gramerkagoj
শুক্রবার ● ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ৩ কার্তিক ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
যশোরে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সে গ্রাহক ভোগান্তি চরমে

❒ চলছে অফিস ঘেরাও ও বিক্ষোভ

প্রকাশ : সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি , ২০২৪, ১১:৩০:০০ পিএম , আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর , ২০২৪, ০৩:৩৭:১২ পিএম
শিমুল ভূইয়া:
GK_2024-02-12_65ca348175284.jpg

যশোরের ফায়ার সার্ভিস এলাকার পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে তালবাহানা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ তাদের ৪/৫ বছর আগেই পলিসির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু জমানো একটি টাকাও কর্তৃপক্ষ ফেরত দিচ্ছে না। উল্টো তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছেন কর্মকর্তারা।
শুধু গ্রাহকেরাই নন, মাঠকর্মীরাও রয়েছেন বিপাকে। কোম্পানি টাকা ফেরত না দেয়ায় গ্রাহকেরা চাপ দিচ্ছেন মাঠকর্মীদের। অনেক জায়গায় গ্রাহকেরা মাঠকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছেন। কর্মীর গোয়াল থেকে পশু খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। তারা গ্রাহকের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছেন না। এসব সমস্যা নিয়ে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। উল্টো হুমকি ধামকির শিকার হচ্ছেন গ্রাহক ও মাঠকর্মীরা। ফলে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যশোর অফিসের সামনে অসংখ্য ভুক্তোভুগি অবস্থান করছেন। অনেক সময় অফিস ঘেরাও এবং অফিসের সামনেই বিক্ষোভ করছেন তারা। যা গত কয়েকদিনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
রোববার দুপুর ২টায় পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সে যেয়ে দেখা যায় অর্ধশতাধিক গ্রাহক ও মাঠ কর্মী হট্টগোল করছেন। গ্রাহকেরা তাদের টাকা ফেরত চাচ্ছেন, অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের ছলচাতুরি করছেন। এসময় দুপক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যা একপর্যায়ে মারাত্মক আকার ধারণ করে। কর্তৃপক্ষের আচরণে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন শৈলকুপার কচুয়া বাজার থেকে আসা মাঠকর্মী আবুল কালাম। পরিস্থিতি হয়ে উঠে আরও ভয়াভয়। এক পর্যায়ে তৃতীয়তলার অফিস ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষুব্ধরা। পরবর্তীতে বিকেল ৪টায় অফিস ইনচার্জ ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধরা শান্ত হন।
সেখানে উপস্থিত থাকা ৫৫-৬০জন গ্রাককের মধ্যে ৪০ জনই ঝিানাইদহ জেলার শৈলকুপার পারকাচেরকোল গ্রামের। তাদের মধ্যে ছিলেন আবু বক্কর, নুর জাহান, মনিরুল, মোমেনা, আবুল কাশেম, জান্নাতুল, বসির, রহিমা, শাফিয়া, নীলিমা, আলোচাদ, নাসিমা, হিল্লাল, বিল্লাল, শাহীন এবং রবিউল। মাঠকর্মীদের মধ্যে ছিলেন আবুল কালাম, মনিরুলসহ আরও কয়েকজন। তারা জানান, সকলের পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের ডিপিএস প্রকল্পের ১২ বছর পূর্ণ হয়েছে। তাদের সকলেই ২শ’ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অংকের টাকা প্রতিমাসে জমা দিয়েছেন। কিন্তু তারা চার থেকে পাঁচ বছর সে পলিসির মেয়াদ শেষ হলেও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। তাদেরকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। তাদেরকে শর্ত দেয়া হচ্ছে নতুন করে আবার পলিসি করতে হবে। তাহলে টাকা ফেরত দেয়া হবে। এছাড়া যাদের ১০ হাজার টাকা জমা আছে তাদের নতুন করে এফডিআর করতে হবে-এমন শর্ত দেয়া হচ্ছে। অন্যথায় একটি টাকাও ফেরত দেয়া হবেনা বলে হুমকি দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, মাঠকর্মীরা জানান, তাদের আগের গ্রাহকদেরই টাকা ফেরত দিচ্ছেন না আবার নতুন করে গ্রাহক দিতে বলছেন। কিন্তু গ্রাহকেরা টাকা না পাওয়ায় নতুন করে কেউ পলিসি করছেন না।
শাহারিন সুলতানা নামের একজন বলেন, তার স্বামী ছিলেন মাঠকর্মী। গ্রাহকের চাপে তার স্বামীর দুইবার হার্ড অ্যাটাক হয়েছে। বর্তমানে তার কিছুই নেই। গ্রাহকেরা তাদের বাড়ি থেকে গরু, স্বামীর মোটরসাইকেল নিয়ে গেছে। সুদে টাকা এনে অনেকের টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। কিন্তু অফিস কোনো খোঁজ নেয়নি। বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ। বর্তমানে তিনিসহ তার পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। ভয়ে এলাকায় যেতে পারছেন না। কোম্পানির কাছে টাকা ফেরত চাইলেও না দিয়ে নানা তালবাহানা করছেন।
যশোর শহরের মোল্লাপাড়া, বারান্দিপাড়া, ধর্মতলা, খালধার রোডসহ বিভিন্ন এলাকার গ্রাহক ও কর্মীরা একই অভিযোগ করেন। এসময় আশপাশের লোকজন বলেন, পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সে প্রতিদিনই এ ধরণের গোলোযোগ বাধে। তারা প্রতিনিয়ত গ্রাহকদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। এ বিষয়টি নিয়ে তারাও বিরক্ত।
এ বিষয়ে যশোর পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের যশোর-ঝিনাইদাহ-নড়াইল ও খুলনার এক অংশের দায়িত্বে থাকা অফিসার শাহাদাৎ হোসেন সুজন বলেন, ‘মূলত মাঠকর্মীদের নিস্ক্রিয়তায় গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে বেশকিছু গ্রাহকের টাকা ফেরত দিয়েছি। এছাড়া বিক্ষুব্ধ গ্রাহক ও কর্মীদের কাছে তিনি ১৫ দিন সময় নিয়েছেন।’ এর মধ্যেই টাকা ফেরতের কাজ শুরু হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝