ভারতে লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। শুক্রবার ভোট গ্রহণ শুরু হয় সকাল ৭ টায় ও শেষ হয় সন্ধ্যা ৬ টায়। এ দফায় রাজ্যের বালুরঘাট, দার্জিলিং ও রায়গঞ্জ আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এসময়ে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।
এদিন দুপুর ৩টা পর্যন্ত বালুরঘাটে ভোট পড়েছে ৫৯.৫৩ শতাংশ, রায়গঞ্জে ৬০.২০ শতাংশ ও দার্জিলিংয়ে ৬১.৯৭ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের এ তিনটি আসনে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৬০.৬০ শতাংশ।
তিনটি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোলযোগ হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের আসন বালুরঘাটে। আর দার্জিলিং ও রায়গঞ্জে সহিংসতা ঘটেনি বললেই চলে। এদিন নির্বাচন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে সব দলের পক্ষ থেকে ৪১১টি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। তবে কোনো রকম হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, মানুষের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন বিজেপির প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এ কাজ করে বেড়িয়েছেন তিনি।
বালুরঘাট তপনের পতিরামপুরে বিজেপির যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিষ রায়কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এর পাশাপাশি বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে ক্যাম্প বসানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে সেই বুথে যান বিজেপির প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। তখন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা সুকান্তকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান বালুরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
দার্জিলিংয়ের ১৬৩ নম্বর কেন্দ্রে ইভিএম খারাপ হয়ে যাওয়ায় সকাল থেকেই বাইরে ভোটারদের লম্বা লাইন ছিল। বেশ কিছুক্ষণ পর নতুন ইভিএম নিয়ে আসা হলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দার্জিলিংয়ের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তাকে ঘিরে শিলিগুড়িতে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা।
দার্জিলিংয়ের চোপড়ার আমতলা বুথে ১০০ মিটারের মধ্যে জমায়েত করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা এসে সেই জমায়েত ভেঙে দেন। তিন আসনেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বুথের বাইরে ১০০ মিটারের মধ্যে জমায়েতের অভিযোগ পাওয়া যায়। শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষেরই অভিযোগ জমা পড়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে। দার্জিলিংয়ের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা একাধিক বুথে রিপোলিং করার আবেদন জানিয়েছেন।
বিজেপির অভিযোগ, রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটারদের ভোট দিয়ে দিয়েছেন তাদের সঙ্গে থাকা লোকজন। স্থানীয় কংগ্রেস প্রার্থী আলী ইমরান রসম আলী ওরফে ভিক্টরকে দেখে জয়বাংলা স্লোগান দেন তৃণমূল কর্মীরা। জবাবে ভিক্টর বলেন, জয় বাংলা স্লোগানে অসুবিধা কোথায়? বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্লোগান ধার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
মোট সাত দফায় ভারতে এবারের লোকসভার নির্বাচন শেষ হবে। বাকি পাঁচ দফার মধ্যে ৭ মে তৃতীয় দফা, ১৩ মে চতুর্থ দফা, ২০ মে পঞ্চম দফা, ২৬ মে ষষ্ঠ দফা ও সপ্তম বা শেষ দফার ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১ জুন। ভোট গণনা শুরু হবে ৪ জুন।