gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ৪ জুলাই ২০২৪ ২০ আষাঢ় ১৪৩১
gramerkagoj
পানিতে ডুবে গেছে সিলেট, ভোগান্তিতে নগরবাসী
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২ জুলাই , ২০২৪, ১১:৪২:০০ এ এম , আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই , ২০২৪, ১১:৩৫:৩৬ এ এম
সিলেট সংবাদদাতা:
GK_2024-07-02_66839152d0645.jpg

ভারী বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ডুবে গেছে সিলেট নগরী। অসংখ্য বাসা বাড়িতেও পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। রোববার (২ জুন) রাত ১২টা থেকে এ ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়।
নগরীর জামতলা, তোপখানা, তালতলা, মাছুমদিঘীরপার, কাজির বাজার, যতপুর, তেররতন, কালিঘাট, চালিবন্দর, উপশহর, মাছিমপুর, সোবহানীঘাট, পায়রা, শেখঘাটসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে রাস্তা ও বাসা বাড়ি প্লাবিত হয়।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সিলেটে গত রোববার (৩০ জুন) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ১৫৬.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর আগের ১২ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৩৯.৬ মিলিমিটার। একই সাথে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে রেকর্ড ৩১৩ মিলিমিটার। বুধবার (৩ জুলাই) পর্যন্ত আরও ৯৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বন্যা পরিস্থতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট সূত্রে জানা গেছে, এক মাস ধরে শুধু ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপরে ছিলো। কিন্তু সোমবার থেকে সিলেট ও চেরাপুঞ্জিতে টানা বৃষ্টির ফলে সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর একাধিক পয়েন্ট বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এছাড়া সিলেটের লুভা, সারি, ডাউকি নদী এবং ধলাই নদের পানি বাড়ছে।
গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় কুশিয়ারা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩.৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ১২.৭৫। কুশিয়ারার আমলশীদ পয়েন্টে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ১৫ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ১৫.৪০। কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ১০ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ৯.৪৫।
সারি নদীর পানি সোমবার থেকে সন্ধ্যা ৬টায় ১২.৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ১২.৩৫। এছাড়া সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টেও বাড়ছে পানি। এই পয়েন্ট বিপদসীমার নিচে থাকলেও সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ১০.৩৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ১০.৮০।
সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি চেরাপুঞ্জিতে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এটি অব্যাহত থাকলে সিলেট জুড়ে তৃতীয় দফা বন্যার মুখোমুখি হতে হবে আমাদের।’
এরইমধ্যে বৃষ্টিতে ফের নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিপাত হওয়ায় সোমবার নগরের কোনো এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়নি। কিন্তু সময় যত গড়ায় বৃষ্টিও তত বাড়ে। শেষ বিকেলে শুরু হয় অঝোর ধারায় বৃষ্টি। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এতেই নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অনেকে অলি-গলি ডুবে যায়। বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উঠে যায় পানি। এক মাসের মধ্যে তৃতীয় দফায় দুঃসহ যন্ত্রণার মুখোমুখি হন নগরের মানুষ। ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় নির্ঘুম রাত পার করেছেন বাসিন্দারা।
এদিকে, সুরমা নদীর পানি বাড়ায় গভীর শঙ্কায় আছেন নগরবাসী। নগরীর অনেক বাসিন্দা জানান, মে মাসের ২০ তারিখে ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় ঘর ছেড়ে স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। আবার এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে শুরু করেছে। এবারও হয়তো নতুন দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে।
নগরীর উপশহর, ভাতালিয়া, সুবহানীঘাট, শেখঘাট, কাজীরবাজার, তেররতন, জামতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছিল এবং আরো এলাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কার কথা জানান সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টরা।
এরইমধ্যে নগরীর উপশহরের বেশ কয়েকটি গলি পানি নিচে চলে গেছে। অনেকে নিচতলা ছেড়ে বাসার দ্বিতীয় তলায় অবস্থান নিচ্ছেন। নগরীর নিচু এলাকায় সুরমা নদীর পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

আরও খবর

🔝