শিরোনাম |
যশোরের বাঘারপাড়ার দরাজহাট ইউনিয়নের দেবীনগর সার্বজনীন শীব মন্দিরে দ্বীপ মন্ডল (৩৮) নামে এক যুবকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। তিনি খুলনা ফুলতলা উপজেলার বানিয়াপুকুর গ্রামের বিশ্বনাথ মন্ডলের ছেলে। বুধবার দুপুরে মন্দিরের ভিতরে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান এলাকাবাসী। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দ্বীপ মন্ডল দীর্ঘদিন যাবত জটিল কিডনি রোগে ভুগছিলেন। তিনি স্বপ্নে দেখেন দেবীনগর সার্বজনীন শীব মন্দিরে সেবাইতের কাজ করলে রোগমুক্তি পাবেন। মামাবাড়ি বাসুয়াড়ি ইউনিয়নের সৈয়দ মাহমুদপুর গ্রামে হওয়ায় এবং এলাকাটি পরিচিত হওয়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি মন্দিরে আসেন এবং সেই থেকে মন্দির পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ পূজারীর কাজ করে আসছিলেন। এলাকাবাসীও দ্বীপকে খাবার সরবরাহ করতেন। ঘটনার দিন দুপুরে দেবীনগর গ্রামের স্নেহলতা (৮০) নামের এক বৃদ্ধা মন্দিরে পূজা দিতে এসে দ্বীপকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকির পরও ঘুম থেকে না উঠলে মন্দিরের পাশের লোকদের ডাক দেন। এসময় স্থানীয়রা এসে দ্বীপকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
দেবীনগর গ্রামের (মন্দিরের পাশে বাড়ি) বাসিন্দা ও বাঘারপাড়া মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক পদ্মলোচন নিয়োগী বলেন, ‘লোকটি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বলে আমরা জানতাম। তিনি স্বপ্নে দেখে বিশ্বাস করে মন্দিরে আসেন এবং পূজা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজের ভার তিনি নিজে গ্রামবাসীর কাছ থেকে চেয়ে নেন। গ্রামেরই একজনে বাড়ি থেকে তিনবেলা খাবার খেতেন। মঙ্গলবার ডাক্তার দেখানোর কথা বলে মন্দিরের বাইরে যান। এসে রাতে মন্দিরের বাইরে ও ভেতরের কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। বুধবার সকাল ১০টার দিকে মন্দিরে তালা দেখে সবার সন্দেহ হয়। এলাকাবাসী জড়ো হয়ে তালা খুলে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। বাঘারপাড়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
বাঘারপাড়া থানার ওসি শাহাদাত হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোরে পাঠানো হয়েছে এবং থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে মৃতের শরীরে কোনো আঘাত বা কাটা-ছেঁড়ার দাগ পাওয়া যায়নি।