gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
সূর্যের আলো শরীরের জন্য উপকারী, ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়
প্রকাশ : সোমবার, ১ জানুয়ারি , ২০২৪, ১২:৩৮:০০ পিএম , আপডেট : রবিবার, ১ ডিসেম্বর , ২০২৪, ০৩:০৬:৪৮ পিএম
কাগজ ডেস্ক:
GK_2024-01-01_65924d93b8636.jpg

সকালে ভাঙার পর সূর্যের সঙ্গেই প্রথম সাক্ষাত হয় সবার। তারপর সারাদিনের কাজে সঙ্গী হয়ে থাকে এই সূর্য। বলতে গেলে সূর্য সারাদিনই আমাদের সঙ্গে মিশে থাকে।
প্রাচীন যুগে আয়ুর্বেদীয় চিকিত্সায় সূর্যের আলোর বড় ভূমিকা ছিল। কঠিন রোগে আক্রান্ত হলেই মানুষ সান বাথ বা সূর্যের আলোর দ্বারস্থ হতেন। চিকিত্সকরা জানান, প্রাচীন যুগের এই চিকিত্সা পদ্ধতি আধুনিক যুগের জন্যও কার্যকর। কারণ সূর্যের আলো শরীরের পক্ষে সহায়ক। বিশেষজ্ঞরা জানান, সূর্যের আলো নির্দিষ্ট একটি সময়ে মানবদেহকে পুষ্ট করে। সান বাথের উপকারিতা পাওয়া যায়। ত্বকের সমস্যা বা শরীরের অসামঞ্জস্যতা দূর করে সূর্য।
আমাদের সকলেরই রোজ সকালে সূর্যের আলো গ্রহণ করা খুবই জরুরি। সকালের আলোর তেজ তেমন বেশি থাকে না। আর সেই আলোতেই কোলন ক্যানসার-সহ একাধিক রোগ সেরে যায়।
সূর্যের আলো মানব শরীরে ভিটামিন ডি তৈরিতে সহায়তা করে। আর ভিটামিন ডি হচ্ছে মানব শরীরের জন্য ম্যাজিক মেডিসিন। সূর্যের আলো শরীরে যতটা ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে সেটি খাবারের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব নয়।
সূর্যের আলো এবং অন্ধকার মানুষের শরীরে কিছু হরমোন তৈরি করতে ও তা নিঃসরণে সহায়তা করে। মানুষের ত্বকে সূর্যের আলো পড়লে মেলানিন নামে একটি রাসায়নিক তৈরি হয়। মানুষের ঘুমের জন্য প্রয়োজন যে হরমোন সেটি হচ্ছে মেলাটোনিন। সেটি তৈরিতে এই মেলানিন প্রয়োজন।
সূর্যের আলোতে গেলে মানুষের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামে একটি হরমোন নিঃসরণ হয়। এটি মানুষের মন, মেজাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। যারা নিয়মিত দিনের আলোতে বের হন না, রাতে কাজ করেন তাদের বিষণ্ণতায় বেশি ভুগতে দেখা যায়। যেসব শীতের দেশে সূর্যের আলো কম সময় ধরে থাকে সেসব দেশে মানুষজন বিষাদে ভোগেন বেশি।
মানুষের ত্বকের নিচে এক ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। সূর্যের আলোতে গেলে তা ভিটামিন ডি তৈরি করে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম তৈরি করে তা ব্যবহারে শরীরকে সহায়তা করে। হাড়, দাঁত, নখের সুরক্ষায় দরকার ক্যালসিয়াম। এই প্রক্রিয়ার শুরু সূর্যের আলোর সাথে ত্বকের সংস্পর্শের মাধ্যমে।
ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরকে সহায়তা করে। এটি পর্যাপ্ত না পেলে শিশুদের পায়ের হাড় বেঁকে যাওয়া রোগ রিকেট হতে পারে। বয়স্কদের হাড় দুর্বল করে দেয় এমন রোগ অস্টিওম্যালাসিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে। একই ভিটামিন শরীরের ফসফেট নিয়ন্ত্রণ করে। সুস্থ পেশির জন্যেও এটি দরকার।
সকালে উঠেই গা ম্যাজম্যাজ, ক্লান্তি থেকে শুরু করে হাতে পায়ের পেশিতে ব্যথা, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা, হঠাৎ হঠাৎ মেজাজ বিগড়ে যাওয়া। কৈশোরের কোঠা পেরোতে না পেরোতেই ভিড় করে আসছে এমন রকমারি সমস্যা। এই সব সমস্যার কারণ কিন্তু একটাই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। এই ভিটামিন শরীরে নানা কাজে লাগে। ফলে এটির অভাব হলে কেবল মাত্র হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা ব্যথা-বেদনা নয়, তৈরি হতে পারে আরও বড় সমস্যা। পেশি নাড়াচাড়া করতেও প্রয়োজন হয় এই ভিটামিনের। এমনকি, এর সাহায্য ছাড়া মস্তিষ্ক থেকে সারা শরীরে বার্তা পর্যন্ত পাঠাতে পারে না স্নায়ু। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও এই ভিটামিনটি ছাড়া ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাসদের প্রতিহত করা দুঃসাধ্য।
অতিরিক্ত চুল ঝরা মানে, অবশ্যই আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব আছে। শরীরে ভিটামিন ডির অভাবে আপনার চুল বেশি মাত্রায় ঝরতে পারে। ভিটামিন ডির অভাবে আপনার শরীরের মাংসপেশি গুলোতে ব্যথা যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়।
যখনই বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডির ঘাটতি ঘটছে, সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে তা পূরণ করা যায় সেদিকে লক্ষ্য দিন। ভিটামিন ডির আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বারবার অসুস্থ হয়ে পড়া শরীরে ভিটামিন ডি ঘাটতির সঙ্কেত হতে পারে।
ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যদি নিয়মিত শরীরে হাড় বা পিঠে ব্যথা বোধ করেন, তাহলে বুঝবেন এটা ভিটামিন ডির অভাবের কারণে ঘটতে পারে। নিয়মিত শরীরে হাড় বা পিঠে ব্যথা বোধ করেন, তাহলে বুঝবেন এটা ভিটামিন ডির অভাবের কারণে ঘটতে পারে।
সাইকিয়াট্রিক হেলথের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি-র গুরুত্ব অসীম। রক্তে ভিটামিন ডি কম থাকলে সিজোফ্রেনিয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
গবেষণা করে দেখা গেছে ভিটামিন ডি আপনার শরীরে নতুন চামড়া গজাতে সাহায্য করে। শরীরের যেকোনো অংশে হওয়া ঘা শুকানোর ব্যাপারে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।
ক্যালসিয়ামের অভাবে শরীরে হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। ক্যালসিয়াম সংশ্লেষণের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৃদ্ধ বয়সে যারা হাড়ের সমস্যাতে ভোগেন, তাদের ক্যালসিয়াম সহ বেশ কিছু খনিজের অভাব পূরণ করতে বলা হয়, সেই সঙ্গে ভিটামিন ডির দিকেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়।
ভিটামিন ডির অভাবে আপনার শরীরের মাংসপেশি গুলোতে ব্যথা যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। ভিটামিন ডি শরীরের মাংসপেশিকে দৃঢ়তা প্রদান করে, যার ফলে ব্যথা যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
অতিবেগুনি রশ্মি ত্বক ক্যানসারের অন্যতম কারণ। কিন্তু সকালের রোদ গায়ে লাগাতে পারলে ক্যানসার ঠেকিয়ে রাখা যায়। পুরুষদের কোলন ক্যানসার ঠেকাতে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে সূর্যের আলোর। ডিম্বাশয়ের ক্যানসার, অন্ত্রের ক্যানসার এবং প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় সূর্যের আলো।
সঠিক সময়ে সূর্যের আলো ত্বকে লাগাতে পারলে ত্বকের সমস্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। সোরিয়াসিস, একজিমা, জন্ডিস, ব্রণ ঠেকাতে সাহায্য করে এই সূর্যালোক। তবে এর আগে কোনও এক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলে নেবেন।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। সূর্যের আলো থেকে পাওয়া ভিটামিন ডি শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
সবচাইতে ভাল হয় সকালের নরম রোদ গায়ে লাগাতে পারলে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ রোদে বসুন। এতেই অনেক কাজ হয়ে যাবে।
সতর্কতা:
সূর্যের অতিরিক্ত আলো বা রোদ শরীরের কিছু কিছু ক্ষতিও করে। বেশি বেলা বাড়লে রোদের তেজও বাড়তে থাকে। সেটি খারাপ প্রমাণিত হতে পারে কারো কারো শরীরের ক্ষেত্রে। এজন্য শীত হোক বা গরমের মৌসুম হোক আপনার পরম বন্ধু হবে ভোরের সূর্যের আলোই।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝