যশোর শহরের একটি ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে বাংলাদেশ নিবন্ধন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলাকালে মদ খেয়ে মাতলামির ঘটনা নিয়ে চলছে নানাগুঞ্জন। এ নিয়ে যশোরের সাব রেজিস্টারসহ সকল কর্মচারির মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বলেও সূত্রের দাবি। খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারিদের সভায় মদ সেবন করে প্রবেশ করার ওই ঘটনাটি নিয়ে তুমুল সমালোচনাও হচ্ছে।
দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মদ সেবনকারীরা হচ্ছে যশোরের বাঘারপাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের টিসি মোহরার রফিক, ঝিকরগাছা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দু’টি হত্যা মামলায় সাময়িক বরখাস্তপ্রাপ্ত নুরু মহুরি এবং যশোর সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড রুমের আনিছ ও সাব রেজিস্টারের অলিখিত ওমেদার অনুপ। তারা বাঘারপাড়া ও যশোর সদরের কেরানী প্রভাষ কুমার ও সতুপা রানীকে গালিগালাজ করেছেন মদ্যপ অবস্থায়।
এ ঘটনায় যশোরের সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারি-কর্মকর্তার ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। অনেকে শাস্তি দাবি করেছেন মদ সেবনকারীদের বিরুদ্ধে।
যশোর সদর রেজিস্ট্রি অফিস সূত্র জানিয়েছে, ২০ মে ছিল খুলনা বিভাগে কর্মরত জেলা রেজিস্টার ও সাব রেজিস্টারদের জন্য বাজেট প্রণয়ন, পরিচালনের পদ্ধতি এবং বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি ২০২৩-২০২৪ সম্পর্কে অবহিতকরন ও কর্ম সম্পাদন প্রশিক্ষণ কর্মশালা। এ কর্মশালার প্রশিক্ষক ছিলেন রাজশাহী বিভাগের পরিদর্শক আইআরও জিয়াউল হক ও চট্টগ্রাম বিভাগের পরিদর্শক (আইআরও) আশরাফুজ্জামান। কোর্স পরিচালক ছিলেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা রেজিস্টার আসাদুল ইসলাম ও কোর্স সমন্বয়ক ছিলেন যশোর সদর সাব- রেজিস্টার ইমরুল হাসান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন খুলনা জেলা রেজিস্টার দীপক কুমার সরকার। অনুষ্ঠানে কর্মকর্তারা সকল কর্মচারিকে ৫শ’ টাকা হারে সম্মানি প্রদান করেন। এতে ঘটে বিপত্তি। এটি অত্যন্ত ‘কম’ আখ্যা দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে নুরু নুরু মহুরি।
অভিযোগ উঠেছে, ওই দিন দুপুর অনুমান ১২টার দিকে নুরু মহুরির নেতৃত্বে ওমেদার অনুপের মাধ্যমে মদ এনে টিসি মোহরার রফিক, রেকর্ড রুমের কর্মচারি আনিছ মদ সেবন করে অনুষ্ঠানস্থলে মাতলামি শুরু করেন। একপর্যায়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কর্মচারিরা বাধা দিলে তাদেরকে গালিগালাজ শুরু করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত যশোরের বিভিন্ন উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে আসা কর্মচারিরা গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, এই ঘটনা যশোরের সকল সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। এমন ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। মদ সেবনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি উঠেছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেয়ার জন্য ২১ মে রেকর্ডে কর্মরত আনিছের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, তারা সবাই মদ সেবন করেছিলেন তবে মদ সেবনের পর তারা সবাই শান্ত ছিলেন। মাতলামি বা কাউকে গালিগালাজ করেননি।
অপরদিকে সাব রেজিস্টার ইমরুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকার কারণে তিনি আসলে এসব বিষয়ে নজর দিতে পারেননি। তবে তিনি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন এবং সত্য হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।