gramerkagoj
শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ অনিয়ম অসঙ্গতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ

জিডিএল হাসপাতাল পরিচালক নুরুজ্জামানের দৌড়ঝাঁপ
প্রকাশ : সোমবার, ২৭ মে , ২০২৪, ১২:০৩:০০ এএম , আপডেট : শুক্রবার, ২৬ জুলাই , ২০২৪, ০৫:০৭:৪৭ পিএম
বিশেষ প্রতিনিধি:
GK_2024-05-26_6653579f7203e.jfif

যশোর শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল সড়কের পাশের ২০ শয্যার জিডিএল প্রাইভেট হাসপাতাল ঘিরে নানা অনিয়ম অসঙ্গতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। রীতিমত বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ করছেন পরিচালক নুরুজ্জামান। দৈনিক গ্রামের কাগজে হাসপাতালের ভেতরের খবর গেল কিভাবে এ নিয়ে কয়েকজন স্টাফকে দুষছেন নুরুজ্জামান।
এছাড়া সাবেক এক স্টাফ ও অনেক অনিয়মের প্রতিবাদকারী বদর উদ্দিনের বাসায় লোক পাঠিয়ে দেনদরবার করেছেন নুরুজ্জামান। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, দ্রুতই মোবাইলকোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হবে ওই বিতর্কিত হাসপাতালে।
বাইরে ঠাঁটবাট আর ভেতরে একেবারে ফাঁকা মাঠের মত অবস্থায় চলা জিডিএল হাসপাতাল ঘিরে দৈনিক গ্রামের কাগজে সংবাদ প্রকাশিত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নানা বিধি উপেক্ষা করে চলছে হাসপাতালটিতে। ৬ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও এখানে মাত্র দুই জন ডাক্তার রাখা হয়েছে। তাও একজন অনিয়মিত খন্ডকালীন। ১২ জন নার্সের প্রয়োজন হলেও মাত্র ৩ জন ডিপ্লোমা নার্স দিয়ে চালানো হচ্ছে। হাসপাতালে একজন কনসালট্যান্ট নিয়োগ থাকা বাধ্যতামূলক হলেও তা নেই। নিম্নমানের কোম্পানির ওষুধ রেখে চালানো হচ্ছে হাসপাতালের ফার্মেসি। ডাক্তার ভাল ওষুধ লিখলেও উচ্চ দামে ফার্মেসি থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে নিম্ন মানের ওষুধ। অপারেশন থিয়েটার নিয়েও রয়েছে নানা অসঙ্গতি। অপচিকিৎসায় একজন নারীর মৃত্যু হওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে। ওই ঘটনায় অর্থদন্ড দিয়ে ঘটনা মিটিয়েছে মালিক পক্ষ। চিকিৎসা সেবার নামে এখানে চলা নানা প্রতারণার বিষয় সংবাদে প্রকাশিত হয়।
বিগত প্রায় অর্ধযুগ ধরে নানামুখি প্রতারণার কারবার চালিয়ে যাওয়া জিডিএল হাসপাতালের প্রধান পার্টনার পরিচালক নুরুজ্জামান ব্যক্তি জীবনে কয়েকটি মামলার আসামি। তার কর্মকান্ডে সহযোগী ব্যবস্থাপক আবু সালেহ ওবায়দুল্লাহ মণিরামপুর উপজেলা শাখার একটি রাজনৈতিক দলের বড় পদধারী ও কয়েকটি মামলার আসামি। হাসপাতালে বিধি মোতাবেক ডাক্তার ও ডিপ্লোমা নার্স না রেখে, প্রয়োজনীয় পরিছন্ন কর্মী না রেখে ও শর্তাবলী বাস্তবায়ন না করে যথেচ্ছা চালিয়ে যাচ্ছেন এই দ্ইু ব্যক্তি।
জিডিএল হাসপাতালে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চলা একটি ফার্মেসিতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নয় ছয়। পরিচালক নুরুজ্জামানের দুই শ্যালক সাইফুল ও নাজমুলকে ফার্মেসিতে বসিয়ে যতসব অখ্যাত কোম্পানির ওষুধ বিক্রি করছে চড়া দামে। ডাক্তার যে মেডিসিন লেখেন তা না দিয়ে অন্য নরম্যাল কোম্পানির মেডিসিন দেয়া হয় এই ফার্মেসি থেকে। এখানে যে ভর্তি রোগীর অপারেশন হয় সেসব রোগীর মেডিসিন এখান থেকে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এসব নিয়ে সংবাদে তথ্য দেয়া হয়।
কিন্তু বস্তুনিষ্ঠ সংবাটি প্রকাশের পর ফুঁসে উঠেছেন পরিচালক নুরুজ্জমান। পত্রিকা দপ্তরে প্রতিষ্ঠানের এতসব তথ্য গেল কীভাবে এ নিয়ে তিনি কয়েকজন স্টাফকে দুষছেন। এ নিয়ে কয়েক স্টাফের সাথে তিনি ঝগড়া বিবাদও করেছেন। আর ঘটনা চাপিয়ে দিতে ও তার প্রতিষ্ঠানের দিকে খেয়াল রাখতে এবং যাতে মোবাইলকোর্ট অভিযান না চালানো হয় সেজন্য সিএস অফিসেও দৌড়ঝাপ করছেন বলে তথ্য মিলেছে। তার সাবেক স্টাফ বদর উদ্দিনের বাড়িতে পাঠিয়েছেন তপসীডাঙ্গার আতিক নামে একজনকে। আতিককে দিয়ে বদর উদ্দিনের কাছে দেনদরবারও করিয়েছেন। বদর উদ্দিনের চাকরি ফিরিয়ে দেবে বলেও জানিয়ে এসেছেন।
এদিকে, স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, পত্রিকার সংবাদটি সিভিল সার্জন অফিসের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিশেষ করে যশোরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক রাসেল এ হাসপাতালের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন। জিডিএল এর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আসছে সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের সেবা নিতে গিয়ে যারা অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন সে ব্যাপারেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। দ্রুতই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আরও খবর

🔝