gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৮ জুন ২০২৪ ১৩ আষাঢ় ১৪৩১
gramerkagoj
ভিজিএফের ২৬৪ বস্তা চাল বিক্রির অভিযোগ ৩ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
প্রকাশ : শুক্রবার, ২১ জুন , ২০২৪, ০৯:২৪:০০ পিএম
টিপু সুলতান, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ):
GK_2024-06-21_66759bca0da51.jpg

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্যে বরাদ্দ ভিজিএফের চাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের তিনজন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত ১৫ জুন বিকেলে এই চাল বিক্রি করা হয় মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারের একটি দোকানে। শুক্রবার (২১ জুন) সকালে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
গত ১৭ জুন ছিল পবিত্র ঈদুল আজহা। এর মাত্র দুইদিন আগে ১৫ জুন কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে চারটি শ্যালোইঞ্জিনচালিত নসিমনে (আঞ্চলিক যান) ২৬৪ বস্তা ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়া হয় মহেশপুরের খালিশপুর বাজারে। প্রতিটি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল ছিল। বস্তাগুলোতে খাদ্য অধিদপ্তরের স্টিকার মারা রয়েছে। এসব যানের একটির চালকের কাছে তিনটি বিলি আদেশ (ডিও লেটার) পাওয়া গেছে।
ডিও লেটারে কালীগঞ্জ উপজেলার চার নম্বর নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর, ছয় নম্বর ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম রিতু হিজড়া এবং আট নম্বর মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের নামে বরাদ্দ চাল উল্লেখ রয়েছে। গত ১২ জুন এসব চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং এর মেয়াদ ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। যার বিলি আদেশ (ডিও) নম্বর ৮০০৮৭০০। ক্ষমতা দানকারি সিডিভি/আইআর/এস এ ও নম্বর ৫১৯/১১.৬.২৪ তারিখ। অপরদিকে অথোরিটি/সিডিভি/আইআর/এস ও নং ২৪/২৮৫ তারিখ ৩০/৫/২৪।
এরমধ্যে চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্করের জন্য ২.৫ মেট্রিক টন, চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার জন্য ৩ মেট্রিক টন ও আজিজুর রহমান খানের জন্য ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিলি আদেশে আরও উল্লেখ রয়েছে চার নম্বর গুদাম থেকে এবং ২৩ নম্বর খামাল থেকে এই চাল প্রদান করা হয়। যার এল ইউ এ নম্বর ৭১০৭২১১, তারিখ ১৪/৬/২০২৪। নজরুল জিড়ার বিলি আদেশ (ডি ও) ৮০০৭০১ এবং আজিজুর রহমান খানের বিলি আদেশ (ডি ও) নম্বর ৭০০৭০৪।
কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে বের হওয়া এ চাল অতিদরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের। ঈদের আগে এসব চাল গরীব মানুষদের দেওয়ার কথা। যে কারণে চেয়ারম্যানদের অনুকুলে এগুলো বরাদ্দ হয়েছিল।
ভিডিওতে একটি নসিমনের চালককে বলতে শোনা যায়, ‘কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে চাল নিয়ে মহেশপুর উপজেলা খালিশপুর বাজারের দীপু দাদার দোকানে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার গাড়িটাই শেষ। এর আগে তিন গাড়ি গিয়েছে। মোট চার গাড়ি চাল বেরিয়েছে। প্রতি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল’।
ভিডিও ধারণ করা যুবক রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন, ‘গত শনিবার (১৫ জুন) বিকেল ৫টার দিকে সরকারি ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি ধারণ করি। চারটি গাড়িতে এ চাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের এ চাল না দিয়ে বিক্রি করা হয়েছে’।
চার নম্বর নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানিনা। খোঁজ নিচ্ছি।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মুঠোফোনে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার কাছে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘ফোনে আমি কিছুই বলবো না। আপনি সরাসরি ইউনিয়নে আসলে সব বলবো।’
মালিয়াট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।
কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহদী হাসান শিহাব বলেন, ‘গত ১৫ জুন সরকারি বরাদ্দের চাল গুদাম থেকে দেওয়া হয়েছে। ডিও লেটার দেখালে আমরা চাল প্রদান করি। এখন এই চাল কে কোথায় বিক্রি করেছে সেটা আমি জানি না’।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। তবে সেটি ভিজিএফ না অন্য কোনো বরাদ্দের চাল কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আরও খবর

🔝