gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
চাঁচড়ায় বাদ পড়েছেন ২০৬ জন, ডিসি ইউএনও’র কাছে অসচ্ছলদের অভিযোগ

❒ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা নিয়ে সংবাদ প্রকাশে তোলপাড়

প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর , ২০২২, ১২:১৮:১৪ এ এম
এম. আইউব:
1662401961.jpg
যশোরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় অনিয়ম নিয়ে দৈনিক গ্রামের কাগজে সোমবার সংবাদ প্রকাশের পর ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। নড়েচড়ে বসেছে গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রশাসন। সোমবার সকাল থেকে একটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে অনিয়মের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা তালিকার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে কথা বলেছেন।এদিকে, চাঁচড়া ইউনিয়নে করা তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ১ হাজার ৫০০ জনের তালিকায় বাদ পড়েছেন ২০৬ জন। অভিযোগ উঠেছে অসচ্ছলদের বাদ দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিধিবহির্ভুতভাবে ২০৬ জনের অধিকাংশকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ কারণে জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বাদপড়া সুবিধাভোগীরা। চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইউপি সচিবরা যোগসাজস করে এই তালিকা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। গত পহেলা সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর দেয়া অভিযোগে ১৯ জন স্বাক্ষর করেছেন। এরা সবাই করিচিয়া গ্রামের বাসিন্দা। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে একজন নরসুন্দর, একজন পান বিড়ি দোকানী ও ১৭ জন দিনমজুর রয়েছেন। অভিযোগপত্রে অভিযোগকারীদের পাশ বই ও মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। একইদিন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৃথক আরেকটি অভিযোগ করা হয়েছে তালিকায় অনিয়ম নিয়ে। এই অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন ৩৮ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন গোয়ালদহ গ্রামের ১৮ জন, রুদ্রপুরের ১৪ জন ও কল্যাণদহের ৬ জন। জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আসা অভিযোগটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশকে দেয়া হয়েছে তদন্তের জন্য। অনুসন্ধানে জানাগেছে, অনলাইনে আপলোড করা তালিকার ৩, ৬, ৪৮, ৬০, ১৩৪, ৫৪, ৬২, ৫২, ৮, ১৩৮, ৩৫, ৩৯, ৫১, ১০৬, ১৮, ৯, ৩১, ১১৬, ২৬৬, ৪১৪, ২৭৯, ২৮৭, ২৬১, ১৯৩, ৩৯৮, ৩২৯, ৩৩৬, ২৯২, ২০৭, ২৫১, ৩৮৪, ৩২১, ২১৬, ১৯৮, ২৬৭, ১৮৩, ২৪৪, ২০১, ১৪৪, ৩৫৯, ৩৭১, ২৯৮, ১৮১, ১৭৬, ১৫০, ১৬০, ১৭০, ১৮৭, ১৭১, ১৪৬, ২২৭, ৩৬১, ৩৯৬, ২০০, ৪৪৩, ৪৯৫, ৪৫৬, ৫০১, ৫১২, ৪৪৫, ৪৮৬, ৪৭০, ৪৬৫, ৪৭৯, ৪৫৯, ৪৯৪, ৪৬৪, ৫০০, ৫৩৮, ৫৩২, ৪২২, ৪১৯, ৪৯২, ৪৮৪, ৪৫৪, ৪৪৭, ৫২১, ৪২১, ৪২৩, ৪২০, ৪৬৩, ৫১৯, ৪১৬, ৬৬৮, ৫৬৭, ৬৪৯, ৬৫৭, ৫৭১, ৬৮২, ৬৯৪, ৬৫১, ৬৭২, ৭০১, ৬১৮, ৬৮৬, ৬৭৪, ৬৯৭, ৬২৫, ৭৭৫, ৭৮৯, ৭৭১, ৭৫৪, ৮৮৩, ৮০০, ৮৬০, ৮৫৬, ৮৫৫, ৮২১, ৮১২, ৮১১, ৮০৬, ৮১৩, ৮৫৭, ৮৯০, ৭৯৮, ৭৯৯, ৮৮৯, ৮৫৩, ৮৩৬, ৮৯০, ৭৯৭, ৮৪৮, ৮৯৬, ৮৯৭, ৯৯৩, ৯০০, ৯৯৮, ৯৪৯, ৯১১, ১১৩৮, ৯২০, ৯০৯, ১০৫৩, ৯৪৫, ১০৫১, ১০৫৪, ১১৩২, ৯০৪, ১০৮৩, ৯৪৮, ৯৩০, ১০৮৯, ১০২৪, ১৪৭৭, ১৪৮১, ১৩২৪, ১৪৭৪, ১৩৮৮, ১৩৩৩, ১১৮৮, ১২৮৩, ১২৫৬, ১৩২৩, ১৩৪৭, ১৩৪৬, ১২৮৪, ১২৫৩, ১২৭৯, ১২৪৫, ৯৫৮, ১৩৫০, ১২২৫, ১৪৮৭, ১৫৩, ২১৩, ৩২৩, ৩৫৭, ৪৭৩, ৬১৫, ৬৩২, ৬৩৬, ৬৬৩, ৭০৬, ৭০৭, ৭২৭, ৭৫৫, ৭৬০, ৭৬৪, ৮১৪, ৮২২, ৮৪৪, ৮৮২, ৮৮৮, ৯১৭, ৯৩৮, ৯৫০, ৯৬৫, ৯৮৯, ১০০৬, ১০১১, ১০১৩, ১১৪৯, ১১৫০, ১১৫২, ৫২৮, ১১০৫, ১০৭৫, ১০৬২, ১১৬৯, ১০১৭, ১৩২০, ১৩৬৭, ৪২, ৭৩, ৭৪ ও ১০৭ ক্রমিক নম্বরের সুবিধাভোগীকে বাদ দিয়ে নতুন করে নাম সংযোজন করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, যাদের নাম সংযোজন করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বাদপড়া অনেকের। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তালিকার ২৭৯ ক্রমিকের রুদ্রপুর গ্রামের আব্দুল গফফার, ৩২৯ ক্রমিকের জাহিদা খাতুন, ২১৬ ক্রমিকের লিটন হোসেন, ১৮৩ ক্রমিকের মহাতাব আলী, ২৪৪ ক্রমিকের নাছির, ২০১ ক্রমিকের আত্তাব আলী, ১৮৭ ক্রমিকের গোয়ালদাহ গ্রামের শিল্পী খাতুন, ৩৯৬ ক্রমিকের জুয়েল হোসেন, ৪৬৪ ক্রমিকের করিচিয়া গ্রামের রাজু আহমেদ, ৪৮৪ ক্রমিকের আক্তার হোসেন ও ৪১৬ ক্রমিকের আশিকুর রহমান সচ্ছল ও সম্পদশালী। তাদেরকে নীতিমালা বহির্ভুতভাবে তালিকাভুক্ত করেছেন চেয়ারম্যান-মেম্বাররা। এ রকম অসংখ্য সচ্ছল মানুষকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি অভিযোগকারীদের।অনিয়মের বিষয়ে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আনারুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান-সচিবের কথামতো কিছু লোককে বাদ দেয়া হয়েছে। আমার মতো লোক কারো কাছ থেকে টাকা খেতে পারে না। চেয়ারম্যান শামীম রেজা বলেন, নতুন মেম্বাররা পুরানো মেম্বারদের কিছু লোককে বাদ দেয়ায় এই অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া, মেম্বাররা দু’ একটা ‘এদিক-ওদিক’ করেছেন। বাদপড়া কিছু গরিব মানুষের কার্ড আমার কাছে রয়েছে। খাদ্য অফিসের নির্দেশনা পেলে সেগুলো আপলোড করার ব্যবস্থা করবো। এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সরাসরি একটি এবং জেলা প্রশাসক স্যারের মাধ্যমে আরেকটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি চাঁচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। যাচাই বাছাই করে অপেক্ষাকৃত অসচ্ছলদের তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা করবো।

আরও খবর

🔝