gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১ ফাল্গুন ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
ঐতিহ্যবাহী চুঙ্গা পিঠার ঢলুবাঁশ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারি , ২০২৪, ০২:৫৭:০০ পিএম
মালিক মিয়া, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
GK_2024-01-16_65a6375181c74.jpg

মৌলভীবাজার ও সিলেটের প্রাচীন ঐতিহ্য পিঠে-পুলির অন্যতম চুঙ্গাপুড়া পিঠা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আগের মতো এখন আর গ্রামীণ এলাকার বাড়িতে বাড়িতে চুঙ্গাপুড়ার আয়োজন বা শব্দ শুনা যায় না বা চোখেও পড়ে না। শীতের রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে সারারাত চুঙ্গাপুড়ার দৃশ্যও তাই দেখা যাচ্ছে না।
একটা সময় ছিল বাজারে মাছের মেলা বসতো। সেই মেলা থেকে মাছ কিনে কিংবা হাওর-নদীর হতে বড় বড় রুই, কাতলা, চিতল, বোয়াল, পাবদা, কই, মাগুর মাছ ধরে নিয়ে এসে হাল্কা মসলা দিয়ে ভেজে (আঞ্চলিক ভাষায় মাছ বিরান) দিয়ে চুঙ্গাপুড়া পিঠা খাওয়া ছিল মৌলভীবাজার ও সিলেটের একটি অন্যতম ঐতিহ্য। বাড়িতে মেহমান বা নতুন জামাইকে শেষ পাতে চুঙ্গাপুড়া পিঠা মাছ বিরান আর নারিকেলের পিঠা বা রিসা পরিবেশন না করলে যেন লজ্জায় মাথা কাটা যেত। বর্তমানে সেই দিন আর নেই বললে চলে।
চুঙ্গাপুড়া পিঠা তৈরির প্রধান উপকরণ ঢলু বাঁশ ও বিন্নি ধানের চাল (বিরইন ধানের চাল) সরবরাহ এখন অনেক কমে গেছে। অনেক স্থানে এখন আর আগের মতো চাষাবাদও হয় না। মৌলভীবাজারের জেলার বিভিন্ন পাহাড় গুলোতে প্রচুর ঢলুবাঁশ পাওয়া যেতো।
অনেক আগেই বনদস্যু ও ভুমিদস্যু এবং পাহাড়খেকোদের কারণে বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাওয়ায় হারিয়ে গেছে ঢলুবাঁশ। তবে জেলার কিছু কিছু স্থান ও টিলায় এখন ও ঢলুবাঁশ পাওয়া যায়। এদিকে, পাহাড়ে বাঁশ নাই বলে বাজারে ঢলুবাঁশের দামও এখন বেশ চড়া। ব্যবসায়ীরা দূরবর্তী এলাকা থেকে ঢলুবাঁশ ক্রয় করে নিয়ে যান নিজ নিজ উপজেলার বাজারসমূহে বিক্রির আশায়। বাঁশটিও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
ঢলুবাঁশ ছাড়া চুঙ্গাপিঠা তৈরি করা যায় না, কারণ ঢলুবাঁশে এক ধরনের তৈলাক্ত রাসায়নিক পদার্থ আছে, যা আগুনে বাঁশের চুঙ্গাকে না পোড়াতে সাহায্য করে। ঢলুবাঁশে অত্যধিক রস থাকায় আগুনে না পুড়ে ভিতরের পিঠা আগুনের তাপে সিদ্ধ হয়। ঢলুবাঁশের চুঙ্গা দিয়ে ভিন্ন স্বাদের পিঠা তৈরি করা করা হয়ে থাকে। কোনো কোনো জায়গায় চুঙ্গার ভেতরে বিন্নি চাল, দুধ, চিনি, নারিকেল ও চালের গুড়া দিয়ে পিঠা তৈরি করা হয়। পিঠা তৈরি হয়ে গেলে মোমবাতির মতো চুঙ্গা থেকে পিঠা আলাদা হয়ে যায়। চুঙ্গাপিঠা পোড়াতে আবার প্রচুর পরিমাণে খড় দরকার পড়ে। খড়ও এখন সময়ের প্রয়োজনে দাম একটু বেশি। আদমপুর বাজার থেকে ঢলুবাঁশ নিতে আসা নিখিল চন্দ, আব্দুল কাদির কাইয়ুম বলেন, ‘আসলে সব সময় তো এই জিনিসগুলো পাওয়া যায় না। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে এগুলো খুব কম পরিমাণ বাজারে উঠেছে। আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগে প্রচুর দেখা যেত। এখন কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে। বাজারে আসার সময় পরিবারের সদস্যরা বললো পিঠা তৈরি করার জন্য এই ঢলুবাঁশ পেলে নিয়ে যেতে, তাই কয়েকটা দোখান ঘুরে দেখলাম পাইনি এখন ভানুগাছ বাজার থেকে স্বল্প পরিমাণ নিয়ে এসেছে এক বিক্রেতা আমি সেখান থেকে এই কয়েকটি নিয়ে যাচ্ছি বাসায়।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝