gramerkagoj
শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ কোন পথে আনার হত্যা তদন্ত?

কলকাতায় সিয়ামকে নিয়ে অভিযান, খালে মিলল ‘হাড়’
প্রকাশ : সোমবার, ১০ জুন , ২০২৪, ১২:০১:০০ এএম , আপডেট : শুক্রবার, ২৬ জুলাই , ২০২৪, ০৫:০৭:৪৭ পিএম
কাগজ ডেস্ক:
GK_2024-06-09_6665bc0bce53a.webp

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় আসামি সিয়াম হোসেনকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বাগজোলা খালে তল্লাশি চালিয়েছে সেখানকার গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু হাড়।
আসামি সিয়ামের দাবি, এসব হাড় খুন হওয়া এমপি আনারের। এ হাড় উদ্ধারের পর সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, এমপি আনার হত্যার তদন্ত কোন পথে এগুচ্ছে? এর আগে মাংস উদ্ধারের ঘটনায় যে রহস্যের উন্মোচন দাবি করা হয়েছিলো, তারপর হাড় উদ্ধারে নতুন করে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার সকালে গ্রেপ্তার সিয়ামকে নিয়ে ভাঙড়ের সাতুলিয়া এলাকার বাগজোলা খালে তল্লাশি চালানো হয়। অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে ছিল ভারতীয় নৌবাহিনী, কোস্টাল বাহিনী, কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলা টিম।
সিয়ামের দেখানো জায়গায় তল্লাশি চালায় সমন্বিত বাহিনী। এসময় খালে বেশ কিছু হাড় পাওয়া যায়। সিয়ামের দাবি, এগুলো আনারের শরীরের হাড়। যদিও এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত নয় গোয়েন্দা পুলিশ। তারা জানিয়েছে, হাড় কার সেটা জানতে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে।
এর আগে ওই হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার আরেক আসামি জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, এমপি আনার হত্যায় মাংসের অংশ সরিয়ে ফেলার দায়িত্ব তার ওপর ছিল। হাড় সরিয়ে ফেলার দায়িত্ব ছিল সিয়ামের ওপর। তবে ততক্ষণে সিয়াম নেপালে চলে যান। তাকে জালে আনতে ভারত ও বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা নেপালে জোর তল্লাশি চালান।
এদিকে, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশে অপহরণের মামলায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। শুনানি শেষে বিচারক তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এর আগে গত ৬ জুন রাতে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক নিয়ে যায় ঢাকা থেকে আসা ডিবির একটি দল।
এ মামলায় ৩ জুন আসামি শিলাস্তি রহমান, ৪ জুন তানভীর ভূঁইয়া এবং ৫ জুন সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গত ২৪ মে তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন অপর একটি আদালত।
গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারুল আজীম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। গত ১১ মে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন কল দিলেও বন্ধ পাই।
গত ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন (ফোন কল) দেওয়ার দরকার নেই। আমি পরে ফোন (ফোন কল) দেব। ’
এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। ক্ষুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা দিয়ে থাকতে পারে।
অপরদিকে, ৭ জুন পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি জানায়, সিয়াম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৮ জুন তাকে তোলা হয় বারাসাত কোর্টে। বিচারকের নির্দেশে, ১৪ দিন তাকে রিমান্ডে পায় সিআইডি। তারপরই এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আগামী ২২ জুন সিয়ামকে আবার বারাসাত আদালতে তোলা হবে।
আদালতের সরকারি সহকারী আইনজীবী (অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটার) মন্দাক্রান্তা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, এমপি আনারের দেহাংশ উদ্ধার এবং হত্যা করতে যেই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, সেসব উদ্ধারের জন্যই সিয়ামকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাকে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী ৩৬৪, ৩০২, ২০১, ৩৪ ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি ১২০ বি ধারাও দেওয়া হবে।
এর মধ্যে ৩৬৪- হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ, ৩০২- অপরাধমূলক নরহত্যা, ২০১- তথ্য লোপাট অর্থাৎ অস্ত্র ও মরদেহ পরিকল্পনা করে সরিয়ে ফেলা, ৩৪-একত্রে ষড়যন্ত্র এবং ১২০বি- অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র (একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে) রয়েছে। এ ধরনের মামলায় সর্বোচ্চ রায় হিসেবে বিচারক আমৃত্যু যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড দিতে পারেন।

আরও খবর

🔝