gramerkagoj
রবিবার ● ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
কুশিয়ারা নদীতে ধরা পড়ল ১১৫ কেজির বাঘাইড়
প্রকাশ : সোমবার, ৮ জুলাই , ২০২৪, ০২:৩৮:০০ পিএম , আপডেট : শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ০৩:০৬:২৯ পিএম
মৌলভীবাজার সংবাদদাতা:
GK_2024-07-08_668ba20a44434.jpg

মৌলভীবাজারের রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীতে বিশাল আকারের একটি বাঘাইড় মাছ ধরা পড়েছে। মাছটির ওজন ১১৫ কেজি। ধরা বা পরিবহন আইনিভাবে নিষিদ্ধ মহাবিপন্ন প্রজাতির বাঘাইড় মাছ বিক্রি করেছেন কয়েকজন মাছ বিক্রেতা। রোববার দুপুরের দিকে মৌলভীবাজার সদরের জেলা দায়রা জজ আদালতের সামনে বাঘ মাছটির দেখা মেলে।
মাছটি কেটে টুকরো টুকরো করে কেজিদরে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। বিলুপ্তপ্রায় এই মাছকে এভাবে প্রকাশ্যে বিক্রি করতে দেখে অবাক হয়েছেন কেউ কেউ।
মৌলভীবাজার শহরের দিন দুপুরে প্রকাশ্যে সবার সামনে মাছ বিক্রি করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ছিলো নির্বিকার। এনিয়ে শহরের সচেতন মহলে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন যে স্থানে মাছটি কেটে কেজি হিসেবে বিক্রি হয়েছে এরই পাশে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও অল্প কিছু দূরে বিভাগীয় বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় রয়েছে।
অনেকেই কাটা মাছের বিক্রির জন্য ভাগা করে রাখা মাছের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাঘাইড় মাছ জেলা শহরে প্রকাশ্যে মাইকিং করে বিক্রি হলেও সংশ্লিষ্টরা কর্তৃপক্ষের নীরবতা রহস্যময়। এরকম নানা মন্তব্যে লিখে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ৬ জন মাছ ব্যবসায়ী রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদী থেকে মাছটি ক্রয় করেন এক মাছ শিকারির কাছ থেকে। ওই শিকারির হাতে মাছটি রোববার সকালে ধরা পড়ে। মাছটি বিক্রি করা হলেও টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের।
নাম প্রকাশ না করে একজন মাছ বিক্রেতা জানান, তারা ৬ জন মিলে শিকারির কাছ থেকে বাঘাইড় মাছটি কিনে এনেছেন। শিকারি জীবিত মাছটির দাম হাঁকেন আড়াই লক্ষ টাকা। পরে তারা ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দিয়ে মাছটি ক্রয় করেন। বিশাল আকারের এ মাছটিকে কেটে কেজি দরে বিক্রি করেন তারা। প্রতি কেজি বাঘাইড় মাছ তারা বিক্রি করেন ১৩শ থেকে ১৫শ টাকা দরে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের ওই স্থান ও পশ্চিমবাজারসহ কুশিয়ারা নদী ছাড়াও জেলার অন্যান্য নদী তীরের বাজারগুলোতে প্রায়ই শিকার, পরিবহন ও বিক্রি নিষিদ্ধ মহাবিপন্ন বাঘাইড় মাছ বিক্রি করা হয়। কিন্তু শহরের পাশেই বিভাগীয় বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় কিন্তু তারা রহস্যজনক কারণে থাকেন নির্বিকার।
জানা যায়, মহাবিপন্ন প্রজাতির এই মাছ ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনত নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে আইনের তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের নাকের ডগায় হরদম চলছে বেচাকেনা। এবিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য আ.স.ম ছালেহ সুহেল বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় জেলা শহরে আইনীভাবে নিষিদ্ধ মহাবিপন্ন প্রজাতির এই বাঘাইড় মাছ বিক্রি করা হলো অথচ এরা গ্রেপ্তার হলোনা আইনি সাজাও পেলো না। এবিষয়ে জানতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো: জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার কল দিয়ে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কথা বলা যায়নি।
বন্যপ্রাণী রেঞ্জ মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদী সারোয়ার বলেন, আমরা অনেক দেরিতে জেনেছি। ততক্ষণে মাছটি বিক্রি হয়ে গেছে। আরও আগে খবর পেলে হয়ত সরেজমিন গিয়ে মাছটি বিক্রির জন্য সংশ্লিষ্টদের জরিমানা করা সম্ভব হতো।
বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর তফসিল অনুযায়ী বাঘাইড় (Gangetic Goonch) প্রজাতির এ মাছটি সংরক্ষিত। এ মাছটিকে কেউ কেউ ‘বাঘ মাছ’ বলেন। মাছটি ধরা, পাচার করা, হত্যা করা এবং খাওয়া আইনত দণ্ডনীয়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) বাংলাদেশ কর্তৃক এই প্রজাতিটি ‘মহাবিপন্ন’ হিসেবে ‘লাল’ তালিকাভুক্ত।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝