) - নীলম্বর, অভিযোগ (১৯৪৭), চন্দ্রশেখর (১৯৪৭) - চন্দ্রশেখর, শেষ নিবেদন (১৯৪৮), সাধারণ মেয়ে (১৯৪৮), দৃষ্টিদান (১৯৪৮), অনির্বান (১৯৪৮), মঞ্জুর (১৯৪৯), বিদ্যাসাগর (১৯৫০), মানদণ্ড (১৯৫০), দুর্গেশ নন্দিনী (১৯৫১) - কাটলু খান, কার পাপে (১৯৫২) - ড: বোস, শুভদা (১৯৫২) - হারান চন্দ্র, লাখ টাকা (১৯৫৩), যোগ বিয়োগ (১৯৫৩), শেষের কবিতা(১৯৫৩), ষোড়শী (১৯৫৪) - জীবানন্দ চৌধুরী, সদানন্দের মেলা(১৯৫৪) - মামুভাই, ওরা থাকে ওধারে(১৯৫৪), যদুভট্ট(১৯৫৪), ছেলে কার (১৯৫৪), বিধিলিপি (১৯৫৪) - জগদীশ বাবু, উপহার (১৯৫৫) - সুনীলের বাবা, শ্রীবৎস চিন্তা (১৯৫৫), সবার উপরে(১৯৫৫), রানী রাসমনি (১৯৫৫) - রাজেন্দ্র দাস. দস্যু মোহন (১৯৫৫) - মি: সোম, ত্রিযামা (১৯৫৬) - কুশলের বাবা, শঙ্কর নারায়ন ব্যাঙ্ক(১৯৫৬), সাহেব বিবি গোলাম(১৯৫৬) - মেজোবাবু, পুত্রবধূ (১৯৫৬), পরাধীন (১৯৫৬), কাবুলিওয়ালা (১৯৫৬) - রেহমত, দানের মর্যাদা (১৯৫৬) - অমরনাথ, ভোলা মাস্টার (১৯৫৬) - ভোলা মাস্টার, অসবর্ণ (১৯৫৬), রাত ভোরে (১৯৫৬), সুরের পরশে (১৯৫৭), পৃথিবী আমারে চায়(১৯৫৭), পথে হল দেরি (১৯৫৭) - মল্লিকার বাবা, হরিশ্চন্দ্র (১৯৫৭), পরশ পাথর (১৯৫৮), জলসাঘর (১৯৫৮), তানসেন (১৯৫৮) - আকবর, অগ্নিসম্ভবা (১৯৫৯), গলি থেকে রাজপথ(১৯৫৯), শুন বরনারী (১৯৬০), স্মৃতিটুকু থাক (১৯৬০) - শোভার বাবা, মায়া মৃগ (১৯৬০), ক্ষুধিত পাষাণ (১৯৬০), হসপিটাল (১৯৬০), দেবী (১৯৬০) - কালীকিঙ্কর রায়, মানিক (১৯৬১), সপ্তপদী (১৯৬১) - কৃষ্ণেন্দুর বাবা, মা (১৯৬১), শুভ দৃষ্টি (১৯৬২), কাঞ্চনজঙ্ঘা (১৯৬২) - ইন্দ্রনাথ চৌধুরী, ধূপছায়া (১৯৬২), দাদা ঠাকুর (১৯৬২) - দাদা ঠাকুর, অতল জলের আহ্বান(১৯৬২) - মি: চৌধুরী।
১৯৫৬ সালে তপন সিংহ পরিচালিত ‘কাবুলিওয়ালা’ চলচ্চিত্রে কাবুলিওয়ালার চরিত্রে ছবি বিশ্বাসের অনবদ্য অভিনয় দর্শক কোনোদিন ভুলতে পারবেন না। এ ছবিতে তিনি যখন পাগড়ি ও জোব্বা পরে ‘হিং চাই হিং’ বলে পর্দায় আসেন কাবুলিওয়ালার বেশে এবং একরত্তি মেয়ে মিনির সঙ্গে গড়ে ওঠে তার সখ্য।
ছবির শেষে যখন গল্পটিতে দেখা যায় পিতৃহৃদয়ে কোথাও দেশভাগের কাঁটাতার নেই, তখন সেই বোধ জেগে ওঠে আমাদের হৃদয়ে। কান্নাহাসির দোলে আকুল বাঙালি সেই আফগান পুরুষের বেশধারী বাঙালি অভিনেতাটিকে আপন করে নেয়। প্রায় প্রতিটি ছবিতে তার অনবদ্য অভিনয়ের জন্য ১৯৫৯ সালে সংগীত নাটক আকাদেমি তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান জানায়।
ছবি বিশ্বাসের আরও একটি বৈশিষ্ট্য যে, তিনি আদ্যপান্ত নাগরিক, অর্থাৎ আরবান পিপল। পঞ্চাশের দশকে শহর কলকাতায় বিলেতি কেতাদুরস্ত বঙ্গীয় অভিজাতকুল কেমন ছিল, তার একটি নিখুঁত প্রতিচ্ছবি ছবি বিশ্বাস অভিনীত বিভিন্ন চরিত্র। স্যুট-টাই ও ধুতি-পাঞ্জাবি দুই বেশেই তিনি ঔপনিবেশিক বাংলার একটি চেহারাকে ধরে রেখেছেন।
একই সঙ্গে, একই শরীরে তিনি বহন করেছেন একটি বিলুপ্ত হয়ে আসা সময়ের দুরকম ছবি। ছবি বিশ্বাস। প্রকৃত নাম শচীন্দ্রনাথ। বাংলা চলচ্চিত্রের একজন বিখ্যাত বাঙালি অভিনেতা।
ছবি বিশ্বাস মোটরগাড়ি দুর্ঘটনায়, ১১ জুন ১৯৬২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ওইদিন তিনি অ্যাম্বাসাডরে চেপে যাচ্ছিলেন বারাসতের ছোট জাগুলিয়ার বাড়ি। নিজেই চালাচ্ছিলেন গাড়ি। মধ্যমগ্রামের কাছে গঙ্গানগরে ওল্ড যশোর রোডে উলটো দিক থেকে আসা ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আর.জি.কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝