শিরোনাম |
পাকা বাড়িতে নয়; কাঠফাটা রোদে একটু প্রশান্তি মেলে গাছ-তলাতেই। অথচ, মাথার ওপর ছায়া আর পাখিদের আশ্রয় দেওয়া পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাস্তা সংস্কারের নামে কেটে ফেলা হয়েছে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ টি তালগাছ ও খেজুর গাছ। উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর ফকিরের নির্দেশে ওই ইউনিয়নের মৌলভীতবক গ্রামের সড়কের পাশে থাকা গাছগুলো কেটে ফেলে স্থানীয়রা। সড়ক এলাকার সেসব গাছ এখন শূন্য হয়ে যাচ্ছে। একের পর এক কাটা পড়ছে ছায়া বৃক্ষ গুলো। এতে ছায়াবঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ, ঠিকানা হারাচ্ছে পাখ-পাখালি। গাছ কাটার এমন সিদ্ধান্ত কিংবা নিয়ম জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য হুমকির; বলছেন পরিবেশবিদরা।
সরজমিনে জানা যায়, প্রায় ২০ দিন আগে কাবিটা প্রকল্পের আওতায় ওই গ্রামের ২ কিলোমিটার সড়কে মাটি ফেলার কাজ করে চেয়ারম্যান। এর আগে তার নির্দেশে বাড়ীর সামনে সরকারী সড়কের উপরে থাকা গাছ গুলো স্থানীয়রা নির্বিচারে কেটে ফেলে। এছাড়া সড়কে মাটি ফেলার সময় ভেকু দিয়ে অনেক গাছ অপসারন করে খালে ফেলে দেয়া হয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী ও বজ্রপাত প্রতিরোধক এসব গাছ না কেটেও সড়কে মাটি ফেলার কাজ করা যেতো বলে দাবি স্থানীয়দের।
অসহনীয় গরমে যখন ‘গাছ লাগাও, পরিবেশ বাঁচাও’-বৃক্ষরোপণের জন্য এমন আওয়াজ উঠেছে; ঠিক সে সময়েই সামাজিক বনায়নের এসব গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহ চলা জুন মাস জুড়েই গাছ কাটা চলে।
মৌলভীতবক গ্রামের হারুন বলেন, দু’পাশের গাছগুলো সড়কে ছায়া দিত। এসব গাছের কোনটিই রাখা হচ্ছে না। ছোট-বড় সব গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। এই সড়কে গাছ থাকলে ছায়ায় চলাফেরা করতে পারতাম। গাছ না থাকার কারণে রোদের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। গরমে সড়কে চলাচল করতে পারছি না।’
ওই মৌলভীতবক ফারুক গ্রামের বলেন, ‘এই রাস্তায় যখন গাছ ছিল, ঠান্ডা বাতাস লাগত। গাছ কেটে ফেলতেছে, এখন রোদে চলা যায় না। পথচারীরা গাছের ছায়া পাচ্ছে না। গাছগুলোতে আশ্রয় নেওয়া পাখিগুলো আশ্রয় হারাচ্ছে। এই সড়কে শোনা যাবে না পাখির কিচিরমিচির শব্দ।’
সাবেক চেয়ারম্যান মো.হুমায়ুন কবির কেরামত মিয়া জানান, তালগাছ বজ্রপাত রক্ষায় সরকার লাগায়, সে রক্ষক হয়ে রাস্তা সংস্কারের নামে তালগাছ সহ আরো বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৬০ টির মতো গাছ কেটে ফেলে। এতে পরিবেসের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে।
চাকামাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর ফকির বলেন, তার বিরুদ্ধে অনিত অভিযোগ মিথ্যে, তিনি গাছকাটা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
উপকুলীয় বনবিভাগ পটুয়াখালীর দায়িত্বরত মো. সফিকুল ইসলাম জানান, রাস্তার কোন গাছ কাটতে হলে বন বিভাগ থেকে অনুমুদি নিতে হয়। কিন্তু কিভাবে অনুমতি ছাড়া রাস্তার গাছ কাটলো। গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী ও বজ্রপাত প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।