শিরোনাম |
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় আবারও নদীর পানি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার রাতের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে এই মৌসুমের তৃতীয় বারের মতো বন্যার আশঙ্কা করছেন জেলাবাসী। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছেন ভারি বৃষ্টি হলেও বন্যার শঙ্কা নেই।
এদিকে গেল ১৬ জুন রবিবার রাতে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় এবং ১৭ জুন সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সুনামগঞ্জে।
জেলার ১২ টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। প্রথম বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় দফা বন্যা হয়।
জুন মাসের শেষ সপ্তাহে একটু স্বস্তির বার্তা পেলেও জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে অবিরাম বৃষ্টি শুরু হয়।
ফলে সুনামগঞ্জের লাখোলাখো মানুষের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জের সাথে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক পথে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
এর আগে দুই দফায় বন্যায় যান চলাচল বন্ধ ছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ২৬০ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও সুনামগঞ্জ জেলায় এরকম ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ৩৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। আবার সন্ধ্যা ৬টায় ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।
পানি বাড়ায় তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের শক্তিয়ারখলা অংশে মৌসুমের তৃতীয়বারের মতো পানিতে তলিয়েছে। এতে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রীরা এই অংশে ফেরি নৌকা করে পার হতে হচ্ছে। এই সড়কে তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর অংশেও পানি উঠেছে। তবে এই অংশে পানিতে স্রোত কম থাকায় যাত্রীরা হেটে পারাপার হতে পারছেন। অনেকে সিএনজি, মোটরসাইকেল ও অটোরিক্সা চালিয়ে পার হতে পারছেন।
এদিকে আবারও তাহিরপুরের থেকে বাণিজ্যিক এলাকা বাদাঘাটের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন হয়ে গেছে। সড়কের কোনো কোনো অংশে হাঁটু পানির উপরে, এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই সড়কের আশেপাশের বাসিন্দাদের।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মিপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবু তাহের বলেন, কয়েকদিন পরপর এই সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। আমরা চলাচল করতে অসুবিধায় পড়তে হয়। এই সড়ক দিয়ে তাহিরপুর সদর হাসপাতালেও যেতে হয়। জরুরী প্রয়োজনে হাসপাতালের রোগী নিয়ে নৌকা ছাড়া যাওয়া দায়।
সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুরে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন পিন্টু দাস। তিনি একটি ঔষধ কোম্পানিতে রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জরুরী প্রয়োজনে তাহিরপুরে যেতে হয়। তিনি বলেন, শক্তিয়ারখলা সড়কের ১০০ মিটার অংশে পানি। মোটর সাইকেল নিয়ে কয়েকঘন্টায় পার হতে পেরেছি। আনোয়ারপুর সড়কের উপরে পানি। এই কয়েক জায়গার পানি মাড়িয়ে তাহিরপুর যেতে হয়েছে। পরপর তিন দফায় বন্যায় আমরা ভিষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বললেন, তৃতীয় দফা বন্যার কোনো আশংকা নেই। আগামী ২৪ ঘন্টায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এরপরে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে।