gramerkagoj
রবিবার ● ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
সাপ আতঙ্কে নষ্ট হচ্ছে চরাঞ্চলের ধান
প্রকাশ : শুক্রবার, ৩১ মে , ২০২৪, ০১:১৬:০০ পিএম , আপডেট : শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ০৪:২৬:৪৪ পিএম
রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
GK_2024-05-31_6659751f82eed.jpg

বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের ভয়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা জমি থেকে ফসল তুলতে ভয় পাচ্ছেন। এ অঞ্চলে বিষধর এই সাপের উপদ্রব অনেক বেড়ে গেছে। ফলে চরাঞ্চলবাসীর দিন কাটছে আতঙ্কে মধ্যে। এ সাপের কামড়ে গত দেড় মাসে তিন কৃষকের মৃত্যুও হয়েছিল। সাপের ভয়ে কাটতে না পেরে এমতাবস্থায় মাঠে ধান নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের চর মজলিশপুর, মহিদাপুর, দেবীপুর, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর করনেশনা, আংকের শেখের পাড়াসহ চরাঞ্চলে সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে।
মজলিশপুর এলাকার মাতুব্বর আজিজুল মোল্লা জানান, গত সোমবার দুপুরে মাঠে কাজ করার সময় কৃষক শামীম শেখসহ কয়েকজন পদ্মা নদী থেকে একটি নৌকা টেনে তীরে তুলছিলেন। নৌকার নিচে থাকা রাসেল ভাইপার সাপ শামীমের পায়ে কামড় দেয়। লোকজন সাপটি মেরে তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরদিন বিকেলে শামীম মারা যান। এরপর গত বুধবার ধান কাটার সময় কৃষকরা আরেকটি রাসেলস ভাইপার পিটিয়ে মারেন। এখন ভয়ে কেউ জমিতে নামতে ও চরে যেতে সাহস পাচ্ছে না।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত ৮ এপ্রিল চর মজলিশপুর এলাকায় জমি থেকে ভুট্টা তোলার সময় সাঈদুল শেখ নামের এক কৃষককে সাপে কামড় দেয়। প্রথমে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সপ্তাহ পর তিনি মারা যান। তার আগে ২৯ মার্চ চর দেবীপুর মাঠে ময়না বেগম নামের এক কিষানিকে সাপে কামড়ায়। চিকিৎসা নেওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পর নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান।
গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শেখ রাসেল মাহমুদ বলেন, পুরো চরাঞ্চলজুড়ে রাসেলস ভাইপার সাপের কারণে কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ জমিতে যেতে চাচ্ছে না এবং ধান, ভুট্টা কাটতে শ্রমিকও পাচ্ছে না। মাঝেমধ্যে কৃষকরা সাপ দেখে পিটিয়ে মেরে ফেলে মাটিতে পুঁতে ফেলছেন। প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, কৃষকরা মাঠে কাজ করতে গিয়ে রাসেলস ভাইপার সাপের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। ইতোমধ্যে তিনজন কৃষক মারা গেছেন। এখন ভয়ে কেউ জমিতে যেতে চাচ্ছে না। এ কারণে মাঠে এখনো ধান ও ভুট্টা পড়ে আছে। এতে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফারসিম তারান্নুম হক বলেন, গত মার্চ মাসে একজন, এপ্রিলে একজন ও মে মাসে দুজন সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। মাঝেমধ্যে সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে আসছে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে কেউ মারা যায়নি। তাছাড়া আমাদের হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাপে কাটা রোগী বা পরিবারের কেউ আতঙ্কিত না হয়ে রোগীকে ওঝার কাছে না নিয়ে সরাসরি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হবে। সাপে কাটার পর সময়মতো চিকিৎসা দিতে পারলে রোগী বেঁচে যাবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো খোকনউজ্জামান কৃষকদের ধান কাটার সময় আগে লাঠি দিয়ে ধানগাছ নড়াচড়া করে নিশ্চিত হয়ে সতর্কতার সঙ্গে ধান কাটার পরামর্শ দেন। একইভাবে বিশেষ ধরনের জুতা পরে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, সাম্প্রতিক সময়ে রাসেলস ভাইপারের মতো বিষধর সাপের উপদ্রব বাড়ায় তারা চিন্তিত। উপজেলা পরিষদ থেকে প্রথম অবস্থায় চরাঞ্চলের ১০০ জন কৃষককে গামবুট জুতা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে শ্রমিকদের মধ্যেও বিতরণ করা হবে।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝