শিরোনাম |
গরম ভাতে ঘি হলে আর কিছুই লাগে না বাঙালির। ছোট বেলায় নানি-দাদির কাছে শুনেছি ঘি খেলে নাকি বুদ্ধি বাড়ে। কথাটা আসলেই সত্যি, অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে এই ঘি-তে। বিশেষজ্ঞদের মতে ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল। এ সময় এটি সহজে হজম হয় ও দেহকে উষ্ণ রাখে। ঘি তে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে। এটি পেশি সুগঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও শীতে ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে ঘি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাড়ের সুস্থতা, পাচনতন্ত্রের উন্নতি, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ঘি বেশ উপকারী। পুষ্টিবিদরা বলছেন, নিয়মিত ১ চা চামচ ঘি খাওয়ার অভ্যাসে আপনার সুস্বাস্থ্যের শতভাগ দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা রাখে এই ঘি।
বিশেষ করে পুরোনো ঘি ত্বকের যত্নে দারুণ কাজ করে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক রূপচর্চায় কীভাবে ঘি ব্যবহার করবেন এবং কেন করবেন?
ত্বকের শুষ্কতা কমাতে-
যারা শুষ্ক ত্বকের অধিকারী তাদের জন্য ঘি দারুণ কার্যকর। কয়েক ফোঁটা ঘি ত্বকে ম্যাসাজ করুন। কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করলে ত্বকের ওপর একধরনের সুরক্ষা আবরণ তৈরি করবে, যা ত্বকের শুষ্কতা কমাবে। ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ই ও কে সরবরাহ করে ঘি। যার ফলে ত্বক হয়ে ওঠে আরও উজ্জ্বল।
বলিরেখা দূর করতে-
তারুণ্য ধরে রাখতে পারে ঘি। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন ই যা বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারে। নিয়মিত ঘি খেলে ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ে না। তাই তারুণ্য ধরে রাখতে নিয়মিত অল্প পরিমাণ ঘি খান।
গোসলের তেল-
গোসলের আগে তেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ঘি। পাঁচ চামচ ঘি এর সঙ্গে যোগ করুন ১০ ফোঁটা অ্যাসেনশিয়াল অয়েল। এই তেল মাখলে ত্বক হবে সতেজ ও নরম। সে সঙ্গে দূর হবে ত্বকের রুক্ষতা।
চোখের ক্লান্তি দূর করতে-
সার দিনের ব্যস্ততার ফলে ক্লান্ত হয়ে যায় চোখ। চোখের ক্লান্তি দূর করতে কয়েক ফোঁটা ঘি লাগিয়ে নিন চোখের চারপাশে। এতে চোখ হয়ে উঠবে সতেজ আর প্রাণবন্ত। সে সঙ্গে কেটে যাবে চোখের ক্লান্তিভাব।
ঠোঁট সতেজ করতে-
ঘি কে প্রাকৃতিক তেল বলা হয়। তাই ঠোঁট নরম ও চকচকে করতে ঘি ব্যবহার করুন। লিপবামের চেয়েও বেশি কার্যকর এটি। কয়েকবার ব্যবহারের পরই দেখবেন, ঠোঁটের ফাটাভাব দূর হয়ে ঠোঁট হয়ে উঠেছে গোলাপি।
চুল ঝলমলে মসৃণ করতে-
টেবিল চামচ নারকেল তেল ও ঘি নিন, এতে যোগ করুন এক টেবিল চামচ করে লেবুর রস ও অ্যালোভেরা জেল। ভালো করে মিশিয়ে চুলে লাগান। এক ঘণ্টা পরে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। প্রথমবার ব্যবহারের পরই অনুভব করতে পারবেন চুল অনেক ঝলমলে মসৃণ হয়ে গেছে।
ত্বকে, চুল বা ঠোঁটে মাখার সঙ্গে ঘি খেলেও উপকার পাওয়া যায়। ঘরে ঘি আছে কিনা আজই খোঁজ করুন, না থাকলে নিয়ে আসুন।
ঘি খেলে যাদের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে :
খাবারের গুণাগুণ বিবেচনা করে পুষ্টিবিদরা একে তরল সোনার সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। কিন্তু কখনও কখনও এই তরল সোনাই কারো কারো জীবনে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। যদি সীমিত পরিমাণের বেশি ঘি খাওয়া হয় তবে শরীরে এর উপকারিতা নয় বরং দেখা দেবে এ খাবারের অপকারিতা। বমিভাবের সঙ্গে দেখা দিতে পারে অস্থিরতাও।
যারা অফিসে দৈনিক ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বসে কাজ করে থাকেন তবে তাদের ঘি মোটেও খাওয়া উচিত নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদি তারা ঘি খেতে চান তবে তাদের অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস থাকতে হবে। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারাও ঘি এড়িয়ে চলুন। কারণ ঘি ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে।