শিরোনাম |
অনেক দিন হয় কেউ যত্ন করে খাওয়ায় না। জয়তীতে আসলে সবাই ভালোবেসে খেতে দেয়, ঈদে উপহার দেয়, শীতে কম্বল দেয়। কথাগুলো বলছিলেন যশোর শহরের রেল রোড এলাকার পঁচাত্তরোর্ধ মনোয়ারা বেগম।
শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলা এলাকার সত্তরোর্ধ সুফিয়া বেগম বলেন, তিন বছর ধরে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে জয়তী সোসাইটিতে আসি। এখানে সবাই অনেক ভালোবাসে। নিজের বাড়ির মতো মনে হয়। বৃদ্ধা জেসমিন বেগম ফল খেতে খেতে বলেন, সারাজীবন সবাইকে দেখাশোনা করে আসলেও, এখন তাকে দেখার কেউ নেই। জয়তীতে আসলে ভালোলাগে। এখানে সবাই অনেক মায়া করে, অনেক ভালোবাসে।
নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতির এ সময়ে যখন দু-বেলা দু’মুঠো খাবার জোটানো যখন কষ্টসাধ্য, তখন ফল কিনে খাওয়া সাধারণ মানুষের কাছে এক চরম বিলাসিতা। মধু মাস জৈষ্ঠ, ফলের মৌসুম। তবে চড়া দামের কারনে তা ওঠে না দরিদ্র মানুষের বাজারের ব্যাগে। ঠিক সে সময়ে জয়তী সোসাইটি যশোর মঙ্গলবার নিজস্ব মিলনায়তনে ৬০ উর্ধ্ব মায়েদের জন্য আয়োজন করে ফল উৎসব। সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের মধ্যই মায়েরা আসেন দলে দলে। হরেক রকম ফল দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হয়। প্লেটে আম, কাঁঠাল, কলা, দই, চিড়া, মুড়ি, খই সাজিয়ে পরম যত্নে তা খাওয়ানো হয় বৃদ্ধা মায়েদের। পরিবারের কাছে অবহেলিত এসব মায়েদের মুখে হাসি ফুঁটে ওঠে। কিছু সময়ের জন্য হলেও আনন্দে উদ্বেলিত হন মায়েরা। জয়তী সোসাইটি মিলনায়তন তখন শতাধিক মায়েদের বিশাল এক পরিবারে পরিণত হয়।
ফল উৎসব অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ৬০ উর্ধ্ব নারীসেবা কর্মসূচির সভাপতি নুরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন লেডিস ক্লাবের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদারের সহধর্মীনি নুসরাত সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি খালেদা খাতুন রেখা, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন, দৈনিক স্পন্দনের নির্বাহী সম্পাদক মাহবুব আলম লাভলু।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, জয়তী সোসাইটির পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস, জয়তী সোসাইটির সভাপতি কাজী লুৎফুন্নেসা। উপস্থিত ছিলেন ৬০ উর্ধ্ব নারীসেবা কর্মসূচির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সালেহা বেগম, দাতা সদস্য নার্গিস বেগম, সালেহা খাতুন, জাহিদুর রহমান গোলদার, সাইফুজ্জামান মজু, ফিরোজ খান, ডা. আহসান কবির, মমতাজ আহসান, সমাজসেবক ফাতেমা বেগমসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জয়তী সোসাইটির ইউনিট ম্যানেজার বর্ণালী সরকার।