gramerkagoj
বুধবার ● ৯ জুলাই ২০২৫ ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
gramerkagoj
শিরোনাম
শিরোনাম আফগান নারীদের নিপীড়নে তালেবান নেতৃত্ব অভিযুক্ত, আইসিসির গ্রেপ্তারি আদেশ শেখ হাসিনার সঙ্গে আওয়ামী লীগেরও বিচার দরকার: ফখরুল দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের জন্য এককালীন অনুদানের জন্য আবেদন আহবান অব্যাহত বৃষ্টিতে ব্যস্ততা বেড়েছে ছাতা কারিগরদের দলমত নয়, দায়বোধের জয়: জামায়াতপন্থী নেতাদের হাত ধরে শৈলকুপার ধরমপাড়া রাস্তায় ফিরল স্বস্তি আরও কয়েক দিন চলবে বৃষ্টি, জানাল আবহাওয়া অফিস মোরেলগঞ্জে ফের পানগুছি নদীর ভাঙ্গনের মুখে শত শত পরিবার জুলাই আন্দোলনে গুলি চালনার নির্দেশ শেখ হাসিনার মণিরামপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত পানি আর কষ্টে ডুবেছে পাইকগাছা, ক্ষতির মুখে কৃষকরা
স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যায় পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড
প্রকাশ : রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি , ২০২৪, ০৯:৫৩:০০ পিএম
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
GK_2024-02-11_65c8edcd923d0.webp

পরকীয়ার জেরে নিজ স্ত্রী-সন্তান ও স্ত্রীর প্রেমিককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার দায়ে একমাত্র আসামি বরখাস্ত হওয়া পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন রায়কে (৩৪) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমীন এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।
সৌমেন রায় মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের আসবা গ্রামের সুনীল রায়ের ছেলে। তিনি সর্বশেষ খুলনার ফুলতলা থানায় এএসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৩ জুন বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড় এলাকার নাজ ম্যানশন মার্কেটের বিকাশের দোকানের সামনে পরকীয়ার জেরে স্ত্রী আসমা খাতুন (২৫), আসমার প্রথম পক্ষের ছেলে রবিন (৫) এবং আসমার পরকীয়া প্রেমিক শাকিলকে (২৮) সরকারি অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন এএসআই সৌমেন রায়। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে সার্ভিস রিভলভার, গুলি ও ম্যাগাজিনসহ আটক করে।
পরে সেদিন বিকেলে তাকে বরখাস্ত করা হয়। একইদিন রাতে এএসআই সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহত আসমা খাতুনের মা হাসিনা বেগম। পরদিন ১৪ জুন বিকেলে কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এনামুল হকের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সৌমেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশিকান্ত সরকার তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন সৌমেন রায়। এরপর কুষ্টিয়া আদালতে বারবার আত্মসমর্পণের দিন ধার্য থাকলেও তিনি আত্মসমর্পণ করেননি। আদালতে আত্মসমর্পণ না করায় ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির এক বছর পেরিয়ে গেলেও লাপাত্তা সৌমেন। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন।
মামলার বাদী হাসিনা বেগম বলেন, আমার মেয়ে, তার ছেলে রবিন ও শাকিল নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে সৌমেন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জেনেছি সে হাইকোর্ট থেকে জামিনে বেরিয়ে ভারতে পালিয়েছে। এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের একমাত্র আসামিকে জামিন দেওয়ায় আমি হতাশ।
তিনি আরও বলেন, আদালত সৌমেনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় আমি খুশি। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক।
প্রসঙ্গত, কুমারখালী থানায় দায়িত্বে থাকার সময় এএসআই সৌমেনের সঙ্গে একটি মামলাকে কেন্দ্র করে আসমার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে সময় সৌমেন তার নাম মো. সুমন হোসেন রাখেন এবং সুমন নামেই মুসলিম বিধানমতে আসমাকে বিয়ে করেন। সৌমেন আসমার তৃতীয় স্বামী ছিলেন। বিয়ের পর থেকেই কুষ্টিয়ার আড়ুয়াপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় তারা বাস করছিলেন।
এএসআই সৌমেন খুলনার ফুলতলা থানায় বদলি হওয়ার পর থেকেই বিকাশকর্মী শাকিলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান আসমা। এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি সৌমেন। সেই ক্ষোভ থেকেই প্রকাশ্যে স্ত্রী আসমা, আসমার দ্বিতীয় স্বামীর ছেলে রবিন এবং পরকীয়া প্রেমিক শাকিলকে গুলি করে হত্যা করেন সৌমেন।
সৌমেন রায় ২০১৫ সালে কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে উন্নীত হন। পরে ২০১৬ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় যোগ দেন। সেখান থেকে মিরপুর থানার হালসা ক্যাম্প, বাগেরহাট থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত ছিলেন সৌমেন রায়।

আরও খবর

🔝