gramerkagoj
বুধবার ● ২২ মে ২০২৪ ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
gramerkagoj
শিরোনাম
শিরোনাম চৌগাছায় হাবিব, ঝিকরগাছায় মনিরুল ও শার্শায় সোহরাব চেয়াম্যান নির্বাচিত আশাশুনিতে মোস্তাকিম, তালায় সনত ও দেবহাটায় আলফা চেয়ারম্যান হলেন ফকিরহাটে বাবু, চিতলমারীতে আলমগীর ও মোল্লাহাটে ছানা চেয়ারম্যান নির্বাচিত ফুলতলায় চেয়ারম্যান হলেন আকরাম, তেরখাদায় হাসান ও দিঘলিয়ায় মারুফুল ঝিকরগাছায় সাংবাদিক ইমরান সর্বোচ্চ ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত আফগানিস্তানের বোলিং পরামর্শক ব্রাভো ধান শুকাতে গিয়ে হাই ভোল্টের তারে জড়িয়ে প্রাণ গেল গৃহবধূর শার্শা উপজেলায় চেয়ারম্যান সোহরাব, ভাইস চেয়ারম্যান রহিম ও শামীমা দ্বিতীয় ধাপে ভোট পড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি: সিইসি চৌগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান হাবিব, ভাইস চেয়ারম্যান শামীম ও নাসিমা

❒ নওদাগ্রামে বৃদ্ধাকে পিটিয়েও প্রকাশ্যে অভিযুক্ত

৯৯৯ কে উদ্দেশ্যে করে ফাঁড়ির দারোগা নজরুলের গালিগালাজ
প্রকাশ : বুধবার, ১ মে , ২০২৪, ০৯:৩৬:০০ এ এম , আপডেট : মঙ্গলবার, ২১ মে , ২০২৪, ০১:৪৩:৩১ পিএম
বিশেষ প্রতিনিধি:
GK_2024-04-30_6630d7d13fa59.jpg

বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য চালু থাকা জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ কে উদ্দেশ্যে করে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেছেন যশোরের তালবাড়িয়া ফাঁড়ির দারোগা নজরুল ইসলাম। ২৭ এপ্রিল রাতে যশোরের নওদা গ্রামের মমিন নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে জনসম্মুখে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেছেন বলে অভিযোাগ।
এখানেই শেষ নয়, ৯৯৯ এ কল দেয়ায় মারপিটের শিকার অনিমা কুন্ডু নামে ভুক্তভোগী এক বৃদ্ধাকেও তিনি গালিগালাজ করেছেন। এছাড়া ভুক্তভোগী বৃদ্ধা ও তার মেয়েকে বেদম প্রহার করে অভিযুক্ত টিপু মল্লিককে আটক না করে চলে এসেছেন। কান্না বিজড়িত কণ্ঠে ওই বৃদ্ধা এসব অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া ডাকাতিয়া ও নওদাগ্রামের লোকজনও ওই দারোগার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। যদিও দারোগা নজরুল ইসলামের ইউনিট ইনচার্জ তালবাড়িয়া ফাঁড়ির এসআই একরামুল হুদা জনিয়েছেন, ওই ঘটনা ঘটলে তা খুবই দুঃখজনক, এ ব্যাপারে তিনি খোঁজখবর নিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী ও একাধিক সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, যশোর সদর উপজেলার নুরপুর গ্রামের বিধবা অনিমা কুন্ডু (৭০) তার মেয়ে রিক্তার উপর নির্যাতন চলছে সংবাদে ২৭ এপ্রিল রাতে তার জামাই বাড়ি পালবাড়ি গাজীরঘাট রোডের বিহারী ক্যাম্প এলাকায় বেড়াতে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন মেয়ে রিক্তাকে আটকে জামাই টিপু মল্লিক মারপিট করছে। আর মেয়ের শ্বশুর দিলিপ মল্লিকসহ ওই পরিবারের লোকজন মারপিট দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন। বৃদ্ধা শাশুড়ি আকুতি করে মেয়েকে মারপিট বন্ধ করতে বললে উল্টো তার সামনেই মেয়ের মাথা ধরে দেয়ালের সাথে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় বৃদ্ধা চিৎকার করলে জামাই টিপু তাকেও বেদম মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এসময় বৃদ্ধা নুরপুর ডাকাতিয়ায় ফিরে হা হুতাশ ও আর্তনাদ করতে থাকেন। এসময় স্থানীয় সমাজকর্মী মোজাম্মেল হোসেন তাকে জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ এ ফোন করতে বলেন। কিন্তু বৃদ্ধা গুছিয়ে ঠিককম কথা বলতে না পারায় তার পক্ষে মোজাম্মেল হোসেন সোহাগ তাৎক্ষণিকভাবে ট্রিপল নাইনে ফোন করে দেন। ট্রিপল নাইন থেকে তাকে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় কথা বলিয়ে দেন। থানার ডিউটি অফিসার বিষয়টি ভালোভাবে শুনে এবং বুঝে তালবাড়িয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচাজ একরামুল হুদার উপর ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব দেন। কিন্তু প্রথমে ঘটনাস্থলে না এসে তালবাড়িয়া ফাঁড়ি থেকে জানানো হয় থানায় অভিযোগ করতে। কিন্তু স্থানীয়রা বৃদ্ধার কোনো অভিভাবক তেমন নেই জানালে এক পর্যায়ে ইনচার্জ একরামুল হুদা ঘটনাস্থলে এএসআই নজরুল ইসলামকে পাঠান। এএসআই নজরুল ইসলাম মমিন নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এসে ভুক্তভোগী অনিমা কুন্ডুর সাথে দেখা করেন। দেখা করেই অনিমা কুন্ডুকে প্রথমে গালিগালাজ শুরু করেন। জানতে চান ‘৯৯৯ নম্বরে কল করেছেন কেন? পুলিশকে কি পেয়েছেন আপনারা?’ আরো কিছু কটুক্তি করে বৃদ্ধাকে চরমভাবে লাঞ্ছিত করেন এএসআই নজরুল ইসলাম। এসময় লোকজনের সামনে তিনি ট্রিপল নাইন নিয়েও অকথ্য ভাষায় গালিাগালাজ করেন।
একদিকে অভিযুক্ত জামাইয়ের বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে মেয়ে, আর রাস্তায় ভুক্তভোগী বৃদ্ধাকে বিষদগারে সময় কাটান এএসআই নজরুল। তিনি কেন রাতে ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়েছেন! যেনো তিনি মহা অন্যায় করেছেন! এক পর্যায়ে বৃদ্ধার আকুতি এবং কান্নাকাটি দেখে ভুক্তভোগী অনিমা কুন্ডুকে নিয়ে জামাই টিপুর বাড়ির উদ্দেশ্যে গেলেও ওই বাড়ি পর্যন্ত যাননি। ঘটনাস্থলে না গিয়ে বিহারী ক্যাম্পের মোড়ের একটি চায়ের দোকানে বসে ভুক্তভোগী অনিমা কুন্ডুর মেয়ে জামাই ও পরিবারের লোকজনকে ডাকেন। ভুক্তভোগী অনিমা কুন্ডুর মেয়ে রিক্তা মল্লিকের জখম ঘটনা, বৃদ্ধা শাশুড়িকে মারপিট ঘটনায় টিপু অভিযুক্ত হলেও গুরুত্বই দেননি নজরুল ইসলাম। শাশুড়িকে বেদম মারপিট ও মেয়ে রিক্তা মল্লিকের মাথা ফাটানো অবস্থা এএসআই নজরুলকে দেখানো হলেও তিনি রহস্যজনক ভূমিকা পালন করেন। লোক দেখানোর মত জামাইকে শাশুড়ির কাছে ক্ষমা চাইয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বৃদ্ধা অনিমা কুন্ডু কান্নায় ভেঙে পড়ে অভিযোগ করেছেন, তিনি গরীব অসহায়, তাই রীতিমত ন্যায় বিচার বঞ্চিত হচ্ছেন। রাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করায় দারোগা তার উপর রাগান্বিত হয়েছেন। তার সাথে গেলেও মহাপাপি জামাইয়ের পক্ষ নিয়ে শুধু মাপ চাইয়ে চলে এসেছেন। তাকে আটক না করে চলে এসেছেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এর আগেও তার জামাই টিপুর অত্যাচারে তার প্রথম বউ পালিয়ে জীবন বাঁচিয়েছেন। আর এখন মা মেয়ে একসাথে জামাই রুপি সন্ত্রাসী টিপুর নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তিনি টিপুর আটক ও ৯৯৯ নম্বরকে কটুক্তি ও গালিগালাজ করা দারোগা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন পুলিশ সুপারের কাছে।
এ ব্যাপারে তালবাড়িয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ একরামুল হুদার সাথে কথা বললে তিনি জানিয়েছেন নজরুল ইসলামকে তিনিই ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলেন। ৯৯৯ একটি জাতীয় জরুরি সেবার নাম্বার। পুলিশ এই সেবাকে শ্রদ্ধাভরেই নিয়ে আসছে প্রথম থেকে। ঝড় বৃষ্টি খরা উপেক্ষা করে পুলিশ ৯৯৯ এর কল যত্ন সহকারে গ্রহণ করে ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। তবে ওই রাতে এএসআই নজরুল আসলেই কি ভূমিকা রেখেছিলেন খোঁজখবর নিতে হবে। তবে অভিযোগ সত্য হলে তা অবশ্যই কাম্য নয়।

আরও খবর

🔝